প্রকাশ : ২৪ জুলাই ২০২৩, ০০:০০
সিজারিয়ান অপারেশনের জন্যে মেরুদণ্ডে চেতনানাশক ইনজেকশন দিতে হয়। অ্যানেসথেসিয়ার চিকিৎসক (অজ্ঞান করানোর চিকিৎসক) চেতনানাশক ইনজেকশন দেন। অনেক সময় মেরুদণ্ডের নিচের দিকে এই ইনজেকশন দেয়া হয়। সিজারিয়ান অপারেশনের জন্যে ক্ষেত্রবিশেষে কিছু রোগীর প্রয়োজন হয় জেনারেল অ্যানেসথেসিয়া।
আর কিছু রোগীকে দিতে হয় স্পাইনাল অ্যানেসথেসিয়া। জেনারেল অ্যানেসথেসিয়া দেয়ার জন্য রোগীকে পুরো অজ্ঞান করাতে হয়। কিন্তু স্পাইনাল অ্যানেসথেসিয়ার জন্যে রোগীর পেটের নিচের দিকে অবশ করানো হয়।
অবশ করানোর জন্য যে ইনজেকশন দেয়া হয় সেই ইনজেকশনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে অনেকের সিজারিয়ান অপারেশনের পরে হঠাৎ করেই ভয়ানক মাথা ব্যথা হয়।
এই মাথা ব্যথাকে বলা হয় স্পাইনাল হেডএক। সাধারণত অপারেশনের দুই দিন বা তিন দিন পরে স্পাইনাল হেডএক হতে পারে। স্পাইনাল হেডএক খুব মারাত্মক কিছু নয়। তাই আশঙ্কার পরিবর্তে সচেতনতা ভীষণ জরুরি।
লক্ষণ
* সিজারিয়ান অপারেশনের পর হঠাৎ মাথা ব্যথা, ঘাড়ে ভয়ানক ব্যথা, ঘাড়ের নিচে পিঠের চারদিকে ভয়ানক ব্যথা, ঘাড় সঠিকভাবে নাড়াতে না পারা।
* বমি, বমি ভাব বা মাথা ঘোরানো।
* ঘাড়ের চারপাশে শক্ত অনুভূত হওয়া।
* হঠাৎ চোখে ঝাপসাও লাগতে পারে।
* খাবারে অরুচি থাকতে পারে।
রক্তচাপ স্বাভাবিক বা কম থাকলেও মাথা ব্যথা হয়।
করণীয়
* সন্তান জন্মের পরে সঠিকভাবে বিশ্রাম নিতে হবে।
* বালিশ ছাড়া সোজাভাবে শুয়ে থাকতে হবে।
* নিয়মিত দুই থেকে দেড় লিটার পানি, চা, কফি পান করতে হবে। টয়লেটে যাওয়া বাদে যতটা সময় পারা যায় লম্বা হয়ে শুয়ে থাকতে হবে।
* মোবাইল ফোনে কথা বলা, টিভি দেখা বা আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে কথা বলার পরিমাণ কমিয়ে বিশ্রাম নিতে হবে।
* ঠাণ্ডা পানীয়র পরিবর্তে গরম দুধ, গরম পানীয় উপকারে আসবে।
* হট ওয়াটার ব্যাগ দিয়ে ঘাড়ে তাপ দিলে ব্যথা কিছুটা কমবে। তবে লম্বাভাবে শুয়ে থাকাটাই সবচেয়ে বড় সমাধান।
* রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে।
* যমজ শিশু থাকলে হসপিটালের চিকিৎসক, সেবিকাসহ যিনি রোগীর কাছে থাকবেন, তাঁকে যথেষ্ট সচেতন হতে হবে।
* চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া যাবে না। সিজারিয়ান অপারেশনের পরে বিভিন্ন কারণে মাথা ব্যথা হতে পারে। যেকোনো মাথা ব্যথা মানেই স্পাইনাল হেডএক নয়। মাথা ব্যথা দূর করতে নিয়ম মেনে চলার পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শে চলতে হবে।