প্রকাশ : ০৭ মার্চ ২০২২, ০০:০০
দুটি রিপোর্টের অপেক্ষায় প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামের মৃত্যুরহস্য
গত ২৬ জানুয়ারি চাঁদপুর শহরের আঃ করিম পাটোয়ারী সড়কের তালতলাস্থ বিষ্ণুদী আজিমিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনার পর ১ মাসের বেশি সময় পার হলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারেনি।
|আরো খবর
জানা যায়, প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলাম বিদ্যালয়ে যোগদানের পূর্ব থেকেই এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের জন্যে বেশ ক’জন চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। ভাগ্য তার পক্ষে সহায় হলেও প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামের কপালে থেকে যায় সহকর্মীদের নানামুখী অপবাদ ও ষড়যন্ত্রের গন্ধ।
এজন্যে যারা চেষ্টা বা তদবির চালিয়ে গেছেন, তাদের তদবির বা পদক্ষেপ থেমে থাকেনি। তারা বিভিন্ন চেষ্টা-তদবির চালান প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের চাকুরি নীতিমালা অনুযায়ী। শুধু তা-ই নয়, বিভাগীয় আদালতে পর্যন্ত প্রধান শিক্ষকের পদ দখল নিয়ে চলে মামলা। এমতাবস্থায় গত ২৬ জানুয়ারি মৃত্যু হয় রফিকুল ইসলামের। মৃত্যুর পর ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় বেশ কিছু আলামত। এ সকল আলামত সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
অপরদিকে রফিকুল ইসলাম মৃত্যুর পর মরদেহ পোস্টমর্টেম শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু ১ মাসেরও বেশি সময় পার হলেও পোস্টমর্টেম রিপোর্ট দেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে পোস্টমর্টেমের সময়ে উপস্থিত থাকা চিকিৎসকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, শীঘ্রই দেওয়া হবে এ রিপোর্ট। কিন্তু এর বাইরে তিনি আর কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
এদিকে মৃত প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলামের পকেট থেকে উদ্ধারকৃত চিরকুট নিয়েও চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে তাঁর মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত তদন্ত কমিটি এ বিষয়ে তদন্ত কাজ শেষ করেছে বলে জানা গেছে। যদিও তদন্ত কমিটি গঠন এবং তদন্তের বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের কেউ।
এক কথায় পোস্টমর্টেম রিপোর্ট, জব্দকৃত আলামতের ফরেসনিক রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত এ মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে কোনো কিছুই বলতে রাজি হননি কেউ।
এ বিষয়ে পরিবারের সাথে কথা বলার চেষ্টা করলেও কথা বলতে রাজি হননি পরিবারের কেউ।
গোপন সূত্রে জানা যায়, মৃত রফিকুল ইসলামের পোস্টমর্টেম রিপোর্টের পর পরিবারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আইনী প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হবে।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মোঃ আব্দুর রশীদের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন এবং শিক্ষকের মৃত্যুর স্থানে থাকা বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এ রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনার মূলরহস্য জানা যাবে।
এদিকে প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলামের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর থেকেই এ ঘটনা নিয়ে কানাঘুষা চলছে যে, ঘটনাটি কি সহকর্মীদের সাথে অভিমানে আত্মহত্যা, না কি হত্যা?
তাই মৃত্যুরহস্য উদ্ঘাটনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত ব্যবস্থাগ্রহণ করবে বলে আশা করছেন কৌতূহলী মানুষ।