প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৪৮
টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ: রূপপুর পরমাণু কেন্দ্র ইস্যুতে ব্রিটেনের রাজনীতিতে তোলপাড়
ব্রিটিশ রাজনীতিতে নতুন টুইস্ট: টিউলিপের গল্প
বাংলাদেশে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগে ব্রিটেনে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এমপি ও অর্থ ও নগর বিষয়ক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক চাপে পড়েছেন। লেবার পার্টির ভেতরে ও বাইরে থেকে তার মন্ত্রিত্ব বাতিলের দাবি উঠেছে।
|আরো খবর
লেবার পার্টির অভ্যন্তরীণ মুখপাত্র ম্যাট ভিকার্স জানিয়েছেন, “টিউলিপের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো গভীর উদ্বেগজনক। প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে এবং তাকে অবিলম্বে মন্ত্রিসভা থেকে সরানো উচিত।”
টিউলিপ সিদ্দিক, যিনি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি, ২০১৩ সালে রাশিয়ার সঙ্গে রূপপুর পরমাণু কেন্দ্র চুক্তির একজন মধ্যস্থতাকারী ছিলেন। অভিযোগ উঠেছে, চুক্তির মাধ্যমে ৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাৎ করা হয়েছে।
রূপপুর প্রকল্পের বিতর্কিত চুক্তি:রূপপুর পরমাণু কেন্দ্র চুক্তি ২০১৩ সালে বাংলাদেশ সরকার এবং রাশিয়ার রোসাটমের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়। ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের এই চুক্তির মাধ্যমে অতিরিক্ত ব্যয় দেখিয়ে ৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে।
বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে এবং হাইকোর্টেও মামলা চলছে। অভিযোগ অনুযায়ী, আত্মসাৎ করা অর্থ মালয়েশিয়ার অফশোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাচার করা হয়েছে।
রাশিয়া-যুক্তরাজ্য সম্পর্ক এবং রোসাটম নিষেধাজ্ঞা:রূপপুর প্রকল্পের রুশ অংশীদার রোসাটমের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার সামরিক অভিযানের জেরে রোসাটমের ওপর ২৬টি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল ব্রিটেনের কনজারভেটিভ সরকার। বর্তমান লেবার সরকারও সেগুলো বহাল রেখেছে।
টিউলিপের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ এবং তার রাশিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা লেবার পার্টির জন্য রাজনৈতিক সংকট তৈরি করেছে।
শেখ হাসিনার পলায়ন এবং রাজনীতিতে অস্থিরতা:গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। তার দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনামলে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন এবং দুর্নীতি নিয়ে বহুবার বিতর্ক হয়েছে। রূপপুর প্রকল্প তার শাসনামলের অন্যতম বিতর্কিত উদ্যোগ।
টিউলিপের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রমাণিত হলে এটি বাংলাদেশের রাজনীতি এবং ব্রিটেনের লেবার সরকারের জন্য বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, রূপপুর প্রকল্পের দুর্নীতির পরিণতি শুধু টিউলিপ সিদ্দিক নয়, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকেও গভীর সংকটে ফেলতে পারে।