সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ২২ জুন ২০২২, ০০:০০

চাঁদপুর প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগের প্রথম সেঞ্চুরি ফজলে রাব্বির
চৌধুরী ইয়াসিন ইকরাম ॥

চাঁদপুর স্টেডিয়ামে চলমান প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগের প্রথম সেঞ্চুরি করলেন ভাই ভাই স্পোর্টিং ক্লাবের খেলোয়াড় ও চাঁদপুর জেলা ক্রিকেট দলের ক্রিকেটার ফজলে রাব্বি। এই ক্রিকেট লীগের প্রথম রাউন্ডের খেলায় তিনি এ কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন। গত ১৫ জুন চাঁদপুর শহরের কোড়ালিয়া এলাকার ইয়ুথ ক্লাবের সাথে লীগের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরি করেন। তিনি ওইদিন ১০১ বলে ১০৪ রান করেন। তার শতরানের মধ্যে ছিলো ৫টি ছক্কা ও ১০ টি চার। ইয়ুথের সাথে তার ছক্কাগুলো ছিলো চলতি টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বড় বড় ছক্কা। দলের একজন ওপেনিং ব্যাটসম্যান আউট হওয়ার সাথে সাথে দলের একজন রক্ষণভাগের অলরাউন্ডার হিসেবে দায়িত্¦ নিয়ে মাঠে নামেন। তিনি অল্প সময়ের মধ্যে একজন হার্ডহিটার ব্যাটসম্যান হিসেবে শতরান করেন। চলতি লীগে প্রথম রাউন্ডে তিনি ৩টি ম্যাচ খেলতে নেমেছেন। এর মধ্যে ভাই ভাই ক্লাবের হয়ে এবং নিজের প্রথম ম্যাচে নিতাইগঞ্জ ক্রীড়া চক্রের সাথে খেলায় তাকে মাঠে নামতে হয়নি। আর ২য় ম্যাচে শক্তিশালী আবাহনী ক্রীড়া চক্রের সাথে ব্যাট হাতে ২৫ বলে ৩৭ রান করেন।

ক্রিকেটার ফজলে রাব্বি চলতি বছর চাঁদপুর জেলা ক্রিকেট দলের হয়েও ৪০তম জাতীয় ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশীপে ভালো ব্যাটিং করেন। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমান সংসদ সদস্য ম্যাশের (মাশরাফি বিন মর্তুজা) জেলাতে ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় দলের হয়ে তিনিই ব্যাটিংয়ে ভালো কিছু রান উপহার দিয়েছেন। নড়াইলে অনুষ্ঠিত জেলা দলের হয়ে ফজলে রাব্বি প্রথম ম্যাচে গাজীপুর জেলা দলের সাথে ব্যাট হাতে ৪১ বলে করেন ৩৮ রান। ২য় ম্যাচে মেহেরপুরের সাথে ৯৯ বলে করেন ৭৬ রান ও সবশেষ ম্যাচে পঞ্চগড়ের সাথে ৯ বলে করেন ১৭ রান। যদি এ প্রতিযোগিতায় চাঁদপুর জেলা দলকে অনেকটা শূন্য হাতেই নিজ জেলাতে ফিরতে হয়। কিন্তু একজন অলরাউন্ডার হিসেবে তার সাফল্য ছিলো কিছুটা। জেলা দলের হয়ে শেষ ম্যাচে পঞ্চগড়ের সাথে ৮ ওভার বল করে ২ মেডেন সহ ১টি উইকেট পেয়েছিলেন।

স্কুল ক্রিকেট খেলার মাধ্যমেই তার যাত্রা হয়েছিলো চাঁদপুর স্টেডিয়ামে। স্কুল ক্রিকেট দিয়েই যে তার ক্রিকেট যাত্রা সেই ধারাবাহিকতা ধরে রেখেই এখনও খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন। জেলা এবং বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের খেলায় ভালো পারফরমেন্স করার কারণে বিভাগীয় পর্যায়ে বেশ কিছু প্রশিক্ষণ ক্যাম্পসহ বয়সভিত্তিক বিভাগীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়কের দায়িত্বও পালন করেছেন। জেলা ক্রিকেট কোচ ও ক্রিকেটের কর্ণধার শামিম ফারুকীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ক্লেমন চাঁদপুর ক্রিকেট একাডেমীতে অনুশীলন করেছেন বেশ কিছুদিন। বর্তমানে চাঁদপুর শেখ কামাল একাডেমীর প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে খেলাধুলার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

চাঁদপুর শহরের ছিদ্দিক বেকারীর মরহুম ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে হচ্ছেন ফজলে রাব্বি। তিনি চাঁদপুর আল-আমিন একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজে শিক্ষাজীবন শুরু করেন। তিনি বর্তমানে ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র। তিনি ডান হাতে ব্যাটিংসহ অফ স্পিন বল করে থাকেন। একজন ভালো মানের অলরাউন্ডার ক্রিকেটার হিসেবে পরিচিত ক্রীড়াঙ্গনে। বাসার পাশেই চাঁদপুর পৌর পার্ক মাঠ থাকার কারণে স্কুল ছুটি হলেই এখানে এসে ক্রিকেটারদের খেলা দেখতেন। দশম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় চাঁদপুর স্টেডিয়ামে রঘুনাথপুর হাইস্কুলের হয়ে স্কুল ক্রিকেটে প্রথম খেলতে নামেন। ওই বছরই তার দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কারণে বিভাগীয় পর্যায়ে স্কুল ক্রিকেট খেলার সুযোগ পান। এরপর ২০১১ ও ২০১২ সালে চাঁদপুর জেলা অনূর্ধ্ব ১৪ দলের হয়ে প্রথমে খেলার সুযোগ পান। সেখান থেকে ভালো করার কারণে বিভাগীয় পর্যায়ে ক্যাম্পিংয়ের সুযোগ পান। সেখানে প্রথমে ৩দিন এবং পরবর্তীতে ১০ দিনের প্রশিক্ষণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ১৮ দলের হয়ে রংপুর ও যশোর খেলতে যান। সেখানে বিভাগীয় দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পান। ২০১৯ সাল থেকে চাঁদপুর জেলা ক্রিকেট দলের নিয়মিত সদস্য হিসেবে খেলে যাচ্ছেন। ঢাকায় ২০১৩ সালে আজিম ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে খেলা শুরু করেন। বর্তমানে ২য় বিভাগ ক্রিকেট লীগে ঢাকায় গাজী টায়ার্সের হয়ে খেলছেন।

চাঁদপুর স্টেডিয়ামে ইয়ুথ ক্লাবের সাথে সেঞ্চুরি করার পর এ প্রতিবেদকের সাথে মাঠে দেখা হলে আলাপচারিতায় প্রথমে তিনি আল্লাহতায়ালার কাছে শোকরিয়া আদায় করে বলেন, আমি আজ সকলের দোয়ায় ভালো ব্যাটিং করতে পেরেছি। এই টুর্নামেন্টে আমি সর্বপ্রথম ১০০ রান করেছি। আমার ভালো লেগেছে যে, আমার শতরানের পাশাপাশি আমাদের দল ভাই ভাই স্পোর্টিং ক্লাব চলতি টুর্নামেন্টে সর্Ÿোচ্চ রানের রেকর্ড করেছে। তিনি এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে প্রথমেই বলেন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি হয়েছে। এ কমিটি যদি চাঁদপুরের ক্রিকেটের উন্নয়ন করতে চায় তাহলে জেলায় ক্রিকেটার তৈরি করতে নিয়মিত চাঁদপুর স্টেডিয়াম মাঠে স্কুল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চালু করতে হবে। নিয়মিত স্কুল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ও ক্রিকেট লীগ হলে জেলার বিভিন্ন স্থানের ক্রিকেটাররা খেলতে পারবে এবং নতুন নতুন ক্রিকেটার সৃষ্টি হবে। বতর্মানে চাঁদপুর জেলার ক্রিকেটার ও এই স্টেডিয়ামে জেলার বিভিন্ন দলের হয়ে টুর্নামেন্ট ও ক্রিকেট লীগে অংশ নেয়া শামিম খেলছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের টি-২০তে এবং টেস্ট ক্রিকেট দলে খেলছেন মাহমুদুল হাসান জয়। বতর্মানে মাহমুদুল হাসান জয় ওয়েস্টইন্ডিজের সাথে দেশের হয়ে খেলছেন। তিনি আরো বলেন, চাঁদপুরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে ক্রিকেটার বাছাই করে যদি তাদেরকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে তারাও প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবেন। আর জেলা ক্রীড়া সংস্থা যদি ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ক্রিকেট খেলার কর্মসূচি রাখে এবং নিয়মিত যদি খেলাধুলার আয়োজন করে তাহলে জেলা থেকে ক্রিকেটারসহ বিভিন্ন ক্রীড়া ইভেন্টের অনেক খেলোয়াড় সৃষ্টি হবে। তিনি নিয়মিত মাঠে খেলাধুলা চান। খেলার মাঠে যেনো তার এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেন সেজন্যে সকলের কাছে তিনি দোয়া ও সমর্থন চেয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়