প্রকাশ : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
ক্যান্সার একটি মারণব্যাধি। ক্যান্সার মানেই কোষের অস্বাভাবিক ও দ্রুত সংখ্যাবৃদ্ধি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বছরে মৃত্যুর সংখ্যা অনুযায়ী প্রথম মারণব্যাধি হলো হৃদরোগ আর দ্বিতীয় স্থানে আছে ক্যান্সার। অবশ্য দু হাজার কুড়ি সালে কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে। ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সচেতন করার জন্যে দু হাজার আট সাল থেকে বিশ্বব্যাপী ক্যান্সার দিবস পালিত হয়ে আসছে। প্রতি বছর চার ফেব্রুয়ারি ক্যান্সার প্রতিরোধে এবং ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সচেতন করার জন্যে ক্যান্সার দিবস পালিত হয় যার একটা নির্দিষ্ট প্রতিপাদ্য বিষয় থাকে। এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘আসুন ক্যান্সার সেবায় বৈষম্য দূর করি’।
ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরিতে ক্যান্সারকে একটা বিশেষ চিহ্ন দিয়ে প্রকাশ করা হয়। ক্যান্সার প্রকাশক এই প্রতীককে বলে রিবন। সাধারণভাবে সব ধরনের ক্যান্সারকে ল্যাভেন্ডার ফুলের রঙ বা হাল্কা বেগুনি রঙের রিবন দিয়ে প্রকাশ করা হয়। তবে পঞ্চাশের অধিক রঙের রিবন দিয়ে আলাদা আলাদাভাবে ক্যান্সারকে প্রতীকায়িত করা হয়। যেমন : গোলাপি রঙের রিবন দিয়ে স্তন ক্যান্সার, সাদা মুক্তা রঙের রিবন দিয়ে ফুসফুসের ক্যান্সার, সবুজ রঙের রিবন দিয়ে লিভার ক্যান্সার, কমলা রঙের রিবন দিয়ে কিডনি ক্যান্সার, কালো রঙের রিবন দিয়ে ত্বকের ক্যান্সার ইত্যাদি প্রকাশ করা হয়।
ক্যান্সারের লক্ষণ
আঠারো-কুড়িটা লক্ষণের মধ্যে এক এক ধরনের ক্যান্সার এক এক রকমের লক্ষণ প্রকাশ করে। সব লক্ষণ কোন ক্যান্সার প্রকাশ না-ও করতে পারে। মোটের ওপর ক্যান্সারের লক্ষণগুলো হলো-
* ঘুষঘুষে জ্বর ও রাতে ঘামে বিছানা ভিজে যাওয়া
* ওজন দ্রুত কমে যাওয়া বা দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া
* অনিরাময়যোগ্য ক্ষত বা ঘা
* মলের সাথে রক্তক্ষরণ
* কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া
* মূত্রের সাথে রক্ত নির্গমন
* দুই সপ্তাহর অধিক কাশি
* কাশিতে রক্তক্ষরণ
* গলার স্বর বসে যাওয়া
* বুকে ব্যথা ও শ্বাস কষ্ট হওয়া
* তলপেটে ব্যথা অনুভূত হওয়া
* হাড়ে হাড়ে ব্যথা অনুভব হওয়া
* ত্বকের নিচে রক্তক্ষরণ
* তিল বা মোল-এর আকার পরিবর্তন হওয়া
* দুই স্তনের আকারে অসাম্য হওয়া
* স্তনবৃন্তের ক্ষত ও নিঃসরণ
* স্তনের ত্বক কমলার খোসার মতো হওয়া
* স্তনে চাকা বোধ হওয়া
* গলার দুই ধারে মটরের দানার মতো চাকা হওয়া
* খেতে অরুচি
আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির মতে,
* মলমূত্র ত্যাগে ধরন পরিবর্তন হওয়া। যেমন : কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া, মূত্র ত্যাগে ব্যথা বোধ করা
* অনিরাময়যোগ্য গলাব্যথা
* অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ বা নিঃসরণ
* শরীরের কোনো অংশে চাকা হওয়া
* খাবার গিলতে কষ্ট ও হজম না হওয়া
* তিল বা মাশাতে দৃশ্যমান পরিবর্তন
* বিরক্তিকর খুশখুশে কাশি, গলার স্বর ভেঙে যাওয়া
ক্যান্সার প্রতিরোধে করণীয়
* তামাক, সিগারেট, অ্যালকোহল বর্জন
* শারীরিক পরিশ্রমে অলসতা না করা
* অতিরিক্ত দৈহিক স্থুলতা হতে না দেয়া
* নিয়মিত ব্যায়াম করা
ক্যান্সার প্রতিরোধে গ্রহণযোগ্য খাদ্য
* ক্রুসিফেরি গোত্রভূক্ত উদ্ভিদ যেমন : ব্রকোলি
* গাজর
* আঁশজাতীয় সবজি
* পর্যাপ্ত ফল-ফলাদি
* পর্যাপ্ত পানি পান
* দুপুরের কড়া রোদ এড়িয়ে চলা
* সুনিদ্রা ও প্রফুল্লতা নিশ্চিত করা।