মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৫ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ২৪ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০

এক্সক্লুসিভ ফুটেজ
অনলাইন ডেস্ক

কারো মাথা ফেটে গেছে। কারো হাত লড়বড় করছে। পা ভেঙ্গে কাতরাচ্ছে কেউ কেউ। অনেকে মরে চিৎ হয়ে আছে। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন গাধা খাটুনি খেটে যাচ্ছে। একটা মানুষকে যদি বাঁচানো যায়। কিছু মানুষ সেলফি তুলছে। কেউ কেউ মানুষের আহাজারি ভিডিও করছে। দারুণ সময় পড়েছে এখন। সবাই সেলিব্রেটি হতে চায়। ফেসবুক লাইভ। মেথর পট্টি থেকে বায়ান্ন তলার ছাদ পর্যন্ত। কেউ টিকটক বানায়। অবশ্য সবই সময়ের চাওয়া।

মহিমের কোনো ভাবেই এমন একটা ঘটনায় সশরীরে থাকার সুযোগ হয়ে উঠছিলো না। মানুষ জীবনে একটি কাজ করেই আজীবন বেঁচে থাকতে পারে। সাংবাদিকতা জীবনে একটা এক্সক্লুসিভ ফুটেজের জন্যে কতো যে চেষ্টা করেছে সে। আর এমন একটা সুযোগ লুফে নিতে পারলে স্মরণীয় হতে সহজ হয়। অল্প পরিমাণে কাজ করে নিজেকে তুলে ধরতে পারা পরম সৌভাগ্যের। অবশ্য এ সময়ে এসে তা আরো সহজ করে দিয়েছে সোস্যাল মিডিয়া। এখন যে কোনো ঘটনা মানুষের সামনে উঠে আসে খুব সহজেই। নিজের প্রতিভা তুলে ধরার সহজ উপায় এখন ফেসবুক, ইউটিউব। অনেকেই ইতোমধ্যে সফলও হয়েছেন বটে।

মুঠোফোনের রিংটোন বেজেই চলেছে। একবার অফিস থেকে আবার পরিবারের কল। সবার আগে অফিসের কলটাই ধরা প্রয়োজন। মহিম ফোনটা রিসিভ করে। অফিস কী বলবে সে সব জানে। মূলত এমন ঘটনায় দেশে তোলপাড় শুরু হয়েছে। কেউ বলছে, অদক্ষ চালকের দোষ, কেউ বলছে রাস্তা তেরছা, আবার কেউ কেউ বলছে বেপরোয়া গতি। মহিম ভাবে ফুটেজ পাঠাতে হবে। লাইভ দিতে হবে। অফিসের বসেরা কি বলবে, মহিম সব জানলেও তার কথা ফোনের ও প্রান্ত থেকে কিছু বুঝতে পারছে না মানুষের হাউকাউ শব্দে। অবশ্য অফিস থেকে দেখছে যে কলটা রিসিভ হচ্ছে না। মহিম প্রতিউত্তরে যা বলে তা আর ও প্রান্ত পর্যন্ত পৌঁছায় না। মহিম ভাবে, অফিসের সব বধির হয়ে গেলো নাকি? আমি তাদের সব কথা শুনি। তারা আমার কথা শুনে না? কী আজব! মোটরবাইকের পেছনে বসে মহিম মোবাইলে ভিডিও করছিলো। রাস্তার দু পাশে সারি সারি গাছ। বাইকের দ্রুত গতিতে তীব্র বাতাস। হাতে যেন মোবাইল ধরে রাখা যায় না। হঠাৎ একটা বিকট শব্দে কখন হাত থেকে মোবাইল ছিটকে গেছে টের পায়নি মহিম।

অফিস বিরক্ত হচ্ছে। খুব বিরক্ত। এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কল না ধরা অবশ্যই বিরক্তির। এমন জরুরি সময়ে কল না ধরলে মেজাজ ঠিক থাকে না। অবশ্য উপরের পদে অধিষ্ঠিত সহকর্মীরা কোনো সমস্যাই বুঝতে চান না। তারা তাদের কাজ আদায় করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এতো বড় ঘটনা অথচ মহিম কল ধরছে না। এটা কোনো কথা হলো? অফিসের বার্তা বিভাগ মিটিং ডাকে। আজই প্রতিনিধির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। অফিসের এইচ আর বিভাগ থেকে মহিমের বিরুদ্ধে শোকজ প্রস্তুত করে। সে সবসময় এমন কাণ্ডই ঘটায়। অথচ মহিম চৌষট্টি জেলার মধ্যে খুব সরব প্রতিনিধি। সারা দেশে দশজনকে বাচাই করলে তার নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কথা। ইতোমধ্যে কয়েকবার মহিম মাসের সেরা প্রতিবেদকও নির্বাচিত হয়েছে।

মহিম উঠে দাঁড়ায়। কাঁধ থেকে ব্যাগটা নিয়ে হেন্ডিক্যাম হাতে নেয়। মানুষের আহজারি আর আর্ত চিৎকারের দারুণ ভিডিও। এমন এক্সক্লুসিভ ভিডিও আর কোনো মিডিয়া কাভার করতে পারবে না। তাছাড়া মোবাইলে এক্সক্লুসিভ ফুটেজ তো আছেই। যদি না কাউকে ধার দিতে হয়। মহিম বিভিন্ন এঙ্গেলে আরো ভিডিও রেকর্ড করে। এবার বাসার দিকে হাঁটতে শুরু করে মহিম। আজ সবকিছু নিজের মতো হয়ে যাচ্ছে। এখন আর কোনো সহকর্মী কল করছে না । ফোনটাও বাজছে না। যদিও মগজে একই রিংটোন বাজতেই থাকে। অনেক সময় রাতের বেলায় ঘুমঘোরেও ফোনে কথা বলে সে। তখন পাশে ঘুমানো স্ত্রীও রেগে যায়। গত চার বছর একই সেট। স্যামসং জে সেভেন। এই রিংটোন প্রথম থেকে আজো সেট করা। মোবাইলও পাল্টায়নি রিংটোনও পাল্টানো হয়নি। অফিসে মহিম যখন কথা বলছিলো তখন আহত মানুষের আর্তচিৎকার নিশ্চয় শুনতে পেয়েছে। কিন্তু হঠাৎ মহিমের ভাবনায় এলো, সে বাসায় যাচ্ছে কেন? আজতো একটা স্টোরি করতে ফটিয়াদী যাবার কথা। অবশ্য ওই নিউজের চেয়ে চলমান ঘটনার নিউজের ডিমান্ড বেশি।

কয়েকমাস আগে নাইনটি টেলিভিশনের প্রতিনিধি সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন। যদিও ভুল তথ্যের কারণে ওই টিভি স্টেশন স্ক্রল দিয়েছিলো সড়ক দুর্ঘটনায় আমাদের প্রতিনিধিসহ দুজন নিহত। ওই সময়ে সহকর্মীর জন্যে সমবেদনা না জানিয়ে কিনারা টিভির প্রতিনিধি বলাবলি শুরু করেছে, নাইনটি টিভি তাকে নিউজ পাঠাতে বলেছে। অর্থাৎ তিনি কিনারা টিভিতে কাজ করতে চান না। একটা ভালো মানের টিভিতে কাজ করতে তুমুল আগ্রহী। এ সুযোগে তিনি এমন তথ্য অন্য সহকর্মীদের কাছে প্রচার শুরু করলেন। অথচ ভাগ্যগুণে ওই প্রতিনিধি বেঁচে যান। অবশ্য অন্তত চারমাস তিনি চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন।

মহিমের সঙ্গে মোটারসাইকেলে আরো দুই সহকর্মী ছিলো। তাদের খুঁজতে শুরু করে। কিন্তু আশপাশে আর কাউকে পাওয়া গেলো না। পুলিশ এসেছে, আরো অনেক সাংবাদিক এসেছে ততোক্ষণে। সবাই কাজ করছে, কিন্তু মহিমের কাছে যে ফুটেজ রয়েছে তা দুর্লভ। যা আর কেউ পায়নি।

অবশ্য জীবনে এই প্রথম এমন হলো, ছয় সাতজন সহকর্মী ঘটনাস্থলে এসেছে। আসারই কথা। দেশে এ মুর্হূতে সবচেয়ে বড় ঘটনা এটি। কেউ মহিমের সাথে কথা বললো না। মহিম অবাক হয়। জেলা শহরে এমন কোনো সাংবাদিক নেই যাদের মহিম সহযোগিতা করেনি। জেলা শহরে টিভি সাংবাদিকতা করতে হলে একে অপরের সহযোগী হয়ে কাজ করতে হয়। না হয় খুব প্রয়োজনের সময় স্টেশনকে বুঝ দেয়া জটিল হয়ে দাঁড়ায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে মহিমের স্ত্রী ও অবুঝ সন্তান। সবাই মহিমকে খুঁজছে। কিন্তু কেন? মহিম ভাবে, আমিতো ঠিকই আছি। শুধুমাত্র বুকে একটু ব্যথা পেয়েছি। স্ত্রীর কাছে গিয়ে মহিম বলে, দেখো আমার শরীরের কোথাও কোনো জখমের চিহ্নমাত্র নেই। তবে তোমরা কেন এখানে ছুটে এসেছ? চলো চলো বাসায় চলো। আমি এক্সক্লুসিভ ফুটেজ পেয়েছি। আজ সাথে করে ল্যাপটপও আনা হয়নি। আনলে এখানে বসেই কাজ করা যেতো। কিন্ত কপাল মন্দ। প্রকৃত পক্ষে মানুষ কোনো ভাবেই স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারে না। কোনো না কোনো ঘাটতি থেকেই যায়। এটাই প্রকৃতির অমোঘ নিয়ম।

ফুটেজ দ্রুত কেটে অফিসে পাঠাতে হবে। কিন্তু আমার কোনো কথাই শুনছে না প্রিয় স্ত্রী-সন্তানরা। ওর সাথে আমার হাজার হাজার স্মৃতি রয়েছে। বিস্মৃতিও কম নেই। মাঝে মাঝেই দুজন ঝগড়ায় মেতে উঠতাম। বউ আমার সাথে খুব অভিমান করে। পরিবারকে সময় দিতে পারি না বলে অভিমান আরো চাঙ্গা হয়। রাগ করে। কথা বলে না। অবশ্য মাঝে মাঝে আমার কটু কথায়ও রাগ করে। কিন্তু আমি একটা বোকা মানুষ। বউয়ের রাগ বুঝতে পারি না। অবশ্য বউ বিষয়টি বুঝতে অনেক সময় নিয়েছে। তাকে বুঝতে পারার অক্ষমতা এতো দিনে মাফ করতে শিখে গেছে। তাই এখন আর রাগ করে না। গত দশ বছরে আমি সাংবাদিক হিসেবে মানিয়ে নিয়েছে। ও আমাকে বুঝতে শিখেছে। গভীর রাত করে বাড়ি ফেরা মেনে নিয়েছে। এখন আমাদের দারুণ বোঝাপড়া।

অফিস থেকে কল আসছে। কল রিসিভ হচ্ছে। অথচ অফিস আমার কোনো কথা শুনছে না। কী অবাক কাণ্ড। এভাবে একটা যাত্রীবাহী বাস আমাদের চাপা দিয়ে জলভর্তি খালে পড়ে যাবে? এটা কেমন কথা? এ ঘটনায় অন্তত তেরজন মারা গেছে। এ মুহূর্তে দেশের সবচে' বড় খবর। তিনজন সাংবাদিক মারা গেছে। তাই নিউজের গুরুত্ব অনেক বেড়ে গেছে। কিন্তু তারা তিনজন সাংবাদিক পেলো কোথায়? আমিতো ঠিকই আছি। হয়তো বাসে কোনো সাংবাদিক ছিলো, ভাবে মহিম। তিনজন থাকলেও সাথে থাকা অপর দুজনকে এখনো খুঁজে পায় না সে। মহিম ভাবে, আমি যদি মোটারসাইকেল চালাতাম, হয়তো এভাবে ওদের মরতে হতো না। স্ত্রীকে এখানে কান্নাকাটি না করে বাসায় যেতে বলি। চলো। চলো। দ্রুত বাসায় চলো কাজ করতে হবে। অফিস থেকে বারবার ফোন দিচ্ছে। রিংটোন কেউ না শুনলেও মহিমের কান যেন ঝালাপালা করে দিচ্ছে। কিন্তু আমার বউ এতো কান্নাকাটি করছে কেন? আমিতো তার পাশেই দাঁড়ানো। তবে কেনো এতো মায়া কান্না। অন্য যারা মারা গেছে তারাতো তার কেউ না। আত্মীয় স্বজনতো কেউ নেই। আল্লাহ আমাকে রক্ষা করেছে এ শোকরিয়া থেকে তার বাড়ি যাওয়া উচিত। কিন্তু না, বউ আমার কোনো কথাই যেন শুনছে না।

মহিমের স্ত্রী মনিরা দুই সন্তানকে বুকে আগলে ধরে চিৎকার করছে। আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠে। এভাবে চলে গেলে বলে চিৎকার করছে। আমাকে যেন সে চোখেই দেখে না। ইতোমধ্যে আমার মোবাইলে অনেক কল। মা-বাবা ভাই-বোন সবাই ফোন করছে। কর্ম জীবনের অনেক প্রিয় মানুষগুলো ছুটে আসছে। কী দারুণ বিষয়। এতোক্ষণে তারা বুঝে গেছে আমার কাছে এক্সক্লুসিভ ফুটেজ আছে। কিন্তু তারাতো আমার কাছে কিছু চাচ্ছে না।

ঘটনার পরপরই মহিম ফেসবুক টিকার গ্রুপ ম্যাসেঞ্জারে লিখে দিয়েছে ‘ঢাকা-কিশোরগঞ্জ সড়কের পিরোজপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই সাংবাদিকসহ মারা গেছেন ১২জন’। কিন্তু না। আরো একজন সাংবাদিক আছে বিষয়টি নিশ্চিত হতে টিকার মোবাইল থেকে কল করা হচ্ছে।

মহিমের টিভিতে যিনি স্ক্রলের প্রধান তিনি খুব অভিজ্ঞ মানুষ। নাম জাকারিয়া রেজা। মাঝে মাঝেই ফোন করে বিভিন্ন জ্ঞান বিতরণ করেন। যদিও তিনি প্রথমেই বলে দেন, আমার নিজেরও ভুল হয়। তারপরেও যতটুকু সম্ভব ভুল যেন কম হয় সে যত্নটুকু করার পরামর্শ দেন।

লাইভ থেকে ফোন আসছে। স্কাইপ না এলইউ সফটওয়ারে লাইভ দিবো জানতে চায়। আমি বলি কিন্তু তারা শোনে না। ঘন্টাখানেকের মধ্যে এক মহাসমাবেশ তৈরি হয়েছে এখানে। কিন্তু এখানে কেউ ভাষণ দেবেন না। সবাই অশ্রু বিসর্জন দিতে এসেছেন। অবশ্য কেউ কেউ ইচ্ছে মতো সেলফি তুলছেন। এমন সুযোগ আর পাবে কিনা সন্দেহ। একবার মেঘনা নদীর গজারিয়া এলাকায় একটি যাত্রীবাহী লঞ্চ ডুবে ছিলো। লঞ্চ ডোবার সে ভিডিও একজন মোবাইলে রেকর্ড করেছিলেন। সেই ভিডিও সব টিভি অনএয়ার করেছিলো। ভিডিওটা এখনো ইউটিউবে পাওয়া যায়। কোনো কোনো টিভির নিউজ আজো ইউটিউবে ভাসে।

জেলার বড় বড় কর্তাব্যক্তিরাও ছুটে এসেছেন ঘটনাস্থলে। জেলা প্রশাসক প্রত্যেক পরিবারকে দাফন কাফনের জন্যে পঞ্চাশ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান দিয়েছেন। দুর্ঘটনার কারণ জানতে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত টিম গঠন করেছেন। সবাই মহিমকেও মৃতের তালিকায় রেখেছে। কিন্তু এটা কোন্ ধরণের কথা? মহিম ভাবে, আমি ভালো আছি, তারা আমায় মৃত ভেবে বসে আছে কেন? বউ বাচ্চাতো কেঁদে কেঁদে হয়রান। যেন আমি মরে গেছি।

এতো বড় খবর। অথচ মহিমের টিভি সেন্টার এক্সক্লুসিভ কিছু প্রচার করতে পারছে না। বার্তা সম্পাদক থেকে শুরু করে উপরের শীর্ষ পর্যায়ের সব বসেরা ক্ষুব্ধ হয়। কেউ কেউ গালি দেয়। এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ নিউজ কাভার করতে প্রতিনিধিকে ফোনে পাচ্ছি না। তার চাকুরিটাই থাকা উচিত নয়। এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন মানুষ ক'জন আছে? এখানের এক সাংবাদিকের সাথে মহিমের অফিসের এক শীর্ষ পর্যায়ের বসের সাথে ভালো সম্পর্ক। তার সাথে কথা বলে জানতে পেরেছে তাদের প্রতিনিধি সড়ক দুর্ঘনটায় নিহত হয়েছেন। তারপরেও ন্যাশনাল ডেস্কের প্রধান বারবার মহিমের নম্বরে ফোন দিচ্ছেন। তিনি মহিমকে খুব ভালোবাসেন। তার গুছানো কাজ ও সিনসিয়ারিটিতে তিনি মুগ্ধ। কিন্তু আজ কেন এমন হলো? নিজেকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না তিনি। এক পর্যায়ে মহিমের স্ত্রী মনিরার নম্বর সংগ্রহ করে ফোন করেন। মনিরা ফোন রিসভি করলেও কান্নার কারণে কিছু বলতে পারছিলো না। কর্তৃপক্ষের মনে আর কোনো সন্দেহের বিন্দুমাত্র রেশ রইলো না। বিষয়টি নিশ্চিত হতেই ‘ব্রেকিং নিউজ : মোটরসাইকেল ও বাস দুর্ঘটনায় কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিসহ নিহত ১৩।। জেপি টিভি পরিবারের শোক।'

এমন খবরে জেলার সাংবাদিক পাড়ায় তোড়জোড় শুরু হয়েছে। কে কার আগে নিউজ পাঠাবে। এখন তিনটি চ্যানেলের প্রতিনিধি পদ খালি হয়েছে। শুধু চাকুরিটা দরকার। যে কোনো বিনিময়ে টিভির প্রতিনিধিত্ব পেতেই হবে। কেউ কেউ স্থানীয় এমপির ডিও লেটার নেয়ার চিন্তা করে। তদবির। কার কতো পাওয়ারফুল লোক আছে তার সাথে যোগাযোগ শুরু করে। অথচ গতকালও এদের অনেকের সাথেই দেখা হয়েছে কথা হয়েছে মহিমের। চা খেতে খেতে কতো আড্ডা...

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়