প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
দু হাজার ঊনিশের ডিসেম্বর থেকে বাইশের জানুয়ারি অব্দি করোনা নামক জীবাণুর ভাণুমতির খেল্ নিয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে আছে পৃথিবী। প্রতিরোধী ভ্যাকসিন এবং প্রতিকারের কয়েক পদের ঔষধ আবিষ্কৃত হয়ে যাওয়ার পরেও করোনা এখনও নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়ে গেছে মানবসভ্যতার। করোনার যে বৈশিষ্ট্য, তাতে এ কথা আজ আর কারো অজানা নয় যে প্রতিনিয়ত নিজের রূপ বদলে চলেছে এই ভাইরাস। নিজের জীনগত বৈশিষ্ট্য এতো দ্রুত সে পাল্টে চলেছে যে মানুষের জ্ঞান ও গবেষণা তার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারছে না। আল্ফা, বিটা, গামা, ডেল্টা পার হয়ে করোনা জীবাণু এখন ওমিক্রন নামে নাচিয়ে বেড়াচ্ছে মানবজাতিকে। দু হাজার একুশ সালের চব্বিশ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত হওয়া এই মিউটেশনজাত নবরূপ আজ প্রায় বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। যারা দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন নিয়ে নিশ্চিন্তে আছেন তাদের কেউ কেউ ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে আতঙ্কিত হয়ে উঠেছেন। তাই ওমিক্রনকে জানার আজ প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।
ওমিক্রন কী?
নভেল করোনা ভাইরাস সার্স-২ ভাইরাসের সবচেয়ে বেশিবার মিউটেশনসম্পন্ন রূপ হচ্ছে ওমিক্রন। যার স্পাইক প্রোটিন কমপক্ষে পঞ্চাশবার নিজেকে বদলেছে। ওমিক্রনের সংক্রমণ খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় আন্তর্জাতিকভাবে একে মোকাবিলায় বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা নড়েচড়ে বসেছে। এটি ড্রপলেট নয়, ধারণা করা হচ্ছে এটি বায়ুবাহিত জীবাণু, যা কাশি, সর্দি, গলাব্যথা, জ্বর, পেটে ব্যথা, তলপেটে ব্যথা ইত্যাদি উপসর্গের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এতে পাতলাপায়খানা কিংবা নাকে গন্ধ না বুঝতে পারার বিষয়টি গৌণ।
ওমিক্রনের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন
আবিষ্কৃত ভ্যাকসিন ওমিক্রনের বিরুদ্ধে কার্যকর নয়। অর্থাৎ দু ডোজ ভ্যাকসিন নিলেও ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। তবে দু ডোজ টিকাধারীরা আক্রান্ত হলেও তাদের জীবন সংশয় থাকে না। ওমিক্রন সংক্রমণের গতি দ্রুত হলেও ওমিক্রনে ফুসফুসে ক্ষতির পরিমাণ ততো মারাত্মক নয়।
ওমিক্রন মোকাবেলায় অ্যান্টি ভাইরাল ড্রাগ
যদিও রেমডিসিভির দিয়ে ডেল্টা সংক্রমণকে ভালোই মোকাবিলা করা গেছে, তবে ওমিক্রনে আক্রান্তের ক্ষেত্রে রেমডিসিভিরের ব্যবহার অতো বিস্তৃত নয়। বিভিন্ন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানীগুলো মলনুপিরাভির নামে করোনাভাইরাস বিরোধী এক ঔষধ বাজারে এনেছে, যার ব্যবহার ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। এর পাশাপাশি করোনাক্রান্ত ফুসফুসের অ্যালভিওলাইতে ব্লাড ক্লটিংকে সামাল দিতে রক্ত তরলীকরণ ঔষধের ব্যবহারও বলবৎ আছে।
ওমিক্রন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে করণীয়
সবসময় মানসম্পন্ন মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। সাবান দিয়ে কিছুক্ষণ পর পর হাত ধুতে হবে। ভিড়-ভাট্টায় যাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে। হাঁচি-কাশি কারও সামনে দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। পাশাপাশি ভ্যাকসিন নিতে হবে। নিরাপদ শরীরচর্চা বজায় রাখতে হবে নিয়মিতভাবে।
* চিকিৎসাঙ্গন বিভাগে লেখাসহ স্বাস্থ্যবিষয়ক যে কোনো প্রশ্ন পাঠান।
ই-মেইল : রহঃড়.ধষধসরহ@মসধরষ.পড়স