প্রকাশ : ০২ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০
মিশরে শেখ রাসেল দিবস উদযাপন
‘শেখ রাসেল দীপ্তিময়, নির্ভীক নির্মল দুর্জয়’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৬০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মিশরে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে উদযাপন করা হলো শেখ রাসেল দিবস ২০২৩। বুধবার, ১৮ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টায় রাজধানী কায়রোস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের হল রুমে উদযাপন করা হয় এই অনুষ্ঠান।
|আরো খবর
দেশটিতে বসবাসরত প্রবাসী, শিশু-কিশোর/কিশোরীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের শুভ জন্মদিন স্মরণে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতেই চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স মুহাম্মদ ইসমাইল হুসাইন দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
দ্বিতীয় সচিব শিশির কুমার সরকারের উপস্থাপনায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে নিহত শেখ রাসেলসহ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবার ও অন্য শহীদ সদস্যদের আত্মার শান্তি এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত এবং বিশেষ মোনাজাত করেন আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোঃ বায়জিদ মাহমুদ।
দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা থেকে পাঠানো রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনান যথাক্রমে দ্বিতীয় সচিব শিশির কুমার সরকার ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে শেখ রাসেলের ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করার পর দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যরা শেখ রাসেলের স্মৃতিচারণ করে দেশ ও জাতির ওপর বক্তব্য দেন।
শেখ রাসেলের জন্ম, শৈশব, শিক্ষা জীবন, পরিবার, পছন্দ, তার ওপর রচিত গ্রন্থ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কাটানো মুহূর্তসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর কুইজ প্রতিযোগিতাসহ নানান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে দূতাবাস। কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া বিজয়ী এবং অংশগ্রহণকারী শিশু-কিশোরদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন ও তাদের নিয়ে শেখ রাসেলের জন্মদিনের কেক কাটেন চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স।
সমাপনী বক্তব্যে চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স মুহাম্মদ ইসমাইল হুসাইন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে উপস্থিত মিশরে বসবাসরত প্রবাসীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শেখ রাসেলের ক্ষণস্থায়ী জীবনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, শিশুকাল থেকেই শেখ রাসেল ছিলেন নম্র-ভদ্র এবং আচরণে অত্যন্ত মার্জিত। শেখ রাসেল রাষ্ট্রপ্রধানের সন্তান হওয়া সত্ত্বেও সাধারণ পরিবারের সদস্যদের মতো জীবনযাপন করতেন।
তিনি আরো বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মানব ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞে, স্বাধীনতা বিরোধী ঘাতকের বুলেটে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে অন্য সবার সঙ্গে না ফেরার দেশে চলে যান শহিদ শেখ রাসেল। সেদিন বিশ্বের সব মায়া-মমতা হারিয়ে গিয়েছিলো, মানবতা হয়েছিলো নির্বাসিত-স্তব্ধ।
ইসমাইল হোসাইন বলেন, ক্ষমতা দখল কিংবা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্যে পৃথিবীর ইতিহাসে বহু দেশে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড, সেনা অভ্যুত্থান হয়েছে। কিন্তু অন্ত¡ঃসত্ত্বা নারী ও কোমলমতি শিশু রাসেলসহ পুরো পরিবারের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। তাই এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড শিশু অধিকার ও মানবাধিকারের চরম অবমাননার নিকৃষ্টতম উদাহরণ।
এ সময় চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স আরবী ভাষায় শেখ রাসেলের ওপর লেখা বই 'সেদিন তারা চাঁদ হত্যা করেছিল' লেখায় মিশরীয় লেখক মহসীন আরশীর প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। শেখ রাসেলের ওপর প্রকাশিত আরবি বই আরব বিশ্বসহ বিশ্ববাসীর নিকট শেখ রাসেল এবং তার পরিবার সম্পর্কে ধারণা সঞ্চারে সহায়তা করবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
সবশেষে আগত অতিথিদের বাঙালি খাবারে আপ্যায়ন করা হয়।