বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০

পাঠকের প্রশ্ন, চিকিৎসকের পরামর্শ
অনলাইন ডেস্ক

* ডেঙ্গু হয়েছে কি না কীভাবে বুঝবো?

অনেকেই জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। পরীক্ষা করলে অনেকেরই ধরা পড়ছে ডেঙ্গু। এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। এ কারণে ডেঙ্গু নিয়ে বিশেষ সতর্ক থাকা জরুরি। এডিস মশাবাহিত ভাইরাস রোগ হচ্ছে ডেঙ্গু।

ডেঙ্গুর লক্ষণগুলো হলো : শরীরে তাপমাত্রা ভয়ানকভাবে বাড়তে পারে। শরীরে র‌্যাশ দেখা দিতে পারে। অসহ্য মাথা ব্যথা থাকবে। চোখের আশপাশে ব্যথা শুরু হবে। পেশী আর গাঁটে ব্যথা থাকতে হবে। বমি বমি ভাব আসলে। খিদে না পাওয়া। অনেক ক্ষেত্রে জ্বরের তিন চারদিন পর ঘাড়ের কাছে গোলাপি রঙ হয়ে যেতে পারে।

* কাদের ডেঙ্গু হওয়ার সম্ভাবনা বেশি?

যাদের পূর্বে ডেঙ্গু জ্বর হয়েছিলো, যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, যাদের প্লেটলেট কাউন্ট কম।

* প্লাটিলেট কী?

প্লাটিলেট হলো রক্তের কোষ, যা রক্তকে জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। একজন সুস্থ মানুষের প্রতি ১০০ মিলিমিটার রক্তে প্লাটিলেট থাকে ১.৫ লাখ থেকে ৪.৫ লাখ। প্লাটিলেটের ওপর নির্ভর করে মানুষের সুস্থ থাকা। আর তাই শরীরে প্লাটিলেটের অভাব হলে সহজে ক্লান্ত হয়ে যেতে পারেন।

* কী খেলে প্লাটিলেট বাড়ে

মিষ্টি কুমড়া ও এর বীজ, লেবুর রস, আমলকী, কিশমিশ, কলা, কমলা, মেথি ভেজানো পানি, বিটরুট, অ্যালোভেরার জুস এবং ডালিম। আবার আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খেলেও প্লাটিলেট বাড়ে। এ তালিকায় আছে কলিজা, ডিম, পালং শাক ও ডাল।

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁপে পাতার রস এবং পাকা পেঁপের জুসও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর প্লাটিলেটের দ্রুত বাড়াতে সাহায্য করে। পাশাপাশি সবুজ শাকসবজি, ভিটামিন সি যুক্ত ফল, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স প্রোটিন, ভিটামিন কে, ই সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরি।

* প্লাটিলেট কখন নিতে হয়

রক্ত জমাট বাঁধতে ও রক্তক্ষরণ বন্ধ করে প্লাটিলেট। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের শরীরের প্রতি মাইক্রোলিটার রক্তে প্লাটিলেট থাকে দেড় লাখ থেকে সাড়ে চার লাখ। এর থেকে কমে গেলে রক্ত জমাট বাঁধার ক্ষমতা হারাতে থাকে। তখন রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়ে।

প্লাটিলেটের সংখ্যা ২০ হাজারের নিচে নেমে এলে কোনো আঘাত ছাড়াই রক্তক্ষরণ হতে পারে। ১০ হাজারের নিচে নামা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। এ সময় শরীরের যে কোনো জায়গা থেকে অনবরত রক্তপাত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

ডেঙ্গু রোগীর ক্ষেত্রে শুধু প্লাটিলেট কমে যাওয়াই একমাত্র সমস্যা নয়। শরীরের রক্তরণ কমে যাওয়া, রক্তচাপ কমে যাওয়াও পরিস্থিতি জটিল করতে পারে। রক্তের সিবিসি (কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট) পরীক্ষা করে দেখা হয় প্লাটিলেটের সংখ্যা। তবে পরীক্ষায় প্লাটিলেট কম এলেই যে রোগীকে প্লাটিলেট দিতে হবে এমনটি নয়।

এক ইউনিট প্লাটিলেটের জন্য চারজন দাতার কাছ থেকে রক্ত নিতে হয়। এক ইউনিট প্লাটিলেটে ২০ হাজার কাউন্ট প্লাটিলেট বাড়তে পারে। দেশের সব হাসপাতালে রক্ত থেকে প্লাটিলেট আলাদা করার যন্ত্র নেই। এ কারণে আগে থেকেই জেনে নিতে হবে কোন হাসপাতালে প্লাটিলেট সঞ্চালনের ব্যবস্থা আছে।

* কখন রক্ত নিতে হয়

ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে রোগীর রক্তনালিগুলোর দেয়ালে যে ছোট ছিদ্র থাকে, সেগুলো বড় হয়। এতে রক্তনালির দেয়াল ভেদ করে রক্তের জলীয় উপাদান বা রক্তরস বের হয়ে আসে। রক্তচাপ ও অক্সিজেনের মাত্রা কমতে থাকে। এ সময় রোগীর মস্তিষ্ক, কিডনি, হৃৎপি-ে রক্তক্ষরণের আশঙ্কা থাকে। এমনকি হেমারেজিক শকের কারণে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে।

* প্লাটিলেট কমে কেন?

প্লাটিলেট বা অনুচক্রিকা হলো মানবদেহে থাকা তিন ধরনের রক্তকণিকার সবচেয়ে ছোট একটি আকার। এটি রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। আসলে প্লাটিলেট কমে যাওয়ার প্রধান কারণ হলো দুটি : প্লাটিলেট ধ্বংস হয়ে যাওয়া কিংবা পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈরি না হওয়া। যখন রক্তের প্লাটিলেট কাউন্ট কমতে শুরু করে; তখন তাকে বলা হয় থ্রোম্বোসাইটোপেনিয়া। অ্যানিমিয়া বা রক্তে হিমোগ্লোবিন ও লোহিত রক্তকণিকা কমে যাওয়া, ভাইরাস সংক্রমণ, লিউকেমিয়া, কেমোথেরাপি, অতিরিক্ত মদ্যপান এবং ভিটামিন-বি ১২-এর অভাবে প্লাটিলেট কমতে পারে। এছাড়াও তীব্র মাত্রার ক্যান্সার বা পিত্তথলির বিভিন্ন মারাত্মক রোগের কারণে কমতে পারে প্লাটিলেট। সেইসঙ্গে রক্তে ব্যাকটেরিয়াজনীত প্রদাহ, ওষুধের প্রতিক্রিয়া এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাজনীত রোগবালাইয়ের কারণে প্লাটিলেট ভেঙে যেতে পারে।

* প্লাটিলেট কমার লক্ষণগুলো কী?

ত্বকে বেগুনি রঙের চিহ্ন দেখা যায়। কারণ ত্বকের নিচে রক্তক্ষরণ হয়। শরীরের যেকোনো স্থান থেকে সূক্ষ্ম রক্তপাত, যা পিনপয়েন্টের আকারে দেখা দেয়। শরীরের কোথাও কাটলে অনেকক্ষণ ধরে রক্তপাত হয়।মাড়ি বা নাক থেকে রক্তপাত হতে পারে। প্র¯্রাব বা মলের সঙ্গে রক্তপাত। মাসিকে অতিরিক্ত রক্তপাত হওয়া। ক্লান্তি ইত্যাদি।

-প্রশ্নগুলো পাঠিয়েছেন

হাবিবা আক্তার, শিক্ষার্থী, চাঁদপুর সরকারি কলেজ।

-পরামর্শ দিয়েছেন

ডাঃ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান

এমবিবিএস, বিসিএস, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, চাঁদপুর।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়