প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
একজন বাঙালির কাছে একবার হেরে গিয়েছিলেন বিল গেটস। কি অবাক হচ্ছেন তো? কিন্তু এটাই ইতিহাস...। বিল গেটস এর বইকে পেছনে ফেলে আমাদের চট্টগ্রামের ছেলে সুবীর চৌধুরীর বই হয়েছিলো ইউরোপের এক নম্বর বাণিজ্যবিষয়ক বই।
‘নিউইয়র্ক টাইমস’ সুবীর চৌধুরীকে আখ্যা দিয়েছে ‘লিডিং কোয়ালিটি এক্সপার্ট’ আর ‘বিজনেস উইক’ দিয়েছে ‘দ্যা কোয়ালিটি প্রফেট’ বলে।
তিনি বিশ্বের ১ নম্বর বেস্টসেলিং লেখক, যার লেখার বিষয় ‘সিক্স সিগমা দর্শন’। ‘দ্যা থিংকারস ৫০’.. তাঁকে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চিন্তাবিদের তালিকায় স্থান দিয়েছে ৪ বার।
সুবীর চৌধুরী বড় বড় কোম্পানিগুলোকে কোয়ালিটি বা গুণগত উৎকর্ষ বাড়াতে পরামর্শ দেন। এতে কোম্পানিগুলোর ব্যয় সংকোচন হয়, সাথে মুনাফাও বাড়ে। পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্ট বা ব্যবস্থাপনা পরামর্শকদের একজন হলো সুবীর চৌধুরী। ফরচুন ১০০সহ পৃথিবীর বড় বড় কোম্পানিগুলো হুন্দাই, জেরক্স, কিয়া মোটরস, আমেরিকান এক্সেল, ক্যাটারপিলার, বোস, দায়িয়ূ, জেনারেল মোটরস, ফোর্ড তার গ্রাহক।
সুবীর চৌধুরী বাংলাদেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের ব্যবসা ও মানসিক উৎকর্ষতা বাড়াতে ৫টি পরামর্শ দিয়েছেন।
কাজকে ভালোবাসো : নিজের কাজকে এমনভাবে ভালোবাসতে হবে যেনো এর জন্যে জীবন দেয়া যায়। কাজের প্রতি অনুরাগ এমন এক জিনিস, হেরে গেলেও মানুষ থেমে যায় না। আবার উঠে দাঁড়ায়, যতোক্ষণ না লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়।
বড় স্বপ্ন দেখা : চোখের সামনে একটা বড় লক্ষ্য দাঁড় করাতে হবে, যেটা অর্জন করা কঠিন। তারপর সেটার পেছনে ছুটতে হবে। সুবীর চৌধুরীর দাদু তাকে বলতেন, তুমি ঘরের সিলিং নয় বরং আকাশ ধরার লক্ষ্য স্থির করো। তাই তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্যে সুবীরের পরামর্শÑছোট স্বপ্ন নিয়ে বড় কিছু পাওয়া যাবে না। স্বপ্ন বড় ছিলো বলেই সুবীর চৌধুরী খুব কম বয়সে ম্যানেজমেন্ট গুরু হতে পেরেছেন।
অন্যের বিষয়ে চিন্তা করো : ছোটবেলায় বাবা তাকে শিখিয়েছিলেন, চড়াই পার হওয়ার সময় রিকশা থেকে নেমে যেতে হবে, যাতে রিকশা চালকের কষ্ট না হয়। এই শিক্ষা সুবীবের জীবনটা গড়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, সফল হবার পূর্বশর্ত হচ্ছে, অন্যের সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনা করতে হবে।
চমকের আগে মৌলিক চাহিদা পূরণ : উৎকর্ষগুরু সুবীরের মতে, যে কোনো পণ্যের তিনটা কাজ থাকে, মৌলিক কাজ, কর্মদক্ষতা ও চমক। পণ্যকে চমক জাগানিয়া করার আগে সেটার মৌলিক কাজ নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, অনেক সময়ই দেখা যায়, হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার চেয়ে হাসপাতালের সাজগোজের দিকে বেশি জোর দেয়া হয়। এ ধরনের কৌশলে পণ্য দ্রুত গ্রহণযোগ্যতা হারায়।
প্রবীণ ও অভিজ্ঞদের সংযোগ তৈরি : সুবীর চৌধুরী সফল হওয়ার ব্রত নেয়ার পর বিশ্বের শীর্ষ ম্যানেজমেন্ট গুরুদের সাথে সংযোগ তৈরি করেন। ছোটবেলায় তিনি লেখক সুনীল দত্ত ও সত্যজিৎ রায়কে চিঠি লিখতেন। তিনি বলেন, বয়সের পার্থক্য সত্ত্বেও আমি তাঁদের সাথে বন্ধুত্ব করি। তাঁদের অভিজ্ঞতা ও প্রজ্ঞা সুবীর চৌধুরীর জীবনে প্রভাব ফেলে। তরুণদেরও কাজের ক্ষেত্রে বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিদের কাছাকাছি থাকার পরামর্শ দেন সুবীর চৌধুরী। তাঁদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা তরুণদের সমৃদ্ধ করবে।
কোয়ালিটি গুরু সুবীর চৌধুরীর এ পরামর্শগুলো উদ্যোক্তা হিসেবে আমাদেরও মেনে চলা উচিত নয় কি?