প্রকাশ : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:১৯
আগুনের নদী

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
আট.
উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকো। এখানে ৪৫ ব্যাগ মানব দেহাবশেষ উদ্ধার হয়েছে। এই দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর গুয়াদালাজারার বাইরে একটি দুর্গম গিরিখাত থেকে ব্যাগগুলো খুঁজে পাওয়ার পর পুলিশ সেগুলো উদ্ধার করে। তবে সেখানে ঠিক কতজনের মৃতদেহের অংশ আছে তা এখন পুলিশ জানতে পারেনি। গত সপ্তাহে নিখোঁজ হওয়া সাতজন তরুণ কল সেন্টার কর্মীকে খুঁজছিলো পুলিশ কর্মকর্তারা। খুঁজতে খুঁজতে সেখানে গিয়ে তারা ওই মৃতদেহগুলো খুঁজে পেয়েছেন।
উদ্ধারকৃত দেহাবশেষের মধ্যে পুরুষ ও নারী উভয়েরই মৃতদেহের অংশ রয়েছে। ওই এলাকাটি দুর্গম হওয়ায় এবং আলো কম থাকার কারণে অনুসন্ধান কর্মকাণ্ড আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মেক্সিকোর পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ জলিসকোর রাষ্ট্রীয় প্রসিকিউটরের কার্যালয় থেকে জানা যায়, নিখোঁজ সাত জনের সন্ধানের বিষয়ে একটি তথ্য পাওয়ার পর মেক্সিকান কর্মকর্তারা মিরাডোর ‘দেল-বস্ক’ গিরিখাতে অনুসন্ধান শুরু করে এবং একপর্যায়ে সেখানে তারা মানবদেহের অঙ্গসহ এসব ব্যাগ খুঁজে পায়।
অগ্নিনির্বাপক দল ও সিভিল ডিফেন্স পুলিশ এবং হেলিকপ্টার ক্রুদের একটি দল ঘটনাস্থলে দেহাবশেষ উদ্ধারের জন্যে কাজ করছে। কর্মকর্তারা বলেছেন, উদ্ধারকৃত ব্যাগে মৃতদেহের সংখ্যা, তারা কারা এবং তাদের মৃত্যুর কারণ নির্ধারণে তারা কাজ চালিয়ে যাবেন।
মৃতদেহগুলো কীভাবে এই গিরিখাতে পড়ছিলো তা এখনও জানা না গেলেও মেক্সিকোতে গুমের মতো অপরাধ তুলনামূলকভাবে সাধারণ বিষয়। উত্তর আমেরিকার এই দেশটির সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মেক্সিকোতে ১ লাখেরও মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।
দেশটিতে ভুক্তভোগী এসব মানুষের অনেকেই অপরাধী মানব পাচারকারী গোষ্ঠীগুলোর সংঘবদ্ধ অপরাধের শিকার। তবে মেক্সিকোতে অপরাধীদের খুব কমই শাস্তি দেওয়া হয়।
বিবিসি নিউজ পোর্টালে খবরটি আদ্যোপান্ত পড়ছিলো জামশেদ। পুরো ঘটনা পড়ে কিছুক্ষণ মনে মনে হাসলো। তারপর তার চোয়াল কঠিন হয়ে গেলো। সে ডাকলো, ‘নিয়াজ, কোথায় তুমি?’
কিছুক্ষণের মধ্যে নিয়াজ এসে জামশেদের সামনে হাজির হলো। সে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে নিয়াজকে ডেস্কের সামনের চেয়ারে বসে ইঙ্গিত করলো।
‘বস, বলুন।’
‘তোমাদের গাধামি দেখে মনে হয় তোমরা একদম অপেশাদার। এই ব্যাগগুলো তোমাদেরকে সাগরে ফেলে দিতে বলেছিলাম। গিরিখাদে নয়। সাগরে ফেলে দিলে মাছের খাদ্য হয়ে যেতো। কিন্তু গিরিখাদে ফেলায় পুলিশ এগুলো খুঁজে পেয়েছে অনায়াসে। এখন আমাদের বিপদ সামনে ওঁৎ পেতে আছে। এমনিতেই তোমাদের সূক্ষ্ম ভুলে আজ ইমতিয়াজ খুনের জন্যে আমাদের ৫জন লোক ধরা পড়েছে। তারাও হড়হড় করে সব বলে দিয়েছে। আমেরিকার সাথে বন্দী চুক্তি নেই বলে বাংলাদেশ আমাকে ফিরিয়ে নিতে পারছে না। কিন্তু ঘটনাটা যেহেতু ভারতে ঘটেছে, সেজন্যে ভারত সরকার ইন্টারপোলের মাধ্যমে আমাদেরকে ফিরিয়ে নেওয়ার আবেদন করেছে। চারদিকে বিপদ। বিপদের মধ্যে আছি। তার উপর সেই যুবকদের, যাদেরকে আমরা ইতালী নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এখানে এনে তাদের পরিবারের কাছ থেকে প্রচুর অর্থ কামিয়ে হত্যা করেছি। তাদের লাশগুলোর টুকরো টুকরো করা ব্যাগগুলোও পুলিশ পেয়ে গেছে। এখন আমাদের কাজকর্ম খুবই সীমিত হয়ে গেলো। শুধুই তোমার ভুলে নিয়াজ, শুধু তোমার ভুলে। তুমি কি অ্যামেচার? নাকি প্রফেশনাল? বলো, বলো আমাকে?’
নিয়াজ মাথা নিচু করে রইলো কিছুক্ষণ। ধীরে ধীরে জামশেদ রিভলবিং চেয়ারে বসে সামনের ডেস্কের ড্রয়ারটা খুললো। তারপর মিনি পিস্তলটা বের করে তাতে একটু বুলেট প্রবেশ করালো।
নিয়াজ টের পায় তার জীবনের ইতি ঘটার সময় ঘনিয়ে এসেছে। সে চোখ ছানাবড়া করে জামশেদের দিকে তাকালো। সে জানে জামশেদ যেহেতু পিস্তলটা বের করে ফেলেছে, এর ব্যবহারটা তার উপরই করবে।
ধীরে ধীরে চোখ বন্ধ করলো সে। তারপর আসন্ন মৃত্যুর অপেক্ষায় রইলো।
‘কি চোখ বন্ধ করে ফেললে যে?’ জামশেদ হাসলো রহস্যময় হাসি। তারপর বললো, ‘চোখ খোলো নিয়াজ। তুমি আমার দীর্ঘদিনের পথচলার সাথী। তোমাকে আমি খুব সহজেই মেরে ফেলবো না। তবে তোমাকে শিক্ষা দেওয়ার একটা খেলা খেলবো।’
নিয়াজ চোখ খুললো। তারপর উঠে দাঁড়ালো। জামশেদের চোখ দুটো এবার কঠিন হলো। সে বললো, ‘একটা খেলা খেলতে চাই নিয়াজ, দেখি তোমার মৃত্যুটা আমার হাতের আছে কিনা? তুমি কি রাজি?’
‘বস, আমি তো আপনার হাতের মুঠোয়। আপনি চাইলে মেরে ফেলতে পারেন, আবার চাইলে আমার জীবন ভিক্ষাও দিতে পারেন।’
‘আহা আহা, কী বলছো নিয়াজ। জীবন দেওয়া ও নেওয়ার মালিক তো আল্লাহ। আমি জন্ম থেকেই খারাপ, জীবনটাই তো আমার পাপে ভরা। তারপরও আমি আল্লাহর অসীম ক্ষমতায় বিশ্বাসী। আমি জানি, আল্লাহই জীবনদাতা এবং মৃত্যুর মালিক। তবে, আমি জাস্ট ট্রাই করবো। আমার পিস্তলে একটি মাত্র গুলি ভরেছি। আমি তোমাকে শুট করবো। যদি তোমার কপালে লাগে তবে কপাল ফুটো হয়ে যাবে। আর যদি না লাগে, তাহলে তোমার জীবন চলমান থাকবে। দেখি আল্লাহ কী করে? পরীক্ষা করবো?’
নিয়াজ কোনো কথা বললো না। সে শুধু তাকিয়ে আছে জামশেদের কঠিন দুটি চোখের দিকে। সেই দুটি চোখ জ্বলজ্বল করছে রাগে। যেনো চোখ দুটি থেকে আগুনের স্ফুলিঙ্গ বের হচ্ছে।
হঠাৎ করেই নিয়াজের কপাল বরাবর গুলিটা করলো জামশেদ। ঠাস্ করে মাটিতে পড়ে গেলো নিয়াজ। মাটিতে পড়েই সে অনুধাবন করলো গুলিটা কপালে নয়, হাতে লেগেছে। রক্তে ভেসে যাচ্ছে ফ্লোর।
জামশেদ হাততালি দিলো। তারপর বললো, ‘তোমার ভাগ্যটা অনেক ভালো। গুলি করলাম কপালে কিন্তু গুলিটা লাগলো বাহুতে।’ সহকর্মীদের ইঙ্গিত করলো, ‘যাও ওর বাহু থেকে গুলিটা বের করে ব্যান্ডেজ করে দাও। ও বেঁচে থাকবে। মরবে না সহজেই।’
কথাগুলো বলেই পিস্তলটা আবার ড্রয়ারে রাখলো জামশেদ। তারপর সুমনকে কল করলো, ‘সুমন তুমি কোথায়?’
‘স্যার। এই তো অফিসের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে। কিছুক্ষণের মধ্যে হাজির হবো।’
নিয়াজের গুলি বের করা হয়েছে। তারপর তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। নিয়াজ এখন সুস্থ। সে শুয়ে শুয়ে ভাবলো, এই জীবন কি এভাবেই বুলেটের মুখে সব সময়ই থাকবে, নাকি জীবন জীবনের মতো চলবে? এ জীবন তো এভাবে বুলেটের মুখে সব সময় রাখা যায় না। এটা কি কোনো জীবন হলো?
নিয়াজ জামশেদের সহকর্মী হিসেবে কাজ করছে প্রায় বিশ বছর হয়েছে। একটা গ্যাঁড়াকলে পড়ে জামশেদের সহকর্মী হতে হয়েছে তাকে। জামশেদ তাকে এমন ব্ল্যাকমেইল করেছে যে, সে শত চেষ্টায়ও গিট্টু থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না। কিন্তু তার মনটা সব সময়ই চাইছে মুক্ত পাখির মতো ডানা মেলে আকাশে উড়তে।
জামশেদের সামনে হাজির হলো সুমন। সাথে তার শ্বশুর ইলিয়াছ মণ্ডল। জামশেদ ইলিয়াছ মণ্ডলের দিকে তাকিয়ে বললো, ‘মোনালিসা কোথায়?’
‘স্যার, তাকে বাসায় রেখে এসেছি। মেয়েটা বেশ নার্ভাস হয়ে গিয়েছে।’
‘ভালো। নার্ভাস থাকা ভালো। জীবনে কিছু কিছু সময় আসে সুখপাখিকে কিনতে হয় হাজারো দুঃখের বিনিময়ে। তার সুখ পাখি এখন আমি। আমি তার দায়িত্ব নিয়ে নিবো। কী বলো সুমন?’
সুমন নিরুত্তর।
‘কথা বলছো না কেনো?’
সুমনের দুটি ঠোঁট খুললো। কম্পিত কণ্ঠে বললো, ‘আপনি যা বলেন বস, তাই হবে।’
‘যাও এ মুহূর্তে মোনালিসাকে আমার সামনে হাজির করো।’
সুমন জানে জামশেদ কী ধরনের চিজ। যা একবার মুখ থেকে বের করে, তার দ্বিরুক্তি করে না সে। দ্বিতীয় বলতে হলে বুলেটের আঘাতে জবাব দেয়। জীবনের বহু সময় সে জামশেদের সাথে কাটিয়েছে। সে দেখেছে জামশেদের নিত্য নতুন পথচলার সূচনা। তাই সে কখনোই জামশেদের কথার অবাধ্য হয়নি।
সুমন চলে যাওয়ার পর কথা বললো ইলিয়াছ মণ্ডল, ‘স্যার। একটা কথা জিজ্ঞাসা করতে পারি?’
রক্তচক্ষু দিয়ে জামশেদ ইলিয়াছ মণ্ডলের দিকে তাকালো। এ চোখ দুটিতে প্রচণ্ড ভয়। থরথর করে কেঁপে উঠলো ইলিয়াছ। চোখ দুটি নিচে নামিয়ে ফেললো।
গমগম করে কথা বলে উঠলো জামশেদ, ‘তোমার মেয়ের দায়িত্ব নিলাম আমি। আজ থেকে সে আমার কাছে থাকবে। বলতে পারো সে আমার স্ত্রী হিসেবে আমার অঢেল বিত্তবৈভবের মালিক হবে। মোনালিসা নামটা শুনেই আমি তার প্রেমে পড়ে গেছি। বুঝতে পারছো ইলিয়াছ?’
‘স্যার, এটা কী করে হয়? আমি তো সুমনের সাথে বিয়ে দেওয়ার জন্যেই আমার ভাতিজা তুষার আহমেদকে খণ্ড খণ্ড করে নদীতে ভাসিয়ে দিয়ে ফেরারী হয়েছি। এখন সে কীভাবে আপনার স্ত্রী হবে?’
ধমকে উঠলো জামশেদ, ‘আন্ডারওয়ার্ল্ডে এসে নীতিবাক্য অর্থহীন। এখানে চলে টাকার খেলা। টাকা ও ক্ষমতা যার, পৃথিবীর সবই তার। আমি না চাইলে তুমি আমার সামনে থেকে নড়তেও পারবে না। বুঝতে পারছো ইলিয়াস? যদি আর একটি কথাও বলো, তাহলে তোমার পরিণতিটাও তুষারের মতোই হবে।’
থরথর করে কেঁপে উঠলো ইলিয়াস। সে বুঝতে পারছে জীবনে মহাভুলটাই করে ফেলেছে তুষারকে খুন করে। এর প্রায়শ্চিত্ত তাকে করতেই হবে একদিন।
প্রায় আধা ঘণ্টার মধ্যেই মোনালিসাকে নিয়ে জামশেদের সামনে হাজির হলো সুমন। মোনালিসাকে দেখেই গভীর ভাবনায় ডুবে গেলো সে। তারপর ইলিয়াসকে বললো, ‘আজ থেকে সুমন ওর স্বামী নয়। আমিই ওর স্বামী। আমার খেয়ালখুশি মতোই মোনালিসার জীবন-মরণ। তাকে আমি বেশ ভালোভাবেই রাখবো, ভালোবাসবো।’
ইলিয়াছ মণ্ডল নিরুত্তর। সে জানে এখানে জামশেদের কথাই আসল কথা। অন্যদের ভাবনার কোনো মূল্যই নেই তার কাছে।
ইলিয়াছকে নিশ্চুপ থাকতে দেখে খুশি হলো জামশেদ। এবার সে সুমনের দিকে তাকিয়ে বললো, ‘আর শোনো সুমন। তুমি তোমার কাজ সঠিকভাবে সম্পাদন করেছো। তোমার একাউন্টে ৫০ লাখ টাকা পৌঁছে যাবে। ঠিক আছে?’
‘হ্যাঁ বস। ঠিক আছে। টাকাই আমার কাছে সব। টাকা ছাড়া পৃথিবী মূল্যহীন। তবে আপনার সেবা করতে পেরে নিজকে ধন্য মনে করছি। মোনালিসার প্রতি আমার আর কোনো চাহিদা নেই। আপনিই এখন ওর প্রকৃত মালিক।’
নিজকে ঘৃণায় পরিণত করলো ইলিয়াস মণ্ডল। এ কী করলো সে? নিজ মেয়েকে একটা অর্থলোভী পিশাচের হাতে তুলে দিলো নিজেরই ভাতিজাকে খুন করে? মেয়েটা তুষারকে ভালোবেসেছিলো। তার কাছেই সারাটা জীবন থাকতে চেয়েছিলো। যে তুষারকে কোলেপিঠে মানুষ করেছিলো সে মেয়েটার সুখের জন্যে সুমনের কাছে বিয়ে দিয়েছিলো। কিন্তু আজ তো তার সেই পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে হচ্ছে। এ মুহূর্তে তার মনে হচ্ছে, নিজকে বিষাক্ত কীটের কবলে ফেলে যন্ত্রণার সাগরে ডুবে যেতে।
এ সময় হেঁসে উঠলো মোনালিসা। তারপর ইলিয়াসের দিকে তাকিয়ে বললো, ‘বাবা, এবার বুঝতে পারছো, পাপ বাপকেও ছাড়ে না? তোমার এই পাপ তোমাকে মৃত্যুর পরও যন্ত্রণা দিবে। বুঝতে পারবে তুমি কতোটা নিষ্ঠুর ও নির্দয় হয়ে আমার ভালোবাসার মানুষটাকে আট টুকরো করে হত্যা করেছিলে। হয়তো তোমার পরিণতিটাও এমনই হবে বাবা।’
কথাগুলো হাসতে হাসতে বলে কাঁদতে শুরু করলো মোনালিসা। অঝোর ধারায় দুটি চোখ বেয়ে বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে অশ্রুবিন্দু।
জামশেদ ধীরে ধীরে চেয়ার থেকে উঠলো। তারপর মোনালিসাকে বাবা ইলিয়াসের সামনেই জড়িয়ে ধরে বললো, ‘কেঁদো না সোনা। এখন থেকে আমিই তোমার সব। আর তুমিই আমার পৃথিবী। তোমাকে আমি সবার চেয়ে বেশি ভালোবাসবো। ভালোবাসার নদীতে আগুনের কোনো স্থান হবে না। প্রয়োজনে তোমার বাবাকে তোমার মূল্য পরিশোধ করে দিবো।’
এ সময় জামশেদ তার সহকারী নিয়াজকে বললো, ‘যাও ইলিয়াসকে ৫০ লাখ টাকা দিয়ে দাও। আর শোনো ইলিয়াছ, তুমি টাকাগুলো নিয়ে এই মুুহূর্তেই বাংলাদেশে চলে যাবে।’
হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো ইলিয়াস। তারপর বললো, ‘স্যার। আমি তো বাংলাদেশে গেলেই আমাকে গ্রেফতার করে জেলে ঢুকিয়ে ফাঁসিতে ঝুলাবে। আমাকে আপনি রক্ষা করুন। দয়া করে বাংলাদেশে পাঠাবেন না।’
‘ঠিক আছে, তাহলে তুমি আমার বাহিনীতেই যোগদান করো। টাকাগুলো নিয়ে যেমন ইচ্ছে তেমন খরচ করো, ফুর্তি করো। যাও।’
জামশেদের বাহুবন্ধনে জড়িয়ে আবারও হাসলো মোনালিসা। সে হাসি তার বাবার প্রতি তাচ্ছিল্যের। এই পৃথিবীতে এখন সে সবচেয়ে বেশি ঘৃণা করে তার বাবাকে। (চলবে)