শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ০২ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০

জাতীয় পর্যায়ে খেলার জন্যে স্থানীয়ভাবে উন্নতমানের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে
চৌধুরী ইয়াসিন ইকরাম ॥

বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় খেলা হিসেবে বিভিন্ন দেশের ক্রীড়াবিদদের নিকট অত্যন্ত পরিচিত টেবিল টেনিস খেলাটি। ব্যক্তিগত কিংবা দলগত বিষয় হিসেবে এ খেলা টেবিলের ওপরের অংশে খেলতে হয়। এছাড়াও খেলার উপকরণ হিসেবে ব্যাট, ছোট বল, জাল এবং টেবিলের প্রয়োজন পড়ে। ১৮৮০ সালে ইংল্যান্ডে টেবিল টেনিসের উৎপত্তি ঘটে। আধুনিক অলিম্পিকে এ ক্রীড়া ১৯৮৮ সালের সিউল অলিম্পিকে অন্তর্ভুক্ত হয়। বাংলাদেশেও এ খেলাটির ব্যাপক প্রচলন রয়েছে। বিশেষ করে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কমনরুমে এই খেলাটি বেশি করে খেলেন শিক্ষার্থীরা।

চাঁদপুর জেলা শহরে চাঁদপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের এই খেলাটি খেলতে দেখা যেতো বেশি। বর্তমানে জেলা শহরের কোথাও খেলাটি তেমন দেখা না গেলেও জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে মাঝে মাঝে বিভিন্ন টুর্নামেন্ট ও লীগ উপলক্ষে চাঁদপুর ক্লাবে টেবিল টেনিসের রুমে অনুশীলনের ব্যবস্থা করা হয়।

চাঁদপুর জেলা টেবিল টেনিসের খেলোয়াড়রা গত ২২ জুলাই চট্টগ্রামের রাইফেলস্ ক্লাবে ৩৯তম জাতীয় টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়েছিলেন। সেই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় জেলা ক্রীড়া সংস্থার টেবিল টেনিস খেলোয়াড় নুরুল হায়দার ( সংগ্রাম )। তার বাবার নাম মৃত আঃ কাদের মাস্টার, যিনি ছিলেন তৎকালীন চাঁদপুর মহকুমা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের দুবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান।

নুরুল হায়দার সংগ্রাম শিক্ষাজীবন শুরু করেন চাঁদপুর শহরের কদমতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত তিনি গণি মডেল হাইস্কুল ও হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। এরপর ভর্তি হন চাঁদপুরের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ চাঁদপুর সরকারি কলেজে। বসবাস করেন চাঁদপুর শহরের আদালত পাড়া এলাকাতে। তিনি হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা অবস্থায় খেলাধুলার সাথে জড়িয়ে পড়েন। নবম শ্রেণিতে পড়াবস্থায় ফুটবলের সাথে জড়িত হন। খেলেছেন চাঁদপুর জেলা শহর সহ চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন মাঠে। ওই সময়ে চাঁদপুরে ফুটবল খেলা জনপ্রিয় ছিল অনেক বেশি। তার সাথে ওই সময় ফুটবল খেলতেন আমিন মোল্লা, বিএম হারুনুর রসিদ, মরহুম মফিজ, জাহাঙ্গীর পাটওয়ারী, আফজাল বেপারী সহ অনেকেই। গণি স্কুলে পড়াবস্থায় আন্তঃস্কুল ফুটবলের সাথে জড়িয়ে পড়েন। খুলনা বিভাগীয় পর্যায়ে ওই সময়ে তার দল রানার আপ হয়। সেই দলের মূল একাদশের খেলোয়াড় ছিলেন তিনি। খুলনার সাথে খেলার পর তাদের খেলা হয় ঢাকা বিভাগের সাথে। তিনি স্কুলজীবনে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)তে মাসব্যাপী ফুটবলের প্রশিক্ষণে অংশ নেন। চাঁদপুর সরকারি কলেজে পড়াবস্থায় ইনডোরে নিয়মিত ক্যারাম ও টেবিল টেনিস খেলতেন। কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সহ কলেজের গ্রুপভিত্তিক খেলায় টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে অনেক পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি জানান, চাঁদপুর সরকারি কলেজে ক্লাস শেষ করে কলেজের কমন রুমে নিয়মিত টেবিল টেনিস অনুশীলন করতেন। ২০১৮ সাল থেকে তিনি নিয়মিত জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ হয়ে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে টেবিল টেনিস খেলে আসছেন। ২০১৮ সালে জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে চাঁদপুর ক্লাবে এককে সজীবকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হন। ২০২৩ সালে চাঁদপুর ক্লাবে অনুষ্ঠিত টেবিল টেনিস খেলায় রানারআপ হন এবং গত মাসে চট্টগামের রাইফেলস ক্লাবে দ্বৈতে সংগ্রামের দল খুলনাকে হারিয়ে বাংলাদেশ বিমানের সাথে খেলে।

তিনি জানান, এবারের ৩৯তম জাতীয় টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, পুলিশ বাহিনী সহ ঢাকার বড় বড় ক্লাব ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার দলগুলো অংশ নেয়। এই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করতে পেরে এবং খেলতে পেরে তিনি আনন্দিত।

নুরুল হায়দার সংগ্রামের সাথে খেলাধুলার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপচারিতায় তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের এ জেলাতে বর্তমানে অনেক টেবিল টেনিস খেলোয়াড় সৃষ্টি হয়েছে। জেলা ক্রীড়া সংস্থা যখন কোনো টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করে বা খেলার আমন্ত্রণ পায় তখনই অল্প ক'দিনের জন্যে টেবিল টেনিসের অনুশীলন শুরু করে। জাতীয় পর্যায়ে খেলতে হলে অনেক বেশি অনুশীলন করার প্রয়োজন। তবে জাতীয় পর্যায়ে খেলার জন্যে স্থানীয়ভাবে উন্নতমানের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। কেননা আমাদের এখানে সেই ধরনের অনুশীলনের ব্যবস্থা নেই। আমাদের এ জেলাতে ভালো মানের টেবিল টেনিস খেলোয়াড় সৃষ্টি করতে হলে জাতীয় পর্যায় থেকে ভালো মানের কোচ কিংবা জাতীয় পর্যায়ের ভালো খেলোয়াড় এনে জেলা ও উপজেলার টেবিল টেনিস খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। আমার মূল কথা হচ্ছে, টেবিল টেনিস খেলার আগ্রহ আছে অনেকেরই , কিন্তু খেলাটি ভালোভাবে শেখার ব্যবস্থা নেই। বর্তমানে সদর উপজেলাতে অনেক উদীয়মান খেলোয়াড় রয়েছে। এদের থেকেই মনে করি জাতীয় পর্যায়ে খেলার অনেক খেলোয়াড় খুঁজে পাওয়া যাবে। নিয়মিত টেবিল টেনিসের অনুশীলনের ব্যবস্থা করা হলে আশা করি এ জেলা থেকে ফুটবল ও ক্রিকেটের পর টেবিল টেনিস খেলোয়াড় লাল-সবুজের জার্সি পরে জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করতে পারবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়