প্রকাশ : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০:৫৪
ভয়ানক খরা : আফ্রিকায় ক্ষুধায় কোটি প্রাণহানির শঙ্কা
|আরো খবর
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) মঙ্গলবার জানিয়েছে, কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক খরার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে হর্ন অব আফ্রিকার দেশ কেনিয়া, সোমালিয়া ও ইথিওপিয়া। এ তিন দেশের আনুমানিক প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ খাদ্য সংকটের মুখে পড়েছে।
জাতিসংঘের খাদ্য বিষয়ক সংস্থা জানিয়েছে, হর্ন অব আফ্রিকা অঞ্চলে টানা তিনটি বৃষ্টির মৌসুম ব্যর্থ হয়েছে। ১৯৮১ সালের পর এবার সর্বোচ্চ খরার পরিস্থিতি রেকর্ড হয়েছে সেখানে।
অনাবৃষ্টিতে চলতি মৌসুমে অঞ্চলটিতে শস্য নষ্ট হয়ে গেছে এবং গবাদিপশুর ‘অস্বাভাবিক’ মৃত্যু দেখা গেছে। ফলে কৃষি ও পশুপালনের ওপর নির্ভরশীল প্রত্যন্ত অঞ্চলের পরিবারগুলোকে বাধ্য হয়ে বাড়িঘর ছাড়তে হচ্ছে।
ডব্লিউএফপি’র পূর্ব আফ্রিকার আঞ্চলিক পরিচালক মাইকেল ডানফোর্ড জানান, খরার কারণে পানি ও চারণভূমি পাওয়া যাচ্ছে না। আগামী মাসগুলোতেও গড় হারের চেয়ে কম বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস শুধু নতুন দুর্দশারই বার্তা দিচ্ছে।
মাইকেল ডানফোর্ড এক বিবৃতিতে বলেন, ‘হর্ন অব আফ্রিকায় মারাত্মক প্রভাব ফেলছে টানা অনাবৃষ্টি। এতে শস্য নষ্ট হয়ে গেছে, গবাদিপশু মারা যাচ্ছে, ক্ষুধা বাড়ছে। ’
সোমালিয়ার ২০১১ সালের অবস্থার মতো সংকটের পুনরাবৃত্তি এড়াতে জরুরিভাবে মানবিক পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন ডব্লিউএফপি কর্মকর্তা। ওই সময় দীর্ঘ খরার মুখে খাদ্য সংকটে প্রাণ হারিয়েছিল আড়াই লাখ মানুষ।
কেনিয়া, ইথিওপিয়া ও সোমালিয়ার খরাকবলিত এলাকাজুড়ে বর্তমানে খাদ্য সাহায্য বিতরণ করা হচ্ছে। ওই অঞ্চলগুলোতে অপুষ্টির হার খুব বেশি। তীব্র খাদ্য সংকটে এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে সেখানে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষের প্রাণ হারানোর আশঙ্কা রয়েছে।
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব ইথিওপিয়ার প্রায় ৫৭ লাখ মানুষের খাদ্য সাহায্য প্রয়োজন। এর মধ্যে রয়েছেন অপুষ্টিতে আক্রান্ত পাঁচ লাখ নারী ও শিশু। জরুরি ব্যবস্থা না নেওয়া হলে মে মাস নাগাদ সোমালিয়ায় গুরুতর ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা ৩৫ লাখ থেকে বেড়ে ৪৬ লাখে গিয়ে ঠেকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ২০১১ সালের অনাবৃষ্টির কারণে ১৯৫১ সালের পর সবচেয়ে শুষ্ক বছর দেখেছিল কেনিয়া, সোমালিয়া, ইথিওপিয়া, জিবুতি ও উগান্ডা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরির্তনের কারণে আরো ঘন ঘন ও প্রবল প্রতিকূল আবহাওয়া পরিস্থিতি দেখছে বিশ্ব। বৈশ্বিক উষ্ণায়নে সবচেয়ে কম ভূমিকা রেখেও সেটিরই মাশুল দিতে হচ্ছে আফ্রিকাকে।
সূত্র: এএফপি