প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ১৭:৫৬
শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড
সম্পদ বাজেয়াপ্তের আদেশ, চৌধুরী মামুনের ৫ বছর কারাদণ্ড

জুলাই অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে তিনটি প্রমাণিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। বাকি একটি অভিযোগে তার আমৃত্যু কারাদণ্ড হয়। একই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে দুটি ঘটনায় মৃত্যুদণ্ড এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ সোমবার এ রায় ঘোষণা করে।
ট্রাইব্যুনালের রায়ে বলা হয়, প্রথম অভিযোগে ‘প্ররোচনা, হত্যার নির্দেশ এবং বলপ্রয়োগ থামাতে ব্যর্থতা’র দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
দ্বিতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
রায়ে বলা হয়—দ্বিতীয় অভিযোগে : ড্রোন, হেলিকপ্টার ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশদাতা হিসেবে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
চতুর্থ অভিযোগে : ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ঢাকার চানখাঁরপুলে ছয়জন নিরস্ত্র আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হয়েছে।
পঞ্চম অভিযোগে : একই দিন আশুলিয়ায় ছয় আন্দোলনকারীকে হত্যা—যাদের মধ্যে পাঁচজনকে গুলি করার পর পুড়িয়ে ফেলা এবং এক আন্দোলনকারীকে জীবিত অবস্থায় আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রমাণিত হয়।
চানখাঁরপুলে ছয়জন নিরস্ত্র আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা এবং তা প্রতিরোধে ব্যর্থতা—এ দুই অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত।
এ ছাড়া আশুলিয়ায় পাঁচজনকে গুলি করে হত্যার পর পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় সহযোগিতা ও প্রতিরোধে ব্যর্থতার দায়েও তার মৃত্যুদণ্ড নির্ধারণ করা হয়।সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধেও চানখাঁরপুলে ছয় আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যায় সহযোগিতা ও তা প্রতিরোধে ব্যর্থতা,
আশুলিয়ায় পাঁচজনকে হত্যা ও পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় সহযোগিতা ও প্রতিরোধে ব্যর্থতার অভিযোগ—দুটি প্রমাণিত হয়েছে।তবে রায়ে বলা হয়, মামলায় তিনি রাজসাক্ষী (state witness) হিসেবে ঘটনার ''সম্পূর্ণ ও সত্য বিবরণ” দিয়েছেন এবং ঘটনা স্বীকার করেছেন। এ কারণে তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
জুলাই আন্দোলন দমনে ১৪০০ জনকে হত্যার উসকানি, প্ররোচনা, নির্দেশ প্রদান, ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটি’ এবং ‘জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজ’-এর অধীনে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছিল আসামিদের বিরুদ্ধে।
এ রায়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের মৃত্যুদণ্ড এবং মামলার রাজসাক্ষী হিসেবে অবদান রাখায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পাঁচ বছরের সাজা ঘোষণা করা হলো।








