প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
কক্সবাজারে ৯০ ওভারের ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশীপ
কুষ্টিয়ার সাথে হেরেই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেলো চাঁদপুর জেলা
কক্সবাজারে ৪২তম জাতীয় ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশীপ থেকে বিদায়ের পথে চাঁদপুর। আর ২দিনের ম্যাচ অর্থাৎ ৯০ ওভারের ম্যাচের খেলায় মাত্র ১দিনেই পুরো অলআউট হয়ে কুষ্টিয়ার সাথে ৯৫ রানে হেরে চ্যাম্পিয়নশীপ ক্রিকেট থেকে ছিটকে গেলো চাঁদপুর জেলা ক্রিকেট দল।
কোচের সাথে সাথে খেলোয়াড়দের প্রচুর সমন্বয়হীনতার অভাব ছিলো খেলার শুরু থেকেই। বেশিদিনও হয়নি জেলা দলের ক্রিকেটার ছিলেন, কোনো কারণে দায়িত্ব পাওয়ার পরেই ক্রিকেটারসহ দায়িত্বশীল অনেকের সাথে তার খিটখিটে মেজাজ ও বিভিন্ন ধরনের তদবিরে অতিষ্ঠ ক্রীড়াপাড়ার অনেক মানুষই।
আজ বৃহস্পতিবার ও কাল শুক্রবার দুদিনব্যাপী ম্যাচ রয়েছে চাঁদপুরের দলটির সাথে ফরিদপুর জেলা ক্রিকেট দলের সাথে। সেই ম্যাচে হারলে কিংবা জয়ী হলেও ফাইনালের টিকেট নিতে পারবে না চাঁদপুরের দলটি।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের আয়োজনে জাতীয় ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশীপ ট্রায়ার-১ থেকে জয়লাভকারী ৮ জেলাকে নিয়ে কক্সবাজার শেখ কামাল ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৯০ ওভারের ম্যাচের আয়োজন করা হয়। ৮টি দলকে দুগ্রুপে ভাগ করে খেলাগুলো শুরু করা হয়। চ্যাম্পিয়নশীপের নিয়ম অনুযায়ী ফাইনালে ওঠা চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ৫ লাখ ও রানার আপ দল পাবে আড়াই লাখ টাকাসহ বিভিন্ন পুরস্কার। অংশ নেয়া প্রতিটি দলেই জেলা পর্যায়ের যে সমস্ত ক্রিকেটার ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবে এমনকি জাতীয় দলের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে খেলেন তারা খেলার সুযোগ পান।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের আয়োজনে সারা বাংলাদেশের ৩২জেলা নিয়ে ৮টি ভেন্যুতে ট্রায়ার-১ এর খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হয়। ভেন্যুগুলো হচ্ছে : ফরিদপুর, হবিগঞ্জ, চাঁদপুর, জামালপুর, চুয়াডাঙ্গা, টাঙ্গাইল, শরীয়তপুর ও মৌলভীবাজার জেলা স্টেডিয়াম। দেশের ৬৪ জেলা ক্রিকেট দলের মধ্যে যারা ট্রায়ার-১-এ উঠেছে তারাই এ প্রতিযোগিতায় খেলার সুযোগ পেয়েছিলো। চাঁদপুর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত খেলায় শক্তিশালী ঢাকাকে হেরে ট্রায়ার-১ থেকে নেমে যেতে হয়েছে।
মৌলভীবাজার এম সাইফুর রহমান জেলা স্টেডিয়ামে চাঁদপুর জেলা ক্রিকেট দল শরীয়তপুরের সাথে জয়লাভ করে সুযোগ পেয়েছিলো প্রথমবারের মতো ৯০ ওভারের ম্যাচ খেলার। কক্সবাজার ভেন্যুতে প্রথম ম্যাচে ময়মনসিংহের সাথে ৫০ রানের জয় পায় চাঁদপুর। আর ২৩ ও ২৪ মার্চ দুদিনব্যাপী মোট ১৮০ ওভারের ম্যাচের মধ্যে প্রথম দিন ২৩ মার্চ চাঁদপুরের দলটি হেরে যায় ৯৫ রানে। শনিবার প্রথমে ব্যাট করে কুষ্টিয়া জেলা ক্রিকেট দল ৫৫ ওভার ৪ বলে সবক’টি উইকেট হারিয়ে ১৮১ রান করে। বল হাতে চাঁদপুরের পক্ষে সাইফুদ্দিন ৩, তানভীর সিহাদ ও ফজলে রাব্বি ২টি করে উইকেট নেন।
চাঁদপুর জেলা ক্রিকেট দল ১৮২ রানের জয়ের টার্গেট নিয়ে খেলতে নামে। তারা ৪৪ ওভার ২ বলে সবক’টি উইকেট হারিয়ে মাত্র ৮৬ রান করে। দলের পক্ষে ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ ৫৫ মিনিট ক্রিজে থেকে মেহেদী ৬৬ বলে ২৪ , তানভীর সিহাদ ২৩ মিনিট ক্রিজে থেকে ২৭ বলে ২৪ ও সাইফুদ্দিন ৫৫ মনিটি ক্রিজে থেকে ৫০ বলে ১৫ রান করেন।
জেলার সাবেক ক’জন ক্রিকেটারের সাথে আলাপকালে তারা এ প্রতিবেদককে জানান, প্রতিবছরই জেলা দলকে জেলা ক্রীড়া সংস্থা থেকে অনেক বড় বাজেটে পাঠানো হয় খেলানোর জন্যে। কিন্তু খেলার শুরু থেকেই কে খেলবে কাকে নিয়ে দল গঠন করা হবে সেটা নিয়ে অনেকটা স্নায়ুচাপ পোহাতে হয় জেলা ক্রীড়া সংস্থার ক্রিকেট উপ-কমিটিসহ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদককে। বতর্মানে জেলা শহরে ক্রিকেট নিয়েও চলে অনেক রাজনীতি। ভবিষ্যতে জেলা দল যদি ভালো কিছু করতে হয় তাহলে সকল কিছুর ঊর্ধ্বে থেকে দল কীভাবে জয়লাভ করতে পারবে সেদিকে জেলা ক্রীড়া সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ করতে হবে। আর না হলে প্রতি বছরই কয়েক লাখ টাকার বাজেট দিতে হবে দলকে, এর প্রতিদানস্বরূপ কিছুই পাওয়া যাবে না।
এ ব্যাপারে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বাবু এ প্রতিবেদককে বলেন, কুষ্টিয়ার সাথে দ্বিতীয় ম্যাচে জেলা দলের যে পারফরম্যান্স তাতে আমি মোটেও হতাশ নই। কারণ ক্রিকেটে এটাই হতে পারে। এটাই ক্রিকেট। কিন্তু আমার মূল কথা হলো, ময়মনসিংহের সাথে জিততে পারলো, কুষ্টিয়ার সাথে কেনো হারলো তা তদন্ত করে পরবর্তীতে জানানো হবে।
জেলা দলের টিম ম্যানেজার এসএম মজিবুল হক (রাসেল) বলেন, অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যে অনেকে দলেই ঢাকা প্রিমিয়ার ও প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লীগের ক্রিকেটাররা খেলেছেন। আমাদের দলে চাঁদপুরের ক্রিকেটাররা খেলেছেন। শুরুতে ঢাকায় বিভিন্ন ক্লাবে খেলা চাঁদপুরের ক’জন ক্রিকেটারকে পেলেও পরবর্তীতে তাদের ক্লাব তাদেরকে আর ছাড়েনি। আমরা অন্য জায়গা থেকে তেমন কোনো সুযোগ সুবিধা না পেলেও বিসিবি থেকে সকল ধরনের সুবিধা পেয়েছি।
চাঁদপুর জেলা দল : সাদ্দাম হোসেন, ফজলে রাব্বি, মাসুদ, তোফায়েল মাল, সাইফুদ্দিন বাবু, ফাহাদ, জিসান, শাকিল, ইয়াসিন, রাফি, মেহেদী, রিয়াদ, হীরা ঢালী, আশরাফ, তানভীর ও সাইমুন। দলের ট্রেইনার সোহাগ ও টিম ম্যানেজার এস এম মজিবুল হক (রাসেল)। কোচ মোশারফ বাবু।