সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০:০০

সবুজ মাঠে প্রথম দেখা
জান্নাতুল নাঈম

সেদিন ছিলো ৩১ জানুয়ারি। ছেলেটার নাম আনাস। সে আমাকে খুব যে চেনা তা নয়। তবে যেই শহরে বাস করি সেখানে তার বসবাস। সে আমাকে বললো, আপনি আমার সাথে দেখা করে যাবেন। সে জানে আমি না করতে পারবো না। এই প্রস্তাবটা অকস্মাৎ। কোনো কারণ নেই। এমনকি প্রেমও নেই। আমি একবারের জন্যে না করিনি।

কারণ আমি জানতাম আমি তার কাছে নিরাপদ তাই দেখা করতে সংশয় করিনি। তবে তাকে যে আপন করে নিয়েছি তা-ও নয়। কিন্তু দেখা হওয়ার পর মনে হলো সে আমার পাশে থাকুক। কিন্তু প্রথম দেখা হবে বলে কথা। কিছু তো উপহার দেয়া যায়। কিন্তু কারো জিজ্ঞেস করা সম্ভব নয়। তাছাড়া অন্যের পছন্দ দিয়ে আমি আমার প্রথম যাত্রা শুরু করতে চাই না। আমি তাই ভেবে নিয়েছি তাকে একটা ডায়েরি আর সিগনেচার কলম দেবো। কেননা তার জীবনের সাথে স্বাক্ষর ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

আমি এর আগে কখনোই কাউকে এ রকম করে উপহার দিইনি। আর দেয়ার প্রশ্নই আসে না। সবার আগে গাড়ি থেকে নেমে আমি তাড়াহুড়ো করে ডায়েরি আর কলমটা কিনলাম।

যেখানে দেখা করবো সেখানে দাঁড়িয়ে তাকে একটা মেসেজ করলাম আপনি কোথায়?

সে বললো তুমি কোথায়?

তারপর একমিনিটে সে হাজির। আমাকে এসে নিলো। অবশেষে জানলাম সে নাস্তা করতে একটা হোটেলে যাবে এমন সময় আমার মেসেজ পেয়ে চলে আসছে। আমি বললাম খেয়ে আসতেন।

সে বললো তুমি কতোক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবে। তাই চলে আসছি। আমি তার ভেতর দায়িত্ববোধ খেয়াল করলাম। আমি তার পিছন পিছন হাঁটলাম। সে জিজ্ঞেস করলো কি খবর তোমার?

আমি বললাম ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন?

সে বললো আমিও ভালো আছি।

তারপর আমরা একটা সবুজ মাঠের পাশে বসলাম। সেখানে অক্সিজেনে ভরপুর। কি অদ্ভুত! সবুজ গাছগাছালী, ফুল, শাপলা ফুল, আকাশ, মুক্ত বাতাস সব কিছুই আমার হাতের নাগালে ছিলো।

যান্ত্রিক কোনো শব্দ আমাদের কথাকে ব্যাঘাত করেনি। আমরা মুক্তমণা পাখিদের মতোই কথা বলেছি।

তাকে দেখে আমার সমস্ত শরীর হিম হয়ে গেলো। হাত-পা কাঁপতে থাকলো। চোখে-মুখে লজ্জায় টইটুম্বুর কিন্তু আমার ভয়টা দূর হলো যখন তাকে নিরাপদ মনে হলো। সে আমাকে যতো কথা বলেছে সবগুলোই কথা আমাকে আশ্বাস দিয়েছে। সে ভালো ছেলে। প্রতিটা কথায় ভাজে একবিন্দু খারাপ কিছু ছিলো না। আমি তার হাতে উপহারটুকু তুলে দিলাম। সে ধন্যবাদ দিলো বটে। তারপর বললো এটা করা উচিত হয়নি। আমি তোমার বড় ইত্যাদি।

প্রথম দেখার স্মৃতিটাকে রোমান্থন করতে আমি খালি হাতে যেতে চাইনি।

অবশেষে সে আমাকে এক কাপ চায়ের প্রস্তাব দিলো। কিন্তু সে আর আমি চা খেলাম। নাহ সেখানে আড়ম্বরতা ছিলো না। সেখানে কোনো মোহ ছিলো না। আমরা চোখে ভয় ছাড়া তাকিয়ে চা পান করলাম। চা পানের ফাঁকে দু-একটা কথা বললাম। অবশেষে সে আমাকে বিদায় দিলো।

বিদায়ের সময় সে আমাকে সামনে আসতে বললো। আমি বললাম আপনি সামনে থাকেন আমি পিছনে থাকি। প্রথম দেখায় লজ্জায় আমি সামনেই হাঁটতে পারিনি।

এখন আমরা দুজনে আছি। আমরা চাই আমাদের দেখা হোক। সে প্রচ- ব্যস্ত। আমি তার এই ব্যস্ততায় ভেতর বাস্তবতায় থাকতে চাই। সেখানে হয়তো আমরা হুট খোলায় রিকশায় শাড়ি, পাঞ্জাবি পড়ে ঘুরবো না। নদীর তীরে সন্ধ্যাবেলায় হাঁটবো না।

শুধু একনজর দেখার জন্যে আমরা দুজনেই দেখা করতে চাই। তবে আমরা প্রেম চাই না। প্রেমের চেয়ে যা সুন্দর সেটা এখন আমাদের আছে। প্রেম একদিন শেষ হয়ে যায়, মোহ শেষ হয়ে যায়। আমাদের প্রেম এবং ভালোবাসা নেই। তবে আমরা এখন এক ভাবনায় ভাবিত। আমরা এখন অংশীদার।

এই তো আজ ফোনে বললাম, যদি কোনো কাজে আপনার অফিসের কাছে যাই তার সাথে দেখা করবো।

সে বললো ঠিক আছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়