প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২৩, ০০:০০
দিন কয়েক পরই পবিত্র ঈদুল আজহা। কোরবানির পশু কেনা থেকে মাংসের ভাগ-বাঁটোয়ারার কাজ একা করার সুযোগ নেই বলে মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। এ সময় সতর্ক থাকলেই এড়ানো যাবে সংক্রমণ।
কোরবানি উপলক্ষে বিভিন্ন জেলা থেকে হাটে মানুষের বড় ধরনের চলাচলের ঘটনা ঘটবে। ব্যাপারীরা কোরবানির পশু নিয়ে আসবেন। এ সময় উচিত হবে হাটে যাওয়ার সময় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা। বাড়িতে যিনি বয়স্ক, যার ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য রোগ আছে, তার হাটে না যাওয়াই ভালো। এছাড়া কারও যদি জ্বর, কাশি বা করোনার উপসর্গ থাকে, তবে তিনি হাটে যাবেন না।
নিজের বাড়িতে কোরবানি না দিয়ে পৌরসভা কর্তৃক নির্ধারিত নির্দিষ্ট স্থানে বা নিজেদের উদ্যোগে ঠিক করা কোনো দূরবর্তী মাঠ বা খোলা জায়গায় কোরবানির কাজ সম্পন্ন করা ভালো হবে। প্যাকেটে বা বক্সে করে মাংস নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হবে ভালো পন্থা। তা না হলে বাসাবাড়ির পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করুন। রাস্তায়, পথঘাটে যেখানে-সেখানে কোরবানি দেবেন না। যথাযথভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করুন। বাড়ির নিচে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা, বেসিন, সাবানপানির আয়োজন রাখুন। পশু কোরবানি ও ব্যবস্থাপনার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি যেমন কসাই ও সাহায্যকারীদের বারবার হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখুন। তারা মাস্ক ও গ্লাভস পরে, সম্ভব হলে পলিথিনের অ্যাপ্রোন বা ডিসপোজেবল গাউন পরে কাজ করলে ভালো।
ছুরি, বঁটি, দা ইত্যাদি যথাযথভাবে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। কাজ শেষ হলে দ্রুত ব্লিচিং পাউডার মিশ্রিত পানি দিয়ে পুরো জায়গা, সিঁড়ি ইত্যাদি পরিষ্কার করে ফেলুন। বাড়ি নিয়ে আসার পর একজন ব্যক্তি গ্লাভস ও মাস্ক পরে মাংস প্যাকেট করা বা ভাগ করার কাজটি সারবেন।
এখন বর্ষাকাল। তাই ডায়রিয়া যেনো না হয়, সেদিকে সতর্ক থাকুন। ঈদের সময় খাওয়াদাওয়া হবে। তবে অতিরিক্ত খাবেন না, বদহজম হতে পারে। গরু ও খাসির মাংসে এমনিতেই চর্বি বেশি, তাই রান্নায় তেল কম ব্যবহার করুন। কম মসলায় রান্না করার একটা ভালো উপায় হলো রান্নায় টক দই, লেবুর রস ইত্যাদি ব্যবহার করা। চর্বি ফেলে দিয়ে কাবাব, স্টেক, গ্রিল ইত্যাদি করে খাওয়া বরং ভালো। একবারে অনেক রান্না করে বেশ কয়েক দিন রেখে বাসি করে খাবেন না।
* মাংস বেশি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তাই প্রতিবেলা সালাদ, সবুজ শাকসবজি খাবেন। প্রচুর পানি পান করবেন। ঈদের সময় প্রতিদিন মাংস খেতে হবে এমন কোনো কথা নেই।
* অ্যাসিডিটি বা গ্যাসের সমস্যা যেনো না হয়, সেজন্যে অতিরিক্ত তেল, চর্বি ও মসলা এড়িয়ে চলুন। অতিভোজন করবেন না। হৃদ্রোগ, কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে মগজ, নেহারি, পায়া ইত্যাদি না খাওয়াই ভালো।
* রোজ খানিকটা হাঁটাহাঁটি করতে ভুলবেন না। এতে অতিরিক্ত ক্যালরি যা গ্রহণ করেছেন তা ক্ষয় হবে। ভরপেট খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘুমাবেন না। তাতে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়বে। সময়মতো খাওয়াদাওয়া করবেন।
* ঈদের সময়ের ব্যস্ততার মধ্যেও নিজের রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও অন্যান্য নিয়মিত ওষুধ খেতে ভুলবেন না। সুস্থ থাকার চেষ্টা করুন।
ডাঃ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান : এমবিবিএস (বিসিএস), ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, চাঁদপুর।