সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

ফরিদগঞ্জে প্রথম বারের মতো ৩২ দলের অংশগ্রহণে শুরু হলো ফুটবল টুর্নামেন্টের মহোৎসব
শামীম হাসান ॥

করোনার কালো থাবা, অদৃশ্য অপশক্তি, স্থানীয় ক্লাব কর্তাদের নিষ্ক্রিয়তা এবং গ্রুপিং রাজনীতির অদৃশ্য প্রভাব সব মিলিয়ে সামগ্রিকভাবে লম্বা সময় জুড়ে একেবারে থমকে গিয়েছিলো ফরিদগঞ্জ উপজেলা সদরের ক্রীড়াঙ্গন।

ফরিদগঞ্জ উপজেলার ক্রীড়াঙ্গনের এমন নিষ্ক্রিয় রূপ চলতি বছরের গত ২৬ জুলাই দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠে ‘অদৃশ্য শক্তির কাছে পরাজিত ফরিদগঞ্জ সদরস্থ ক্রীড়াঙ্গন ॥ উপজেলা সদরে নেই ক্রীড়া উৎসবের মুখরতা ॥ আয়োজন হচ্ছে না বয়স ভিত্তিক টুর্নামেন্ট ॥ স্থানীয় ক্রীড়া সংগঠকদের শত চেষ্টার পরও আলোর মুখ দেখছে না বড় কোনো ক্রীড়া আয়োজন’ এমন শিরোনামে প্রকাশিত হয়। ‘ক্রীড়াকণ্ঠ’ পাতার প্রধান প্রতিবেদন হিসেবে এটি প্রকাশের পর একই দিন রাতে স্থানীয় ক্রীড়াঙ্গনের প্রধান স্বপ্নদ্রষ্টা জিয়াউর রহমান জিয়া ‘আই স্পোর্টস উন্মুক্ত ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২২’ ঘোষণা দেন। ঘোষণার ক’দিনের মাথায় অভূতপূর্ব সাড়া মেলে উপজেলা সদর এবং সদরের বাইরের বিভিন্ন দলের। সবশেষে ৩২ দলের অংশগ্রহণে এই প্রথম বারের মতো উপজেলায় এতো বড় কোনো টুর্নামেন্ট আয়োজন ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন জিয়াউর রহমান সহ স্থানীয় ক’জন ক্রীড়া সংগঠক।

আহসান হাবিবকে টুর্নামেন্টের প্রধান স্পন্সর করে ফরিদগঞ্জ স্পোর্টস্ ক্লাব ও ফরিদগঞ্জ ফুটবল একাডেমির সার্বিক সহযোগিতায় গত ১৬ আগস্ট ফরিদগঞ্জ এআর পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ৩২ দলের অংশগ্রহণে ফরিদগঞ্জ উপজেলার ক্রীড়াঙ্গনের ইতিহাসে সর্বাধিক সংখ্যক দল নিয়ে শুরু হয় ‘আই স্পোর্টস্ উন্মুক্ত ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২২’। উদ্বোধনের দিন থেকে প্রতিদিন বিকেলেই যেন উক্ত মাঠটি মুখরিত হয় ফুটবলের মহোৎসবে। টুর্নামেন্টে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন দল অংশগ্রহণ করায় প্রিয় দলকে সমর্থন জানাতে প্রতিদিনই দুই হাজারের অধিক দর্শককে আসতে দেখা যায়। এতে মাঠের চার পাশ একেবারে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। ম্যাচগুলো চলাকালীন গোল করার জন্যে দলের কোনো একটি আক্রমণের সাথে সাথে সমর্থকদের করা উল্লাস জানান দেয়, কতো বড় টুর্নামেন্ট চলছে উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে। শুধু ভালো খেলাই নয়, মাঠের বাইরে দর্শক ও সমর্থকদের গর্জনও যে শতগুণ বাড়িয়ে তোলে টুর্নামেন্টের সৌন্দর্য তা এই টুর্নামেন্টই অন্যতম উদাহরণ। এই টুর্নামেন্টে দর্শকদের এমন সরব উপস্থিতি প্রমাণ করলো, এই অঞ্চলের দর্শকরা কতোটা ক্রীড়া পাগল আর দর্শকরা চাইলেই যে একটা ফুটবল ম্যাচ তথা একটা টুর্নামেন্টে নতুনত্ব আনা সম্ভব।

সফলতম এমন টুর্নামেন্ট আয়োজনের বিষয়ে ফরিদগঞ্জ স্পোর্টস্ ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান জিয়া চাঁদপুর কণ্ঠের এই প্রতিবেদককে জানান, প্রতি বছরই বড় টুর্নামেন্ট করার ইচ্ছে থাকে, কিন্তু নানামুখি প্রতিবন্ধকতার কারণে তা আর হয়ে উঠে না। তবে এই টুর্নামেন্টটি ঘোষণার পর এতোটা সাড়া পাওয়ায় আমি সত্যিই অনেক বেশি আনন্দিত। শুরুতে সবাইকে খেলার সুযোগ করে দেওয়ার চিন্তা থেকে টুর্নামেন্টের ঘোষণাটি দেই। কিন্তু টুর্নামেন্টটি শুরু হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, প্রতিটি দলই শক্তি-সামর্থ্যে সমানে সমান, মাঠের লড়াইয়ে কেউ কাউকে ছেড়ে দেয়ার নয়। সব মিলিয়ে ক্রীড়া উৎসবের মুখরতায় টুর্নামেন্টের যে সৌন্দর্য, ক্রীড়া উৎসবের যে আমেজ তা ষোলো আনাই পূর্ণ হচ্ছে এই টুর্নামেন্টটিতে। টুর্নামেন্ট আয়োজনে যেমনি ভাবে ফুটবলাররা দীর্ঘদিন পর ফুটবল উৎসবে ফিরেছে, সেই সাথে ক্রীড়ামোদী দর্শকরা স্মরণকালের বৃহৎ ফুটবল টুর্নামেন্ট উপভোগ করছে। আশা করি এমন টুর্নামেন্ট আয়োজনের ধারাবাহিকতা আগামী দিনগুলোতেও বজায় থাকবে।

সপ্তাহের অন্যান্য দিনে একটি করে খেলা থাকলেও খেলার ফিকশ্চার অনুযায়ী বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ২ টি ম্যাচ হওয়ায় এই দুদিন দর্শকদের উপস্থিতি হয় নজরকাড়া। মাঠের চার পাশে যেন তিল পড়ার জায়গাটুকুও পাওয়া যায় না।

ম্যাচ চলাকালীন খেলা দেখতে আসা দর্শক জাহিদুল ইসলাম রাসেল জানান, বহুদিন পর যেন এই মাঠটি তার প্রাণ ফিরে পেয়েছে। প্রতিদিনই এতো বেশিসংখ্যক দর্শকের উপস্থিতি বলে দেয় ফুটবলের প্রতি মানুষের গভীর টান বা ভালোবাসা।

১৬ আগস্ট ৩২ দলের অংশগ্রহণে শুরু হওয়া এ টুর্নামেন্টে নক আউট নিয়মে প্রায় দেড় মাস ধরে চলবে। ফাইনাল সহ মোট ৩১ টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি ম্যাচ শেষে টুর্নামেন্ট কমিটির পক্ষ থেকে তুলে দেয়া হয় ম্যাচ সেরার পুরস্কার। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের জন্যে থাকবে ‘ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ’র বিশেষ পুরস্কার। এবারের চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ দলের জন্যে থাকবে ফুটবল বিশ্বকাপের অনুরূপ একই ডিজাইনের ট্রফি ও নির্দিষ্ট পরিমাণ প্রাইজমানি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়