বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৩, ০০:০০

বাবার নীরব প্রস্তান
সাহেদ বিন তাহের

তোমাদের মতো আমারও বাবা ছিলো

কত যে বাহানা করতাম বাবার কাছে!

কলম, কাগজ, পেন্সিল, স্কেল, জ্যামিতি

কিংবা আর্টবোর্ড কিনে দিতে হবে।

কখনো আবার পরীক্ষার ফি দিতে হবে

অথবা টিপিনের সময় খেতে হবে বলে

বাবার কাছ থেকে টাকা চেয়ে নিতাম

বাবা কখনো না করতেন না, তবে নিম্নবিত্ত হওয়াতে

বেশির ভাগ সময়ই বাবার কাছে টাকা থাকতো না।

আবার থাকলেও খুব কম থাকতো,

যে অর্থ দিয়ে হয়তো চাল কিনতে হবে, নয়তো ঘরের জন্যে বাজার করতে হবে।

কিংবা অন্যান্য কাজে লাগবে,

এভাবে কম টাকা হলেও খরচের হিসেবটা ছিলো বিশাল!

কারণ আমাদের পরিবার ছিলো সাতজনের

সবার চাহিদা মেটানো তো বাবার পক্ষে সম্ভব হতোই না

বরং রীতিমতো আমাদের খেয়ে-পড়ে বেঁচে থাকাটাই কষ্টকর ছিলো।

তবে বাবা সাধ্যের মধ্যে আমাদের কোনো সখ অপূর্ণ রাখেননি।

টাকার জন্য কত কষ্ট করতেন,

কত যে ত্যাগ-তীতিক্ষার পর টাকা রোজকার করতেন সেটা বোঝানোর সাধ্য নেই।

তবুও আমি ছিলাম একটু অন্য রকম কোনো কিছু আবদার করলে,

সেটা না পাওয়া পর্যন্ত চাইতেই থাকতাম।

কান্নাকাটি করে হলেও আমি আমার ইচ্ছা পূরণ করেই চারতাম।

একবার তো ঈদে পাঞ্জাবি কিনতে কত কী যে করলাম!

বাবার সাথে কাজ পর্যন্ত করতে গেলাম।

তবুও বাবা পাঞ্জাবি কিনে দিতে রাজি হয়নি।

আসলে আমার অসুস্থ বাবা এবং আমিসহ যে টাকা রোজকার করেছি

সে টাকা দিয়ে ঠিকমতো চিকিৎসার খরচই হবে না।

আমি শেষমেষ মায়ের কাছে গিয়ে মাটিতে গঠাগড়ি দিতে লাগলাম।

তখন মায়ের ঔষধের কথা বলে বাবার কাছ থেকে পাঞ্জাবি কিনার টাকা নিয়ে দিলেন।

সে বছরই আমি প্রথম পাঞ্জাবি কেনার সাধ পেয়েছিলাম।

কিনে আনার পর আমার কাছে পাঞ্জাবিটি আর ভালো লাগেনি,

তাই সেই ঈদে আমার গায়ে পাঞ্জাবি জড়ানোও হয়নি।

তার দুদিন পরই বাবা আমাদের ছেড়ে অন্য দেশে চলে যান

যেখান থেকে আর কখনো ফেরানো সম্ভব না।

বাবার টাকা দিয়ে কেনা আমার প্রথম পাঞ্জাবি এখন শুধুই কষ্টের সঙ্গী আর স্মৃতি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়