শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪  |   ২৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা গণফোরামের কর্মী সমাবেশ
  •   নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিনে ফরিদগঞ্জে অবাধে ইলিশ বিক্রি
  •   পিকনিকে যাওয়া শিক্ষার্থীর মরদেহ মেঘনায় ভেসে উঠলো দুদিন পর
  •   নেতা-কর্মীদের চাঁদাবাজি না করার শপথ করিয়েছেন এমএ হান্নান
  •   বিকেলে ইলিশ জব্দ ও জরিমানা

প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০০:১৯

দেবদাস কর্মকারের কবিতা

অনলাইন ডেস্ক
দেবদাস কর্মকারের কবিতা

ভাসে যেন চিত্রার রূপ

ফুটি ফুটি ভোরে চিত্রা নেমেছে জলে

এক ঝাঁক নীল পাখি উড়ে আসে মাথার উপর

নদীতে ডানার ছায়া, হৃষ্ট শরীরে তারা যায় বুঝি দূরে

বিমনা কতোটা আমি, নদীর ওপারে বেজে উঠে ঢাক

এই অন্ধকার ভোরে তারই প্রতিধ্বনি শুনি বারবার

হলুদ পাখির মতো দেবী পাতার আড়ালে উঠে জেগে

মনে আসে স্মৃতি শৈশব বেলকুঁড়ি পথ কতো কিছু

ডিঙা যায় বেয়ে সুঠাম শরীরে তামাটে কিশোর এক

বৈঠার তালে কী অপূর্ব ছন্দ এই ছেলেবেলাকার।

চিত্রা নদীর পাশে এতো গাছপালা লতা গুল্ম

ধূলোহীন ঘাস বুনোফুল, ভরে গেছে যেন ভোরের আকাশ

কার যেন ভিজে হাত জল পেড়ে শাড়ি নেমে যায় জলে

আধ খোলা খোঁপা ভাসে ঘন চুলে, নদীর মতোই

কে জানে ক্ষুধিত চুলের গন্ধে ভেজে তার প্রাণ।

মসৃণ কুয়াশা, বদল প্রভাতে রৌদ্রবিন্দু ক্রমশ জেগে উঠে ধীরে

তবু বুঝি সুখ নেই হৃদয়ের ঘোরে, মাথার ওপর দূর মেঘ, ঘন কাশফুল, বিছানো মাছধরা জাল শুয়ে আছে ঘাসে

বুক জল চরে বিষণ্ন নারীর মতোন ভাসে চিত্রা অপরূপ রূপে।

১০ অক্টোবর ২০২৪, চিত্রা, নড়াইল, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, শরতকাল।

*** না বর্ণে লেখা একটি নাম

ক্ষীণকায় জলাশয়ের পাশে এসে কী যেন মনে হলো

কী যেন কী খুঁজি একা, শব্দ পংক্তির বিপাকে

কী যেন কী মানুষের ভাষা ছিমছাম নারীর শরীর

রেশমি উজান টানা পাড়, শিউলি গন্ধের স্বেদজল

ভোরের বাতাসে এসে দাঁড়ালো সেখানে ।

যেন ভিতরে ঝিলিক উপরে আকাশ ভেঙ্গে নীল

বয়সের কাঠামোয় তারুণ্য দোলে অনায়াসে,

আধখোলা জানালার কাছে অনার্য বৃক্ষের ডাল

অদেখা হ্রদ দুলে উঠে কী যেন এক দীপ্র অনুরাগে।

বুকের ভিতরে উড়ে একটি সোনালী রুমাল

আরো গভীরে আরেক বেদনার গল্প কথা

সবে দেখে শুধু রূপ তার! বহু দূর বাতাসের কান্না

এক টুকরো মিথ্যা গড়াতে গড়াতে যায় মাটি ঘেঁষে

দিগন্তের রাঙা রঙে মিলাতে মিলাতে কে যেন নাম ধরে ডাকে! জল হয়ে আসে চোখের ফোঁটায়

না বর্ণে লেখা একটি নাম।

৩ অক্টোবর, ঢাকা, ১৬ আশ্বিন ১৪৩১, শরতকাল।

মুহাম্মদ জাকির হোসেনের কবিতা

যখন আমি অন্য প্রান্তে

অস্তিত্বের দাবিনামা অগ্রাহ্য করেই

একদিন চলে যাব পরমে, ন্যায়-নিবাসে

সেখানকার কেন্দ্রগত বিভাজনের

কৌণিক বিপ্রতীপে হয়তো খুঁজে পাব

স্বস্তি-সদন

আমার অগস্ত্য যাত্রার পর

গোল্ডফিশের মতো স্মৃতিভ্রষ্ট হয়ে তোমরাও হয়তো

ভুলে যাবে সবকিছু

তোমাদের স্মৃতির আর্কাইভ থেকে

আমি হব ডিলিটেড, অন্তরাল

তখন আমার বাড়ির ফটকে

কেউ যদি জিগ্যেস করে

‘এটা কি জাকিরের বাড়ি?’Ñবাড়ির লোকেরা

হয়তো তখন বলবে

‘এটা আবার কে; হে ভাই, জাকির নামে

কাউকে চিনি না তো

আপনি কার কথা বলতাছেন?’Ñএভাবেই

প্রিয় জায়গা থেকে মুছে যাবে

আমার নাম-নিশানা

ওপারে জানব না

হাভাতে থাকা মা আমার

ভাতের বদলে পান চিবোতে চিবোতে

দিনমান কাটিয়ে দেন কি না

পৃথিবীর দুঃখদৈন্য আমায় তখন

কে জানাবে কে শুধাবে

জানব না

তোমরা কি আগের মতোই আছো

নাকি দলরঁজন টিভি চ্যানেলের খবরের মতো

নিপট বদলে গেছো সুবিধাবাদের পাপে

জানব না গ্রহ-বৈগুণ্যের কবলে পড়া

এ দেশের গণতন্ত্রের কী হাল!

ধরাধাম থেকে আমি তখন অজানা আলোকবর্ষ দূরে;

দিব্যধামে।

মুহাম্মদ জাকির হোসেন : কবি। লেখক। সিনিয়র সাংবাদিক।

মতলব সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।

৩১৯, দক্ষিণ কলাদী

মতলব দক্ষিণ, চাঁদপুর

৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রি.

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়