প্রকাশ : ০৫ মে ২০২৫, ২২:২০
বন্ধ হলো বন্দর, থামলো আকাশ: ভারত-পাক বাণিজ্যে সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা
ভারত-পাকিস্তান বাণিজ্য রুট বন্ধ: কাশ্মীর হামলার প্রেক্ষাপটে নতুন ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা

পাকিস্তান বন্ধ করলো ভারতের জন্য ট্রানজিট রুট
দক্ষিণ এশিয়ার দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিবেশী—ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও এক ধাপে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। রোববার (৪ মে) পাকিস্তান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছে,
ভারতীয় পণ্য এখন থেকে পাকিস্তানের ভূখণ্ড ব্যবহার করে যাতায়াত করতে পারবে না—চাই তা সরাসরি হোক কিংবা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে।
বাণিজ্য রুটে ‘ফুল স্টপ’: কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া
পাকিস্তানের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়,
“জাতীয় নিরাপত্তা ও জনস্বার্থ রক্ষার খাতিরে এই সিদ্ধান্ত অনিবার্য ছিল।”
পূর্বে ইস্যু করা ঋণপত্রধারী পণ্য ছাড়া সবকিছুর ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।পাকিস্তানের সমুদ্রবন্দর নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাও জানায়,
“ভারতীয় পতাকাবাহী কোনো জাহাজ পাকিস্তানের বন্দর ব্যবহার করতে পারবে না, একইভাবে পাকিস্তানি জাহাজও ভারতের বন্দরে যাবে না।”
কাশ্মীর হামলা: নিষেধাজ্ঞার অন্তর্নিহিত কারণ?
বিশ্লেষকদের মতে, এই সিদ্ধান্তের অন্যতম পটভূমি
কাশ্মীরের পেহেলগামে ২৬ জন ভারতীয় পর্যটকের মৃত্যুর ঘটনা।
ভারত এর জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করলেও ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।আঞ্চলিক বাণিজ্য ও সাপ্লাই চেইনে ধাক্কা
এই নিষেধাজ্ঞার ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে আফগানিস্তান, মধ্য এশিয়া ও চীনের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য।
বিশেষজ্ঞদের মতামত: ‘ট্যাকটিক্যাল প্রতিরোধ নাকি আত্মঘাতী কৌশল?’
ড. মারিয়াম জহরা বলেন,
“এই সিদ্ধান্ত কৌশলগতভাবে ভারতের ওপর চাপ তৈরির একটি কূটনৈতিক অস্ত্র।”
তবে দীর্ঘমেয়াদে পাকিস্তানের অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।অন্যদিকে ড. রাকেশ তিওয়ারি বলেন,
“ভারতের জন্য এটি একটি wake-up call।”
ইসলামাবাদ কৌশলগতভাবে ভারতকে একঘরে করতে চাইছে।বিকল্প রুট খুঁজছে দিল্লি
ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এখনো আনুষ্ঠানিক কিছু না বললেও, অভ্যন্তরীণ আলোচনায় বিকল্প রুট—ইরান, চীন ও চট্টগ্রাম ব্যবহারের কথাই উঠে আসছে।
দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে নতুন সমীকরণ?
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন,
এই বাণিজ্য বিচ্ছিন্নতা ও প্রতিশোধমূলক কূটনীতি দক্ষিণ এশিয়ায় সামরিক উত্তেজনা বাড়াতে পারে।
চীন পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ালে চীন-ভারত সম্পর্কও নতুন চ্যালেঞ্জে পড়বে।• পাকিস্তান ভারতের পণ্য পরিবহনে ট্রানজিট রুট বন্ধ করে দিয়েছে।
• সমুদ্র, আকাশ ও সড়ক—তিন মাধ্যমেই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর।
• কাশ্মীর হামলার জেরেই এই সিদ্ধান্ত বলে ধারণা।
• আঞ্চলিক বাণিজ্য ও জিওপলিটিক্সে নতুন চ্যালেঞ্জের সূচনা।
ডিসিকে/ এমজেডএইচ