প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:১৮
শত বছর ধরে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে বাজাপ্তী রমনী মোহন উচ্চ বিদ্যালয়

বাজাপ্তী রমনী মোহন উচ্চ বিদ্যালয় একটি শতবর্ষী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯১৮ সালে রমনী মোহন পাল চৌধুরী এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। এর প্রতিষ্ঠাকালীন প্রথম প্রধান শিক্ষক ছিলেন পেয়ারী চন্দ্র দে। প্রতিষ্ঠার পর বিদ্যালয়টি প্রায় তিনবার নদীভাঙ্গনের শিকার হয়। বর্তমানে ঐতিহ্যবাহী এ বিদ্যালয়টি হাইমচর উপজেলার নয়ানীলক্ষ্মীপুরে অবস্থিত।
বিদ্যালয়সূত্রে জানা গেছে, ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠার মাত্র তিন বছর পর বিদ্যালয়টি প্রথম স্বীকৃতি লাভ করে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ১৯৮৪ সালে প্রথম এমপিওভুক্ত হয়। মেঘনাপাড়ের ঐতিহ্যবাহী এ বিদ্যাপীঠে বহু দেশবরেণ্য ব্যক্তিত্ব শিক্ষা অর্জন করেছেন, তাঁর মধ্যে অন্যতম হলেন সাবেক এমপি প্রফেসর আব্দুল্লাহ, এসএ সুলতান টিটু এবং মেজর জেনারেল (অব.) জীবন কানাই দাস।
বিদ্যালয়সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন ৪৯৫ জন শিক্ষার্থী। শিক্ষক সংখ্যা ১২ জন। তবে রয়েছে অবকাঠামো ও শিক্ষক সঙ্কট। প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মান্নান জানান, বিদ্যালয়ের জন্য নতুন একটি ভবন খুব প্রয়োজন। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এর জন্য আবেদন করা হয়েছে। এছাড়া ৭টি শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে একজন সহকারী প্রধান শিক্ষক; সহকারী শিক্ষক ভৌত বিজ্ঞান, ইসলাম শিক্ষা এবং চারু ও কারুকলা। এছাড়া তিনটি অতিরিক্ত শাখার অনুকূলে তিনজন সহকারী শিক্ষক প্রয়োজন।
বিদ্যালয়ের গত তিন বছরের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা ধারাবাহিকভাবে ভালো ফলাফল অর্জন করছে। ২০২২ সালে ৯৪ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে ৮৬.৯৬ শতাংশ পাস করেছে। ২০২৩ সালে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বেড়ে ১০৮ জন হয়েছে এবং পাসের হার ৮৭.৬২ শতাংশ। ২০২৪ সালে ১১১ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে, পাস করেছে ৭৮.৩০ শতাংশ।
অভিভাবক এইচএম আমিনুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের পড়াশোনার মান দিনে দিনে উন্নত হচ্ছে। বিদ্যালয়ের সুন্দর ও মনোরম পরিবেশ শিক্ষার্থীদের মন প্রফুল্ল রাখে। তবে গড় ফলাফল আরও ভালো হওয়া দরকার।
বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক মেরিনা আক্তার জানান, লেখাপড়ার পাশাপাশি বিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিষয়ের ক্লাব রয়েছে। আছে বিজ্ঞান ক্লাব, ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব, গণিত ক্লাব ও বিতর্ক সংঘ। শিক্ষার্থীরা এসব ক্লাবে অংশগ্রহণ করে নতুন কিছু শিখতে পারে। তার লক্ষ্য, বিদ্যালয়কে উপজেলাকে পেরিয়ে জেলায় এবং জেলাকে পেরিয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করানো। ইতোমধ্যে বিদ্যালয়টি উপজেলায় বহুবার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে। তিনি আশা করেন, ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে।
প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মান্নান বলেন, বাজাপ্তী রমনী মোহন উচ্চ বিদ্যালয় একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মেঘনার ভাঙ্গনের শিকার হলেও বিদ্যালয়টি গৌরবের সঙ্গে টিকে আছে। ২০১৬ ও ২০২৩ সালে উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। শিক্ষার মান ও সহপাঠক্রমিক কার্যক্রমে এগিয়ে থাকার চেষ্টা করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা আনন্দের সঙ্গে এখানে পড়ুক এটাই তাঁর মূল লক্ষ্য।