প্রকাশ : ২৩ মে ২০২৪, ০০:০০
দেশীয় ফলের দাম এতো বেশি!
অপরিপক্ক আম-লিচুতে সয়লাব ফলের বাজার
মৌসুমের শুরুতেই বাজার দখল করেছে আম ও লিচু। বাজারে ফজলি, ল্যাংড়া, খিরসাপাত, অরুনা, আম্রপালিসহ পরিচিত নানা প্রজাতির আম না থাকলেও মৌসুমের শুরুতেই মিলছে হিমসাগর, গোপালভোগ, গোবিন্দভোগ, বারিফল এবং কাঠিমনসহ কয়েক প্রজাতির আম। পাশাপাশি উচ্চদামে বিক্রি হচ্ছে থাইল্যান্ডের জাম্বু আম ও কয়েক প্রজাতির লিচুও। তবে দেশীয় আমের দামও আকাশছোঁয়া। প্রতি কেজি দেশীয় প্রজাতির আম বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজিতে।
অপরদিকে প্রতি একশ পিচ লিচু বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ১৫শ’ টাকায়। তবে বাজারে এমন চড়া দামে ফল কিনতে একদিকে যেমন ক্রেতারা হিমশিম খাচ্ছেন, তেমনি নির্ধারিত সময়ের আগেই এসব ফল বাজারে আসায় স্বাদ নিয়েও রয়েছে অভিযোগ।
২১ মে মঙ্গলবার চাঁদপুর শহরের চৌধুরী ঘাট, বাবুরহাট এবং এর আশেপাশের ফলের বাজার ঘুরে এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে এমন চিত্র দেখা গেছে।
ক্রেতারা বলছেন, দাম কমলে মানুষ বেশি করে ফল কিনতে পারবে। সবার খাওয়ার চাহিদাও বাড়বে। অন্যসব বছরের তুলনায় লিচুর দাম অনেক বেশি। আমের দামও অনেক বেশি। বিক্রেতারা বলছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফলন কমেছে রসালো ফল আম ও লিচুর। ফলে সঙ্গত কারণে একদিকে যেমন বাজারে আম এবং লিচুর সংকট তৈরি হবে তেমনি বিক্রিও হবে চড়া দামে। তবে মৌসুম পুরোপুরি শুরু হওয়ার পর দাম অপেক্ষাকৃত কমবে বলেও দাবি বিক্রেতাদের।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে মৌসুমের শুরুতেই ৬ থেকে ৭ প্রজাতির আম পাওয়া যাচ্ছে। এসব আমের মধ্যে হিমসাগর প্রতি কেজি ২০০ টাকা, গোপালভোগ প্রতি কেজি ২০০ টাকা, গোবিন্দভোগ প্রতি কেজি ১৮০ টাকা, বারিফল প্রতি কেজি ৩০০ টাকা, কাঠিমন প্রতি কেজি ২০০ টাকা, সাতক্ষীরার গোপালভোগ প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা, থাইল্যান্ডের জাম্বু আম (সবুজ প্রজাতি) প্রতি কেজি ১ হাজার টাকা এবং থাইল্যান্ডের জাম্বু আম (লাল প্রজাতি) ১২শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে বাজারে প্রতি একশ পিচ বোম্বাই লিচু ৫০০ টাকা, প্রতি একশ পিচ কদমি লিচু ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, চায়না লিচু প্রতি একশ’ পিচ ১৪শ’ টাকা, বেলোয়ারি লিচু প্রতি একশ’ পিচ ৮০০ টাকা এবং হাওয়াই মিঠাই প্রজাতির একশ পিচ লিচু ১৫শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
২৫ বছর ধরে ফলের ব্যবসা করছেন মোঃ সোহেল মিজি। কৃষিকণ্ঠের সাথে কথা হলে তিনি জানান, এ বছর ফলের দাম ভীষণ চড়া। যেসব ফল ১০০ টাকা কেজিতে গত বছর বিক্রি হয়েছে সে ফল পেতেই এ বছর গুণতে হবে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। প্রাকৃতিক দুর্যোগে এ বছর ফলের ফলন কম বলেও দাবি করেন এ ব্যবসায়ী। তবে ভরপুর মৌসুমে ফলের দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালেই থাকবে বলে মনে করেন এ ফল ব্যবসায়ী।
কোর্ট স্টেশনের লতিফ মাতাব্বর নামের লিচু ব্যবসায়ী বলেন, এ বছর লিচুর দাম বেশি। পাইকারি বাজারে অতিরিক্ত দামে লিচু কিনতে হচ্ছে বলেই বেশি দামে বিক্রি করা লাগছে। সাধারণ ৩০০ টাকায় একশ’ পিচ লিচু বিক্রি যৌক্তিক থাকলেও তা দাম বেড়ে ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা বিক্রি করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে বিক্রেতাদেরও।
ফল কিনতে আসা মোঃ বিল্লাল হোসেন বলেন, বাজারে ফলের দাম প্রচুর। বিদেশি ফলের চেয়ে দেশি ফলের দাম আরও বেশি। আঙুর বা আপেল ৩শ টাকায় পাওয়া গেলেও লিচু বা আম এ দামে মিলছে না। ১০০ পিচ লিচু কিনতে গেলে পকেটের ১ হাজার টাকা নেই। এভাবে তো আর খেয়ে পারা যায় না। দেশের অবস্থা এমন যে, আমরা দেশীয় ফলও কিনে খাবার সামর্থ্য হারাচ্ছি।
তোফায়েল আহমেদ নামের আরেক ক্রেতা বলেন, সবকিছুতেই দাম বেশি। তবে ফলের বাজারে দামের আগুন আরেকটু বেশি। এক কেজি আম যদি ৩০০ টাকায় কিনতে হয় তাহলে যার দৈনিক আয় ৪০০ টাকা সে কী করবে? কীভাবে খাবে? দেশীয় ফলের দাম এতো বেশি হওয়া একদম উচিত নয়।