রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫  |   ৩৪ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২৫, ০৯:১২

সঠিকভাবে ছাদবাগান করুন

জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ

কৃষিকণ্ঠ প্রতিবেদক
জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ

মাটি প্রস্তুত, টব সাজানো, গাছ নির্বাচন ও রোগবালাই দমন সম্পর্কে সঠিক তথ্য না জানায় টবের গাছের বাড়াবাড়তি যেমন ব্যাহত হয়, তেমনি কাঙ্ক্ষিত ফলন না পাওয়ায় আগ্রহ কমে যাচ্ছে ছাদবাগানীদের।এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্যেই সকলের জানা প্রয়োজন ছাদবাগানে বিষমুক্ত উপায়ে সকল শাকসবজি, ফল ফসল উৎপাদন কলাকৌশল। জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পক্ষে কৃষক-কৃষাণীর জন্যে পরামর্শ নিচে তুলে ধরা হলো :

ছাদ বাগানের উদ্দেশ্য

১। পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা পূরণ

২। নান্দনিক চাহিদা পূরণ

৩। অবসর সময়কে কাজে লাগানো

৪। বিষমুক্ত নিরাপদ টাটকা শাকসবজি ও ফলমূল পাওয়া

ছাদ বাগানের ধাপসমূহ

১। পরিকল্পনা ও নকশা তৈরি করা

২। উপকরণ সংগ্রহ

৩। মাটি প্রস্তুতি

৪। টবে মাটি ভরাট

৫। গাছ নির্বাচন

ছাদ বাগান পরিকল্পনায় বিবেচ্য বিষয়

১। দৃঢ় মানসিক প্রস্তুতি

২। ছাদ বাগানের সৌন্দর্য বৃদ্ধি

৩। ছাদ বাগান করার উপযোগী কি না? অর্থাৎ ছাদ গাছপালার ওজন বহন করার মতো যথেষ্ট মজবুত কি না? পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো কি না?

নকশা করার ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয়

১। ছাদের আকার ও আয়তন অনুযায়ী নকশায় ছাদের চারপাশের সীমানা ও মাপ নির্ধারণ করা

২। চলাচলের সুবিধার জন্যে খানিকটা খোলা জায়গা রাখা।

৩। ছাদের আয়তন বেশি হলে ছাদকে কয়েকটা অংশে ভাগ করে প্রতি অংশের মাঝে প্রায় ১ থেকে ১.৫ মিটার চওড়া করে চলাচলের পথ রাখা।

৪। ছাদে উঠার সিঁড়ি ঘর হতে পরিকল্পনা ও নকশা আঁকা শুরু করা।

৫। ছাদের যে কোনো এক কোণে বা চিলেকোঠার সাথে লোহার পাইপ বা কাঠের খুঁটি লাগিয়ে যাতে একটি মাচা করা যায় সেটা নকশায় রাখা।

৬। ভেতরের এক এক অংশে এক এক ধরনের গাছ রাখা বা লাগানোর জন্যে কাঠামো তৈরি বা টবের জায়গা চিহ্নিত করা।

৭। পানির উৎস নকশায় রাখা।

৮। নকশায় কোঠাঘরের জায়গা রাখা।

৯। বাগানের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্যে ছাদে মাঝের দিকে ফল গাছ লাগানোর জন্যে স্থায়ী টব স্থাপন করা।

১০। ছাদের কিনারায় লতানো গাছ লাগানোর প্রয়োজন হলে শুরুতেই ছাদের রেলিংয়ের উপরে অনুচ্চ গ্রীল বা রেলিংয়ের ভেতরে বা বাইরের দিকে লোহার কিছু ক্ল্যাম্প বা হুক লাগিয়ে রাখা।

১১। নকশা তৈরি করার সময় ছাদের কোন্ দিক থেকে রোদ আসে এবং ঋতুভেদে রোদ কোন্ দিকে সরে যায় ইত্যাদি বিষয় খেয়াল রেখে টব নির্মাণ করা।

১২। অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের জন্যে সঠিক পরিকল্পনা থাকা।

১৩। সৌন্দর্য বৃদ্ধির প্রয়োজনে খোলা জায়গায় লন তৈরি এবং একটি বসার শেড তৈরির স্থান নকশায় নির্ধারণ করা

প্রয়োজনীয় উপকরণ

কোদাল, গার্ডেন ফর্ক, বাডিং নাইফ, সিকেচার, প্রুনিং শেয়ার, করাত, ব্যালেন্স, ডিবলার, ওয়াটারিং ক্যান, ট্রে, সীডপ্যান, পট, প্লাস্টিক পট, গ্রোইংব্যাগ, বালতি, পলিব্যাগ, ড্রাম, হাফ ড্রাম, মাটির বোল ইত্যাদি।

মাটি প্রস্তুত উপকরণ

হাড়িভাঙ্গা, ইটের খোয়া,বালি, নারিকেলের ছোবড়া, মাটি, জৈব সার, রাসায়নিক সার, বায়োডার্মা, দানাদার কীটনাশক

মাটি প্রস্তুত প্রণালী

১। মাটি কোকো ডাস্ট বা কাঠের গুঁড়া রোদে শুকিয়ে নেয়া

২। মাটি গুঁড়া করে, মাটি থেকে অনাকাঙ্ক্ষিত বস্তু অপসারণ করা।

৩। মাটি পি এইচ পরীক্ষা করে পিএইচ ৫-এর কম হলে প্রতি কেজি মাটির জন্যে ১ গ্রাম, পিএইচ ৫- ৬ হলে ০.৫ গ্রাম হারে ডলোচুন মিশিয়ে, ৮- ১০ দিন পলিথিনে মুড়িয়ে রাখতে হবে। আর যদি পিএইচ ৭.৫-এর বেশি হয় তাহলে

অ্যালুমোনিয়াম সালফেট বা ফিটকিরি পরিমাণ মতো প্রয়োগ করে মাটির ক্ষারত্ব কমাতে হবে

৪। মাটি ২ ভাগ : জৈব সার ১ভাগ : কোকো ডাস্ট বা কাঠের গুঁড়া ১ ভাগ : প্রতি কেজি মিশ্রণের জন্যে ১ গ্রাম হারে ইউরিয়া, টিএসপি এবং ০.৫ গ্রাম হারে এমওপি জিপসাম, ম্যাগনেশিয়াম

০.২০ গ্রাম জিংক ০.১০ গ্রাম বায়োডার্মা, বোরণ ও দানাদার কীটনাশক

যোগ করে হালকা পানি ছিটিয়ে পলিথিন দিয়ে ১ মাস ঢেকে রাখতে হবে। ৭দিন পর পর কোপ দিয়ে পানি ছিটা দিয়ে পুনরায় ঢেকে রাখা। এভাবে চারবার কোপ দেয়ার পর মাটিতে যখন কোনো গ্যাস থাকবে না তখন টবে ভরা।

টবে মাটি ভরাট

টব থেকে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের জন্যে মাটি টবের নিচে ১টি ও বড়ো প্লাস্টিক ড্রামের ক্ষেত্রে তিন থেকে চারটি ছিদ্র রাখতে হবে। আর সিমেন্টের চৌবাচ্চার ক্ষেত্রে দুই থেকে তিন ফিট দূরে দূরে এক ইঞ্চি ব্যাসের ছিদ্র দুই সারিতে রাখতে হবে।

প্রথমে ছিদ্রের উপরে হাড়িভাঙ্গা উপুড় করে দিতে হবে।

টবের তলায় ২/৩ সেমি. পুরু করে ইটের খোয়া সাজাতে হবে। এমনভাবে সাজাতে হবে যাতে ছিদ্রগুলো মাটি দ্বারা বন্ধ না হয়ে যায়।

টবে মাটি ভরার সময় টবের উপরিভাগে ০.৫ থেকে ১ ইঞ্চি পরিমাণ এবং হাফ ড্রামের ক্ষেত্রে ১.০ থেকে ১.৫ ইঞ্চি ঠিকমতো সার ও পানি দেয়ার জন্যে খালি রাখতে হবে।

সার মিশ্রিত মাটি দিয়ে নির্দিষ্ট উচ্চতা পর্যন্ত টব/পট ভরাট করে বেশি করে পানি সেচ দিতে হবে। ভরাটকৃত পট ১২-১৫ দিন ফেলে রাখার পর চারা রোপণ/বীজ বপন করতে হবে।

উদ্ভিদ নির্বাচন

ছাদ বাগানের জন্যে এমন গাছ নির্বাচন করতে হবে, যার জাত খর্বাকার, মূলের গভীরতা কম এবং সারা বছর ফল দেয়। ছাদ বাগানের জন্যে উপযোগী ফলের জাত হচ্ছে :

আম----বারি আম-৩ (আম্রপালি), বাউ আম-২ (সিন্দুরী), থাই কাঁচা মিঠা, ব্যানানা ম্যাঙ্গো, বারি আম-১১, কাটিমন, সূর্য ডিম, পুনাই,

পেয়ারা-----বারি পেয়ারা-২, ইপসা পেয়ারা-১, থাই পেয়ারা,

কুল---- বাউ কুল-১, ইপসা কুল-১ (আপেল কুল), থাই কুল-২,

লেবু----বারি লেবু-২, বারি লেবু-৩, বাউ কাগজি লেবু-১।

আমড়া---- বারি আমড়া-১, বাউ আমড়া-১, থাই আমড়া,

করমচা--- থাই মিষ্টি করমচা। ড্রাগন ফল,

কমলা----বারি কমলা-১,

মাল্টা----বারি মাল্টা ১, বারি মাল্টা-৪, ভিয়েতনামি বারোমাসি মাল্টা।

জামরুল--- বাউ জামরুল-১ (নাসপাতি জামরুল), বাউ জামরুল-২ (আপেল জামরুল)।

এছাড়াও বাইকুনুর আঙ্গুর, মালবেরি, ব্ল্যাকবেরি অ্যাভোকাডো, পার্সিমন সহ অনেক বিদেশি ফল চাষাবাদ করা সম্ভব।

মৌসুম ভিত্তিক উফশী ও হাইব্রিড শাক সবজি যেমন-লালশাক, পালংশাক, মুলাশাক, ডাঁটাশাক, কলমীশাক, পুইঁশাক, চুকুর, ক্যাপসিকাম, লেটুস, বেগুন, টমেটো, ঢেঁড়স, শিম, বরবটি, করলা, লাউ, ধুন্দল ইত্যাদি।

সৌন্দর্য ও মনের প্রশান্তির জন্যে বিভিন্ন ফুল যেমন গাঁদা, গোলাপ, বেলী, টগর, জুঁই, গন্ধরাজ, জবা, টিকোমা, জারবেরা, শিউলি, এলামন্ডা ইত্যাদি।

মসলা ও ঔষধিগুণসম্পন্ন মরিচ, ধনেপাতা, বিলাতি ধনিয়া, পুদিনা, কারিপাতা, পেঁয়াজ, রসুন, অ্যালোভেরা, তুলসী, থানকুনি, ইত্যাদি লাগানো যেতে পারে।

সেচ ও নিকাশ

টাইমিং পদ্ধতিতে আধুনিক ড্রিপ ও স্প্রিকলার ইরিগেশনের ব্যবস্থা করা।

অথবা সকাল ৭টার আগে ও সন্ধ্যা সাতটার পরে সেচ দেওয়া ও অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি দ্রুত নেমে যাওয়ার ব্যবস্থা রাখা।

অন্যথায় ঢলে পড়া রোগে আক্রান্ত হবে। ছাদের গাছ একবার ঢলেপড়া রোগে আক্রান্ত হলে তা থেকে আর ভালো ফলন আশা করা যায় না। গরমের সময় পানি দেওয়ার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে পাইপের পানি যেন গরম না থাকে। প্রখর রোতে অবশ্যই পানি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। গাছে ফুল আসার সময় পানির পরিমাণ কম দিতে হবে। তবে নিয়মিত গোড়ায় অল্প পরিমাণ পানি দিতে হবে, না হলে পানির অভাবে ছাদ বাগানের গাছের ফুল ঝরে যাবে। কুমড়াজাতীয় গাছে অবশ্যই ঠিকমতো সেচ দিতে হবে, না হলে গাছের কাঙ্ক্ষিত বৃদ্ধি ও ফলন পাওয়া যাবে না। ছাদ বাগানের জন্যে ড্রিপ বা বিন্দু সেচ খুবই উপযোগী একটি পদ্ধতি। ড্রিপ সেচ হচ্ছে এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে গাছের শিকগে সঠিক এবং সুষম হারে পানি প্রয়োগ করা যায়। এ ছাড়া পানিতে দ্রবণীয় সার সঠিক মাত্রায় গাছে প্রয়োগ করা যায়। ড্রিপ সেচ একটি অত্যন্ত সময়োপযোগী ও প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি। এই পদ্ধতিতে ছিদ্রযুক্ত নলের সাহায্যে গাছের গোড়ায় ফোঁটায় ফোঁটায় সেচ দেয়া হয়। এতে পানির কোনো অপচয় হয় না। যেখানে সেচের জন্যে পানি অপ্রতুল, সেখানে এই পদ্ধতি খুবই কার্যকর।

স্প্রিংকলার পদ্ধতিতে গাছের উপরিভাগ ধোয়া হয়ে যায়। ফলে গাছ সতেজ থাকে। গাছের গোড়া ভেজা থাকা অবস্থায় কোনো অবস্থাতে পানি দেয়া যাবে না।

সার ব্যবস্থাপনা

ছাদ বাগানে সার প্রয়োগের ব্যাপারে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। দু সপ্তাহ পরপর অল্প পরিমাণ সার স্প্রে করতে হবে। প্রথম পর্যায়ে ১ লিটার পানিতে ৫ গ্রাম ইউরিয়া, ৫ গ্রাম টিএসপি, ১-২ গ্রাম বোরণ সার ভাল করে গুলে নিতে হবে ( সেক্ষেত্রে টিএসপি সার ৩/৪ ঘণ্টা আগে ভিজিয়ে রাখা ভাল)। ২য় পর্যায়ে ১ লিটার পানিতে (১ম বারের ২ সপ্তাহ পর) ৫ গ্রাম ইউরিয়া, ৫ গ্রাম জিংক গুলিয়ে নিতে হবে। ৩য় পর্যায়ে ১ লিটার পানিতে (২য় বারের ২ সপ্তাহ পর) ৫ গ্রাম ইউরিয়া, ২-৩ গ্রাম এমওপি সার গুলিয়ে, চারা/ছোট গাছের ক্ষেত্রে ৪/৫টি গাছের গোড়ায় প্রয়োগ করা যেতে পারে, বড়ো গাছের ক্ষেত্রে (বড়ো টবে হলে) ২টি গাছের গোড়ায় প্রয়োগ করা যেতে পারে, আবার হাফ ড্রামে হলে ১টি গাছের গোড়ায় প্রয়োগ করা যেতে পারে। এভাবে অল্প অল্প সার আবর্তকভাবে প্রয়োগ করলে ছাদ বাগানে ভালো ফলন পাওয়া যাবে। সার মিশ্রিত পানি পড়ন্ত বিকেলে প্রয়োগ করা ভালো, তবে গাছের গোড়ার মাটিতে ঐ পরিমাণ সার মিশ্রিত পানি প্রয়োগ করতে হবে, যাতে গোড়ার মাটি পরের দিন শুকিয়ে যায়। বর্ষার সময় গাছের গোড়ায় অতিরিক্ত পানি না জমে সেভাবে সেচ দিতে হবে। ছাদ বাগানে জৈবসার ব্যবহার সব থেকে উত্তম।

মালচিং

গ্রীষ্মকালে কচুরিপানা বা চটের বস্তা দিয়ে টব ও গাছের গোড়া ঢেকে দেয়া অথবা মালচিং পেপার দিয়ে ঢেকে দেয়া।

পরাগায়ণ

পরাগায়ণজনিত সমস্যা রোধে হস্তপরাগায়ণ করা প্রয়োজন।

ঝিঙ্গা ব্যতীত সকল হলুদ ফুল সকাল আটটার মধ্যে, লাউ ফুল দুপুর ২টায়, পটল ফুল বিকেল ৪টার পরে, ড্রাগন ফুল রাত দশটার পরে পরাগায়ন করতে হবে।

সাদা মাছি পোকা, জাবপোকা, ফলের মাছি পোকা, ডগা ও কাণ্ড ছিদ্রকারী পোকা, লিফমাইনর ইত্যাদি ছাদ বাগানে খুব বেশি দেখা যায়। এসব পোকা প্রতিরোধ করার জন্যে

প্রতি ২০ হাত দূরে দূরে একটি হলুদ নীল ও একটি সাদা আঠালো ফাঁদ চারা গজানোর শুরুতে প্রয়োগ করা, কুমড়াজাতীয় সবজির পুরুষ মাছি পোকা মারার জন্যে কিউট্র্যাক পেস্ট ২০ হাত দূরে দূরে ১ গ্রাম লাগিয়ে দিতে হবে এবং কিউলিউর/কিউ ফেরো লিউর দিয়ে ফেরোমন ফাঁদ ১টি করে স্থাপন করতে হবে। ফলের পুরুষ মাছি পোকা মারার জন্য ব্যাকট্রো ডি লিউর দিয়ে ফেরোমন ফাঁদ স্থাপন করতে হবে।বেগুনের ডগাও ফল ছিদ্রকারী পুরুষ পোকা মারার জন্যে বিএসএফবি লিউর দিয়ে ফেরোমন ফাঁদ স্থাপন করতে হবে। টমেটো লিপ মাইনর দমনের জন্যে টুটা লিউর দিয়ে ফেরোমন ট্রাপ এবং ফুলকপি বাঁধাকপি টমেটো মরিচ সরিষার পট বোরার ও লেদা পোকা দমনের জন্য স্পোডো লিউর, পেঁয়াজ, মরিচ, আম সীম সহ ফল সবজির থ্রিপস পোকা দমনের জন্যে থ্রিপস নক ফেরোমন ফাঁদ এবং কুমড়া জাতীয় সবজিসহ আম, পেয়ারা, কুলের বা যে কোনো ফলের স্ত্রী মাছি পোকা দমনের জন্যে জোনাট্রাক মলম ২০ হাত দূরে দূরে এক গ্রাম লাগিয়ে দিতে হবে।

পাশাপাশি সকল রোগ পোকামাকড় দমনের জন্যে কৃষিতেই বিস্ময় ইউটিউব চ্যানেলে দেয়া ভিডিওগুলো দেখে ৩০টিরও অধিক জৈব কীটনাশক ছত্রাকনাশক ও রোগনাশক তৈরি করে স্প্রে করতে হবে। এছাড়াও ইস্পাহানি, রুসল আইপিএম, টিবিএস কোম্পানির বায়ো পেস্টিসাইড সকল রোগ পোকামাকড় দমনে ব্যবহার করতে পারেন, তাহলে বিষমুক্ত স্বাস্থ্য সম্মত নিরাপদ উপায়ে সকল ফল শাকসবজি উৎপাদন সম্ভব হবে।

উক্ত পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করে আপনারা বসতবাড়ির আঙ্গিনাসহ জমিতেও বিষমুক্ত শাকসবজি ফল ফসল উৎপাদন করতে পারেন।

ছাদবাগান রক্ষণাবেক্ষণ ও অন্যান্য পরিচর্যা

১। টবের উপরে মাটি চটা বেঁধে খেলে নিড়ানি দিয়ে মাঝে মাঝে মাটিকে ঝুরঝুরে করে দিতে হবে

২। ছাদ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। পোকা ও রোগাক্রান্ত পাতা ও গাছের অংশ ছাদে রাখা যাবে না।

৩। দু বছর পর পর রিপটিং ও ডিপোটিং করতে হবে

৪। নিয়মিত সময়মতো ট্রেনিং ও প্রুনিং করতে হবে

কৎরংযরঃবর ইরংযসড়ু কৃষিতেই বিস্ময় ইউটিউব চ্যানেলে বিষমুক্ত নিরাপদ উপায়ে সকল শাকসবজি ফলমূল উৎপাদনের সম্পূর্ণ কৌশলের ভিডিও রয়েছে। ভিডিওগুলো দেখে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিগুলো জেনে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতে পারেন।

তাৎক্ষণিক সর্বাধুনিক যে কোনো কৃষি পরামর্শের জন্যে স্ক্যান করে বা কৎরংযরঃবর ইরংযসড়ু সার্চ দিয়ে যে কোনো ভিডিওতে কমেন্ট করুন।

মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান : একাধিক জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত, কৃষি বিষয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত (চীন) ও আইপিএম সিজন লং টিওটি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।

উপ-সহকারী কৃষি অফিসার, মতলব দক্ষিণ, চাঁদপুর।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়