শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ২৫ মে ২০২২, ০০:০০

অবক্ষয় দূর হোক মাঠের প্রাচুর্যে
অনলাইন ডেস্ক

মাদকাসক্তি ও ইভটিজিংয়ের করাল থাবা থেকে আগামী প্রজন্মকে বাঁচিয়ে রাখতে আমাদের খেলাধুলার চর্চা ও শারীরিক ব্যায়ামের কোনো বিকল্প নেই। মানসিক ও শারীরিক সামর্থ্যবান প্রজন্ম নির্মিত না হলে দেশ বিনির্মাণের প্রয়াস অরণ্যে রোদনের শামিল। তাই দেশজুড়ে পর্যাপ্ত খেলার মাঠের ব্যবস্থা করা অধিক জরুরি। শিশু মনোবিজ্ঞানী পেস্তালজিও বলেছেন, মাঠহীন বিদ্যালয়ের চেয়ে বিদ্যালয়হীন মাঠ শিশুর কাছে অধিক গুরুত্বপূর্ণ। চাঁদপুরের বিখ্যাত দার্শনিক ও সমাজবিজ্ঞানী শ্রী শ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেব তরুণদের মধ্যে স্বদেশপ্রেমের জাগরণ ও চরিত্রগঠনের জন্যে খেলাধুলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। এ কারণেই ১৯১৪ সালের ১ জানুয়ারি তাঁর প্রবর্তিত চরিত্রগঠন আন্দোলন নামে প্রজন্ম বিনির্মাণের কর্মসূচিতে খেলাধুলার অন্তর্ভুক্তি ছিলো। কিন্তু যতই দিন গড়াচ্ছে ততই আমাদের খেলার মাঠগুলো সঙ্কুচিত হয়ে আসছে এবং তদস্থলে গড়ে উঠছে শপিং মল ও বাণিজ্যিক বহুতল ভবন। এটা জাতির জন্যে এক ভয়াবহ অশনি সংকেত।

আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ যে, তাঁর হস্তক্ষেপে ঢাকা কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠটি রক্ষা করা গেছে এবং এতে শিশুদের খেলাধুলা করার অধিকার অটুট রাখা সম্ভব হয়েছে। আগামী প্রজন্মের বিনির্মাণে এ রকম হাজার হাজার মাঠ আমাদের সৃজন ও সংরক্ষণ করতে হবে এবং ভূমিদস্যুদের হাত থেকে খেলার মাঠগুলো উদ্ধার করতে হবে। আমাদের বাঙালি জাতির মহান পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর কৈশোরে ফুটবল খেলেই বেরিবেরি ও গ্লুকোমার আক্রমণকে পরাস্ত করে নিজেকে টিকিয়ে রেখেছিলেন স্বাস্থ্যের সংগ্রামে। আমাদের আউটডোর খেলার মাঠের পাশাপাশি ইনডোর কোর্টেরও ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা জানি, সব জায়গায় ফুটবল ও ক্রিকেট খেলার মাঠের ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। আমরা সে ক্ষেত্রে পাড়ায়-মহল্লায় ইনডোর বাস্কেটবল কোর্ট, ইনডোর ব্যাডমিন্টন কোর্ট, ইনডোর ভলিবল কোর্ট, ইনডোর লন টেনিস ও টেবিল টেনিস কোর্ট, জিমন্যাস্টিক্সের জন্যে জিমনেশিয়াম নির্মাণের জোর দাবি জানাই। বহুতল ভবনে একই সাথে এইসব ইনডোর গেমসের কোর্ট স্থাপন করে একদিকে যেমন স্থান সংকুলান করা যায়, তেমনি প্রজন্মকেও অবক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করা যায়।

তবে এ কথা না বললেই নয়, কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ আছে কিন্তু তা খেলাধুলার জন্যে নয়, বরং ছাত্র সমাবেশ ও বিভিন্ন সভা ও সৌন্দর্য বর্ধনের জন্যে। বিশেষ করে কলেজ সমূহে খেলার মাঠ থাকে মূল ভবন হতে কিছুটা দূরে, যেখানে ফুটবল, ক্রিকেটের মতো আউটডোর খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হতে পারে। কাজেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠগুলোও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরে হওয়া উচিত, যাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত খেলোয়াড়েরাও অংশ নিতে পারে অনায়াসে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহের সৌন্দর্য ও নিরাপত্তা বিঘিœত না হয়। স্থানীয়ভাবে চাঁদপুরে আউটার স্টেডিয়ামের বাইরে পুরাণবাজার মধুসূদন হরিসভা হাইস্কুল মাঠ, হাসান আলী হাইস্কুল মাঠ, বাবুরহাট কলেজ মাঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মূল কাঠামোর বাইরে হওয়ায় এলাকার কিশোর ও তরুণদের জন্যে তা খেলার মাঠ হিসেবে অবদান রাখতে পারছে। কিন্তু হাতে গোণা এই ক’টি মাঠ দিয়ে আমাদের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করা যাবে না। তাই খেলার মাঠ সৃজন ও বৃদ্ধি করার জন্যে আমাদের আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে।

একটা জাতির সবচেয়ে মূল্যবান বিনিয়োগ হলো শিশু-কিশোর আর সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হলো যুবসমাজ। এই দ্বিবিধ সম্পদের যথাযথ পরিচর্যায় পর্যাপ্ত খেলার মাঠ আজ আমাদের প্রাণের দাবি। একটা শপিং মল কম হোক, কিংবা একটা ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবারের দোকান না হোক, কোনো অবস্থাতেই যেন খেলার মাঠ দখল না হয়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়