প্রকাশ : ০৮ মার্চ ২০২২, ০০:০০
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের নৈশ প্রহরী সুমন খান হত্যা
প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে আসামীরা
অপেক্ষা করুন, ভালো ফলাফল পাবেন : পিবিআই
চাঁদপুর শহরের ৫নং ওয়ার্ডের রঘুনাথপুর এলাকার বাসিন্দা স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের নৈশ প্রহরী সুমন খানকে পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনায় প্রায় ১ বছর অতিবাহিত হলেও এ ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন দেয়নি পুলিশ। এ ঘটনায় চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা হলেও আটক হয়েছেন একজন। অন্যরা আটক হয়নি কেউ। আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশের চোখে এখনো পলাতক রয়েছেন।
জানা যায়, রঘুনাথপুর এলাকার খান বাড়ির বাসিন্দা স্ট্যাটার্ড ব্যাংকের কর্মচারী সুমন খানের সাথে স্থানীয় কতিপয় যুবকের লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়ে মনোমালিন্য নিয়ে গত বছরের ৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় তাকে বেধড়ক মারধর করে মুমূর্ষু অবস্থায় রাস্তায় ফেলে চলে যায়। এরপরই স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে এনে ভর্তি করায়। কিন্তু সুমন খানের অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্যে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ২দিন পর ৭ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে। ঐদিন বিকেলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯ এপ্রিল সকাল ৭টায় তার মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর দিনই সুমন খানের বড়ভাই আঃ রব খান বাদী হয়ে ঘটনার সাথে জড়িত ৮ জনকে নামীয় আসামী এবং আরো কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নং-২৭। তাং- ৯/৪/২০২১খ্রিঃ। উক্ত মামলায় এজাহারভুক্ত আসামীরা হচ্ছে- (১) নাজমুল গাজী, (২) জিহাদ হাজী, (৩) তামিম গাজী, (৪) সাগর হোসেন, (৫) সুফিয়ান গাজী, (৬) রিমন বেপারী, (৭) মাসুদ গাজী, (৮) তোফায়েল গাজী। উল্লেখিত আসামীরা সকলেই একই এলাকার বাসিন্দা।
এদের মধ্যে গত বছরের জুলাই মাসে ৩নং আসামীকে পুলিশ আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করে এবং ১নং আসামী নাজমুল গাজী মহামান্য হাইকোর্ট থেকে জামিনে আসে আদালতে আর হাজির না হওয়ায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
এদিকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্বে চাঁদপুর সদর মডেল থানা কয়েক মাস থাকার পর পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এই অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুর রশীদ।
এ মামলার বিষয়ে পিবিআইয়ের সাথে কথা হলে তারা জানান, শুধু হত্যা মামলা নয়, বহু মামলা নিয়ে কাজ করছে পিবিআই। সকল মামলার ভালো ফলাফল দিচ্ছে। অপেক্ষা করেন, আশা করছি ভালো ফলাফল পাবেন।
এদিকে সুমন হত্যার পর হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানিয়ে এলাকাবাসী পোস্টার-লিফলেট, মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করলেও ঘটনাটির পর প্রায় এক বছর অতিবাহিত হলেও আসামীরা এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকায় এ নিয়ে স্বয়ং নিহতের পরিবারের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে।
অন্যদিকে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামীদের চলাফেরা এবং নিহত সুমনের পরিবারকে হুমকি-ধমকি দেয়া নিয়েও দেখা দিয়েছে নানাবিধ প্রশ্ন। অথচ এজাহারভুক্ত এবং গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও পুলিশের চোখে আসামীরা রয়েছে পলাতক। এমতাবস্থায় নিহত সুমনের স্ত্রী, একমাত্র শিশু পুত্র ও পরিবারের সদস্যরাসহ এলাকাবাসী অবিলম্বে খুনিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।