বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ২৬ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০

বিতর্কে জেতার টার্নিংপয়েন্ট
রাসেল হাসান

বিতর্ক নিয়ে আলোচনার আগে ‘তর্ক’ আর ‘বিতর্ক’ শব্দ দুটির মধ্যে পার্থক্য বোঝাটা জরুরি। প্রতিপক্ষ ‘সাদা’ বললে আমি ‘কালো’ বলবো, প্রতিপক্ষ ‘দিন’ বললে আমি ‘রাত’ বলবো, এ ধরনের মানসিকতা নিয়ে তর্ক করা যায়, বিতর্ক নয়। বিতর্কের বিরোধিতা হওয়া উচিত ইতিবাচক। নেতিবাচক বিরোধিতা করে বিতর্ক হয়তো চালিয়ে নেয়া যায়, কিন্তু সে বিতর্কে জয়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ। যখন মানুষ তর্কে জড়ায় তখন প্রতিপক্ষের কথার আপাদমস্তক বিরোধিতা করে নিজের মত প্রতিষ্ঠা করার পূর্ণ চেষ্টা চালায়। যখন তাতেও ব্যর্থ হয় তখনই কথার সাথে রাগ আর ক্ষোভ যুক্ত হয়ে ঝগড়ায় রূপ নেয়। কিন্তু বিতর্ক তা নয়। বিতর্ক সবসময়ই প্রতিপক্ষের মতকে সম্মান করে। মতের বড় একটি অংশ সমর্থনও করে। শুধু যে অংশ সমর্থন করে না, ‘কেন তা সমর্থন করছে না’ তার পেছনে যুক্তি দেখায়। অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সুস্পষ্ট বাচনভঙ্গি ও প্রমিত উচ্চারণের মাধ্যমে যৌক্তিক তত্ত্ব ও তথ্য দিয়ে নিজের মতকে ইতিবাচকভাবে প্রতিষ্ঠা করার নামই বিতর্ক।

এবার আসি সনাতনী ধারার বিতর্কে কীভাবে জেতা যায় সে আলোচনায়। কোনো যোদ্ধা যুদ্ধ করতে হলে যেমন তাকে অস্ত্র চালানো জানতে হয়, বিচক্ষণতার সাথে কূটনৈতিক চাল চালতে হয়, ভয়কে জয় করতে হয়, তেমনি বিতর্ক করতে হলে একজন বিতার্কিকের প্রমিত উচ্চারণ, সুস্পষ্ট বাচনভঙ্গি, ভয়কে জয় করার গুণ থাকাটা অতি স্বাভাবিক। এই তিনটি গুণ বিতর্ক জয়ের জন্যে সহায়ক বটে, তবে তা জয় নিশ্চিত করতে পারে না। বিতর্ক জয়ের টার্নিংপয়েন্ট হলো একটি আদর্শ বিরোধিতার স্ট্যান্ড। বিতর্কের বিষয়ের কোন্ অংশের বিরোধিতা করবো সেই সিদ্ধান্তটি একটি বড় সিদ্ধান্ত। বিরোধিতা পুরো বাক্যের করাটা বোকামি। বিরোধিতা হতে পারে কোনো বাক্যাংশের, হতে পারে কোনো শব্দের কিংবা কোনো বর্ণের।

আমার দেখা যতগুলো টান টান উত্তেজনাপূর্ণ বিতর্ক ছিলো, প্রতিটি বিতর্কে বিপক্ষ দলের বিরোধিতার জায়গাটি ছিলো ছোট্ট একটি বাক্যাংশের বা প্রত্যয়ের। বিতর্কের বিরোধিতার চমৎকার একটি সূত্র রয়েছে। সূত্রটি হলো, ‘আগে মত, পরে দ্বিমত’। নিজে বিতর্ক বিষয়ের যে অংশের সাথে একমত, তা প্রকাশ করুন। বাকি ছোট্ট যে অংশের সাথে একমত পোষণ করতে পারছেন না তার দ্বিমত জানিয়ে, দ্বিমত হওয়ার যুক্তি তুলে প্রতিপক্ষকে দেখিয়ে দিয়ে যান যে তাদের মতের চেয়ে আপনাদের মতটি সুন্দর ও যৌক্তিক।

ধরা যাক, একটি বিতর্কের বিষয় ‘অর্থ নয়, প্রেরণাই সাফল্যের চাবিকাঠি’। এ বিষয়ের পক্ষ দল তাদের বক্তব্যকে দুটি ভাগে ভাগ করবেন। প্রথম ভাগে তারা প্রমাণ করার চেষ্টা করবেন, অর্থ কখনোই সাফল্যের চাবিকাঠি হতে পারে না এবং দ্বিতীয় ভাগে প্রমাণ করবেন, প্রেরণাই সাফল্যের চাবিকাঠি। বিপক্ষ দল যদি হেড টু হেড বিরোধিতার চিন্তা করেন, তবে তাদের স্ট্যান্ড হবে ঠিক বাক্যটির উল্টো কথা। অর্থাৎ প্রেরণা নয়, অর্থই সাফল্যের চাবিকাঠি। এ ধরনের বিতর্কের স্ট্যান্ড দিয়ে জয় তোলাটা কষ্টসাধ্য কাজ এবং এ ধরনের উল্টো বাক্য বিরোধিতা করা মানে পক্ষ দলকে কথা বলার সুযোগ তৈরি করে দেয়া। তাই বিতর্কটির বিরোধিতার স্ট্যান্ড হতে পারে, অর্থ নয়, পরিশ্রমই সাফল্যের চাবিকাঠি। এ ধরনের বিরোধিতায় বিষয়ের ১ম অংশের সাথে বিপক্ষ দলও একমত যে ‘অর্থ কখনো সাফল্যের চাবিকাঠি হতে পারে না’। শুধু বিরোধিতার জায়গাটি হলো ‘প্রেরণা’ শব্দে। প্রেরণা মানুষকে উদ্দীপ্ত করে, সামনে এগিয়ে চলার সাহস জোগায়, কিন্তু পরিশ্রমের মাধ্যমে মানুষ বাস্তবিকভাবে এগিয়ে যায়। এই যে বিতর্কের বিষয়ের বাইরের একটি নতুন শব্দ ‘পরিশ্রম’কে প্রতিস্থাপিত করেও বিরোধিতা করা যায়, তা নবাগত বিতার্কিকদের অনেকেরই অজানা।

ধরা যাক, আরেকটি বিতর্কের বিষয়, ‘আইনের কঠোর প্রয়োগই পারে দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে’। এই বিষয়ের বিপক্ষ দল যদি সরাসরি বিরোধিতা করতে গিয়ে বলে ফেলেন, ‘আইনের কঠোর প্রয়োগ দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে পারে না।’ তবে তা দুর্বল বিরোধিতার স্ট্যান্ড হবে। এ বিষয়টির বিরোধিতা হতে পারে ছোট্ট ‘ই’ প্রত্যয়ে কিংবা ‘প্রতিরোধ’ শব্দটিতে। ‘ই’ প্রত্যয়ের বিরোধিতা করলে বলা হয়, শুধুমাত্র আইনের কঠোর প্রয়োগই দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে পারে না, এর সাথে আরো কিছু প্রপঞ্চ প্রয়োজন। তা হতে পারে নৈতিকতা, হতে পারে মূল্যবোধ কিংবা দেশপ্রেম। অর্থাৎ কারো মধ্যে নৈতিকতা, মূল্যবোধ, দেশপ্রেম না থাকলে শুধুমাত্র আইনের কঠোর প্রয়োগ দিয়ে দুর্নীতিকে প্রতিরোধ করা অসম্ভব। শুধুমাত্র ছোট্ট ‘ই’ প্রত্যয়ের বিরোধিতা করায় বিতর্কটিতে পক্ষ দলের বক্তব্যকে অস্বীকার করা হয় না। তাদের বক্তব্যের অখণ্ডনীয় যুক্তিগুলোর সাথে সহমত পোষণ করে বলা যায়, আমরা তো একবারও বলিনি আইনের কঠোর প্রয়োগ প্রয়োজন নেই। আমরা বলছি, আইনের কঠোর প্রয়োগও লাগবে আবার তার সাথে দেশপ্রেম, মূল্যবোধ, নৈতিকতাও লাগবে।

আবার একই বিতর্ক বিষয়ের ‘প্রতিরোধ’ শব্দটি নিয়েও বিরোধিতার নতুন জাল তৈরি করা যায়। তখন ‘প্রতিরোধ’ শব্দের স্থানে নতুন একটি শব্দ ‘প্রতিকার’ নিয়ে আসা যায়। অর্থাৎ আইনের কঠোর প্রয়োগই দুর্নীতি প্রতিকার করতে পারে, প্রতিরোধ নয়। কারো রোগ হলো ঔষধ খেলো রোগ ভালো হয়ে গেলো এটি প্রতিকার। আর কারো যেনো রোগটি ভবিষ্যতে না হয় এজন্যে আগাম টিকা নিলো সেটি প্রতিরোধ। তদ্রƒপ ‘পুলিশের ডাণ্ডা সব করে দিবে ঠাণ্ডা’ বাক্যটির মতো যতক্ষণ আইনের কঠোর প্রয়োগ আছে ততক্ষণ দুর্নীতিকে দমিয়ে রাখা সম্ভব, এটি প্রতিকার। আর ভবিষ্যতে কখনোই এ দেশে দুর্নীতি হবে না, আগামী প্রজন্ম হবে দুর্নীতিমুক্ত-এমন উদ্যোগ হলো প্রতিরোধ। সেই প্রতিরোধ করতে হলে প্রজন্মকে নৈতিক শিক্ষা, মূল্যবোধ ও দেশপ্রেমের টিকা দিতে হবে। আইনের প্যারাসিটামল খাইয়ে দুর্নীতি প্রতিকার করা গেলেও প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়।

একই রকম ‘জিপিএ-৫ শিক্ষার্থীদের মেধাকে ধ্বংস করছে’ বিষয়ের বিপক্ষে কৌশলী কাজ হবে যদি ‘মেধাকে ধ্বংস করছে’ শব্দত্রয়ের বিরোধিতা না করে, শুধু ‘জিপিএ-৫’ শব্দদ্বয়ের বিরোধিতা করা হয়। অর্থাৎ জিপিএ-৫ শিক্ষার মূল্যায়নের মাপকাঠি মাত্র। আগে ফার্স্ট ক্লাস পেতো, এখন জিপিএ-৫ পাচ্ছে, আগামীতে ত্রিভূজ, চতুর্ভুজ, বর্গ চিহ্নের মাধ্যমে পিআই, বিআই পাবে। এর কোনোটিই মেধাকে ধ্বংস করছে না। বরং মেধাকে ধ্বংস করছে জিপিএ-৫ পাওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতা। পাশের বাসার আন্টির ছেলে জিপিএ-৫ পেয়েছে, তোমাকেও পেতেই হবে এমন ধারণা যেমনি অসুস্থ প্রতিযোগিতার অংশ, তেমনি পাশের উপজেলার স্কুলটি শতাধিক এ প্লাস পেয়েছে, আমরা কেনো পাবো না সেই তাড়নায় পরীক্ষার হলে অসাধু শিক্ষক গিয়ে নৈর্ব্যক্তিকের উত্তর গরুর ‘গ’, ঘোড়ার ‘ঘ’ বলে দেয়াটা এ রকম অসুস্থ প্রতিযোগিতার অংশ। যার মধ্য থেকে শিক্ষার্থীরা জিপিএ-৫ পাচ্ছে ঠিকই, তবে মেধা বৃদ্ধির যে চেষ্টা তার পুরোটাই ভেস্তে যাচ্ছে। তাই জিপিএ-৫ নয়, বরং জিপিএ-৫ পাওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতাই শিক্ষার্থীদের মেধাকে ধ্বংস করছে।

উপরের লেখাটি পড়ে কোনো বিষয়ের পক্ষ দলের বিতার্কিক বন্ধুরা ভাবতে পারেন, তাহলে আমরা যারা পক্ষে পড়লাম তাদের কি জেতার সম্ভাবনা ক্ষীণ? না। একদম না। আমরা অনেকেই ভাবি, শুধু বিষয়ের বিপক্ষ দলেরই বিরোধিতার স্ট্যান্ড থাকে। পক্ষ দলের কোনো স্ট্যান্ড থাকে না। যা অনর্থক ভাবনা। বিষয়ের পক্ষ দল বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ কিছু শব্দকে এমনভাবে প্রসারিত করা উচিত যেন তা বিপক্ষ দলের চিন্তার বাইরের হয়।

‘রাজনীতিবিদরা জননেতা নয়, অভিনেতা’ এমন বিষয় হাতে পেয়ে পক্ষ দলের অনেকেই ভাবতে পারেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, জাতীয় চার নেতা, মহাত্মা গান্ধী, নেলসন মেন্ডেলার মতো নেতারা তো সত্যিকার অর্থেই জননেতা ছিলেন। তাঁরাতো জনগণের সাথে অভিনয় করেননি। ‘বিপক্ষ দল এগুলো বললে আমরা কী বলবো?’ এমন প্রশ্ন যাদের, তাদের জন্যে বলছি, একটু ভাবুন। ‘অভিনেতা’ শব্দটি নিয়ে গ্রুপ স্টাডি করুন। শব্দটিকে প্রসারিত করুন। বিষয়ের পক্ষে হয়েও আপনার জয় নিশ্চিত। ‘অভিনেতা’ কিন্তু দুই প্রকার। এক নায়ক, দুই খলনায়ক। এ দেশের প্রতিজন রাজনীতিবিদ হয় নায়ক, নয় খলনায়ক। যারা মুখে এক অন্তরে আরেক, ভোটের আগে ভাই-ভাই, ভোটের পর দেখা নাই, তারা নিতান্তই খলনায়ক। আর যারা বঙ্গবন্ধুর মতো রাজনীতিবিদ, যিনি ’৭০-এর নির্বাচনে ভোটের আগেও বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। ভোটের পরেও গণমানুষের কথা ভেবে, দেশ ও দশের স্বাধীনতার কথা ভেবে একই কথা বলে গেছেন। বরং ভোটে জয়ী হয়েও দীপ্তকণ্ঠে বলেছিলেন, আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না, এ দেশের মানুষের মুক্তি চাই। তিনি তো রাজনীতির শুধু নায়ক নয়, মহানায়ক। এভাবে বিশ্বের সব ভালো ভালো রাজনীতিবিদদের নায়ক, অসাধু রাজনীতিবিদদের খলনায়ক বলে বিতর্ক চালিয়ে নিতে পারেন। যেহেতু যিনি নায়ক তিনি ইতিবাচক অভিনেতা আর যিনি খলনায়ক তিনি নেতিবাচক অভিনেতা, তাই নির্দ্বিধায় বলা যায়, ‘রাজনীতিবিদরা জননেতা নয়, অভিনেতা’।

‘জনসচেতনতাই পারে পুষ্টিহীনতা দূর করতে’ এই বিষয়ের বিপক্ষ দল যতই ‘ই’ প্রত্যয়ের বিরোধিতা করুক, পক্ষ দলরা ‘জনসচেতনতা’ শব্দটিকে প্রসারিত করুন। একবার ভাবুন, পুষ্টিহীনতা দূর করতে জনগণের যেই উপলব্ধি তা-ই জনসচেতনতা। এই স্ট্যান্ডে বিতর্ক করলে বিপক্ষ দল দারিদ্র্য, সুষম খাদ্য ঘাটতি, শিশু চিকিৎসার মতো যেই স্ট্যান্ড নিয়েই বিতর্ক করুক না কেনো পক্ষ দল শুধু বলে যান, দরিদ্রতার মধ্যে মানুষ যতটুকু খাচ্ছে ততটুকু পুষ্টিকর খাবার খাচ্ছে কি-না এই উপলব্ধিটুকুই জনসচেতনতা, সুষম খাদ্যঘাটতি দূর করতে নিজের অনাবাদি জমিতে বা বাড়ির আঙ্গিনায় সুষম সবজি চাষের যেই উপলব্ধি তা-ই জনসচেতনতা, পুষ্টিহীনতায় ভোগা শিশুকে ছোটবেলাতেই সঠিক চিকিৎসা দেয়ার জন্যে বাবা-মায়ের যে উপলব্ধি তা-ই জনসচেতনতা। এজন্যেই আমরা বলছি, জনসচেতনতাই পারে পুষ্টিহীনতা দূর করতে।

‘মানহীন নয়, মানসিকতার অভাবেই স্বদেশী পণ্য আজ অবহেলিত’ বিতর্ক বিষয়ে বিপক্ষ দল যতই দেশীয় পণ্যের টেকসই মান নিয়ে প্রশ্ন তুলুক না কেনো বিপক্ষ দল ‘মানসিকতা’ শব্দটিকে প্রসারিত করে স্ট্যান্ড তৈরি করুন। একটু ভাবুন, মানসিকতা শুধু ক্রেতার নয়, ক্রেতা, বিক্রেতা, উৎপাদনকারী, বিক্রয় নিয়ন্ত্রক, রক্ষণাবেক্ষক, পণ্য অনুমোদনকারী সংস্থা সকলের মানসিকতার অভাবেই স্বদেশী পণ্য আজ অবহেলিত। এই স্ট্যান্ডে বিতর্ক করলে বিপক্ষ দলের কথা বলার জায়গাটি সংকুচিত হয়ে আসে। অর্থাৎ পণ্য মানহীন হওয়ার কারণই হলো পণ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছানোর সাথে যে বা যারা জড়িত তাদের প্রত্যেকের মানসিকতার অভাব। তাই মানহীন নয়, মানসিকতার অভাবেই স্বদেশী পণ্য আজ অবহেলিত।

এভাবে পক্ষ দল তার বিষয়ের যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ শব্দ বা বাক্যাংশ নিয়ে ভাবুন। শব্দকে প্রসারিত করে এমন একটি স্ট্যান্ড তৈরি করুন যে স্ট্যান্ডে বিপক্ষ দল যা-ই বলুক পক্ষের কৌশলী স্ট্যান্ডের কাছে এসে আটকে যায়।

পক্ষ-বিপক্ষ উভয় দলের মনে রাখা উচিত, একটি কৌশলী বিতর্ক স্ট্যান্ড প্রতিপক্ষকে তাৎক্ষণিক ঘাবড়ে দেয়। তার লিখে আনা স্ক্রিপ্ট থেকে বের করে অন্য কিছু বলার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়। এই যে প্রতিপক্ষকে কিঞ্চিত ঘাবড়ে দেয়া, নতুন কিছু বলার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়া এখানেই বিতর্কের জয়-পরাজয়টা নির্ণয় হয়ে যায়। যদি প্রতিপক্ষ চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়, তবে কৌশলী স্ট্যান্ডের জয় হয়। আর যদি চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে নিজ স্ক্রিপ্টের বাইরে গিয়ে প্রতিপক্ষ বিতর্ক চালিয়ে যায় তবে লড়াইটা হয় শেয়ানে শেয়ান। এ ধরনের বিতর্কে যে দলই জিতুক, দিনশেষে বিতর্কের জয় হয়। প্রতিজন বিতর্কপ্রেমী, বিতর্কশ্রোতা, বিতর্কশ্রমিক এমন বিতর্কের জয়ই চায়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়