প্রকাশ : ১৬ মার্চ ২০২২, ২২:৩৮
প্রধান শিক্ষকসহ সহকারী প্রধান শিক্ষক অনুপস্থিত!
দেশগাঁও জয়নাল আবেদীন উচ্চ বিদ্যালয়ে হ-য-ব-র-ল অবস্থা
হাজীগঞ্জের নাম করা একটি বিদ্যালয়ের নাম ‘দেশগাঁও জয়নাল আবেদিন উচ্চ বিদ্যালয়।’ ১০নং গন্ধর্ব্যপুর দক্ষিণ ইউনিয়নে এটির অবস্থান। বিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ ক্লাস শুরুর প্রথমদিন ১৫ মার্চ বেলা ১টায় বিদ্যালয় ছুটি হয়ে যাওয়া, বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মনির হোসেন, সহকারী প্রধান শিক্ষক আবু তাহের চৌধুরী অনুপস্থিত থাকা, ক্লাস রুটিনে প্রধান শিক্ষকের নাম না থাকা মানে ক্লাস না নেয়া, অহিদুল ইসলাম নামের এক শিক্ষক ঠিকাদারিতে ব্যস্ত থাকায় সাম্প্রতিক সময় বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পাঠদান ও প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় হ-য-ব-র-ল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে বহু অভিভাবক তাদের সন্তানদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
|আরো খবর
গত মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি বিধি মোতাবেক বিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ ক্লাস শুরুর প্রথমদিন প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক ও আরো দুজন সহকারী শিক্ষক অনুপস্থিত রয়েছেন। এদিনই বিদ্যালয়টি বেলা ১টার সময় ছুটি দিয়ে দেয়া হয়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে সারাদেশের মতো দেশগাঁও জয়নাল আবেদীন উচ্চ বিদ্যালয়টিও দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। পরবর্তীতে বিদ্যালয়টি খোলার পর থেকে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে অনিয়মিত থাকার কারণে রুটিন মোতাবেক ক্লাস নিতে পারছেন না অন্য শিক্ষকবৃন্দ।
অভিভাবকরা আরো বলেন, এমপিওভোগী কিছু শিক্ষক যথাযথ দায়িত্ব পালন না করার কারণে বিদ্যালয়টির শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিষয়টি জানার পরও বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিভাবকরা অভিযোগ করেন।
সরেজমিনে গেলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষক জানান, ৬ জন শিক্ষক দিয়ে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির পাঠদান করা যায় না। তাই এদিন দুপুরের পর শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়ে দেয়া হয়েছে।
বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বেশ কিছু শিক্ষার্থী জানান, প্রায় সময় তারা শ্রেণি কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত। এক বিষয় পাঠদান হলে, অন্য বিষয় ফাঁকা থাকে। অর্থাৎ শ্রেণিকক্ষে স্যার না আসার কারণে পাঠদান হয় না। আজও (১৫ মার্চ) বিরতির সময় ছুটি দেয়া হলো।
সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ তাহের হোসেন চৌধুরী মুঠোফোনে জানান, তিনি হার্টে অপারেশন করিয়েছেন, তাই ছুটিতে আছেন। অথচ তার সহকর্মীরা জানান, গত বছরের সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরের দিকে তার হার্টের অপরেশন হয়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছুটির আবেদনটি আমার ছেলের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষকের বাসায় পাঠিয়েছি।
প্রধান শিক্ষক মোঃ মনির হোসেন মুঠোফোনে জানান, তার পা ভেঙ্গে গেছে, তাই তিনি সভাপতির কাছ থেকে আগামী মাসের (এপ্রিল) ১০ তারিখ পর্যন্ত ছুটি নিয়েছেন। সহকারী প্রধান শিক্ষকের ছুটির বিষয়ে তিনি বলেন, তাহের সাহেব অসুস্থ। তাই তিনি আমার কাছ থেকে মৌখিক ছুটি নিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, আমার (প্রধান শিক্ষক) ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের অবর্তমানে সুধীর সাহেব (সহকারী শিক্ষক) দায়িত্ব পালন করছেন।
সহকারী শিক্ষক সুধীর সরকার চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান, তাকে লিখিতভাবে বা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধান শিক্ষক দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন নি। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মোঃ সামছুল আলম সরকার (স্বপন)-এর মুঠোফোনে একাধিকার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। এমনকি পরবর্তীতে তিনি আর ফোন ব্যাক না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
উপজেল মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এ বিষয়ে আমি শুনেছি, বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) রাশেদা আক্তার মুঠোফোনে জানান, এমন কিছু হয়ে থাকলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।