প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০:০৩
ডাকাতি প্রতিরোধে পুলিশের চেকপোস্ট স্থাপন
কচুয়ায় ডাকাত আতঙ্ক কাটছেনা ক্ষতিগ্রস্ত ৫ পরিবারের
কচুয়া উপজেলার আশ্রাফপুর গ্রামে মাহমুদা চৌধুরী ও আমুজান গ্রামের ডা. রুবেলের বাড়িতে ১০ সেপ্টেম্বর ও ১৩ সেপ্টেম্বর নাউলা গ্রামের চাউল ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নানের বাড়িতে ডাকাতি সংঘটিত হয়। সবগুলো ডাকাতিতে মুখোশধারী ডাকাতদল বাড়ির কলাপসিবল গেইেটের তালা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে হালাকুখান স্টাইলে তান্ডব লীলা ও ত্রাশ সৃষ্টি করে। এতে ৩ বাড়ির ৫ পরিবারের ২৫/২৬ জন সদস্য দারুণভাবে আতংকিত হয়। কেউ কেউ আক্রান্ত হয় আতঙ্ক রোগে।
|আরো খবর
ডাকাত চক্র ব্যপক মারধর করে গৃহের লোকজনদেরকে। ৪/৫ বছরের বয়সি শিশুরা হাউ মাউ করলে তাদের সামনে অস্ত্র ধরে হত্যা করার হুমকি দিয়ে হাউ মাউ বন্ধ করায়। সম্ভ্রম লুটে নেয়ার হুমকিও দেয় নারীদেরকে।
কারো কারো ঘাড়ের উপর রামদা ধরে হত্যা করার হুমকি দিয়ে আলমারীর তালার চাবি দিতে বাধ্য করায়। বেদম মারধর করে হাত-পা বেঁধে জিম্মি করে লুটে নয়ে ঘরে থাকা নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার। মাহমুদা চৌধুরীর বাড়িতে ডাকাতি করে মাহমুদার গৃহে ও ভাড়াটিয়া শিক্ষিকা বাবলি রানীর গৃহে। মাহমুদার চৌধুরীর অষ্টম শ্রেণিতে পড়–য়া কন্যা নুসরাত (১৩), বাবলি রানীর শাশুড়ি ঝর্ণা রানী সরকার (৬৬) শিশু পুত্র মিশু (৪) ডাকাতরা রামদা নিয়ে তাদেরকে হত্যা করতে ধেয়ে আসছে এমনিদৃশ্য ঘুমের ঘোরে (স্বপ্নে) দেখতে পেয়ে বিকট চিৎকার দেয়। প্রায় প্রতি রাতেই এমনি দৃশ্য দেখে তারা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। ঘুমের ঘোরে একই ধরণের দৃশ্য দেখে ডা. রুবেল তালুকদারের মা নার্গিস আক্তার (৫৫) ও তাঁর স্ত্রী তামান্না (২৭)।
নাউলা গ্রামের চাউল ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান ও তার ছোট ভাই আব্দুল কাদেরের গৃহে ডাকাতিকালেও অনুরূপ তান্ডব লীলা ও ত্রাশ চালায় ডাকাত দল। ডাকাতদের অস্ত্রের ঝনঝনানি, গৃহের লোকজনদেরকে মারধর ও রশি দিয়ে বাঁধার দৃশ্য দেখে আব্দুল মান্নানের স্ত্রী শামসুন্নাহার (৪৫) স্ট্রোক করে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। তিনি এখনো সুস্থ্য হয়ে উঠতে পাড়েননি। উপরোক্ত ৫ পরিবারের ৬ জন সদস্যই এখন দারুণ আতঙ্ক রোগে ভুগছে। সূর্য অস্তমিত হয়ে রাতের অন্ধকার নেমে আসার সাথে সাথে তাদের আতঙ্করোগের মাত্রা ভেড়ে যায়। তাড়া করে তাদেরকে ডাকাত আতঙ্ক।
এদিকে উল্লেখিত লোমহর্ষক ডাকাতির ঘটনায় প্রভাব পড়েছে কচুয়া উপজেলার সকল অঞ্চলের অধিবাসীদের উপর। সকলেই এখন সতর্ক অবস্থায় রাত্রিযাপন করছেন। সংঘটিত ডাকাতিতে অংশ গ্রহণকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই পুলিশ উপজেলার উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণের প্রবেশ পথে চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহন, যাত্রী ও পথচারীদের তল্লাশি চালিয়ে আসছে। বসে নেই জনপ্রতিনিধিরাও। বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা, স্বেচ্ছাসেবক ও চৌকিদারদের দিয়ে গ্রামকে ডাকাতি থেকে রক্ষা করতে পালাক্রমে পাহারার ব্যবস্থা করেছেন।
এ ব্যাপারে আশ্রাফপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ এলাহী সুবাস, গোহট দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহরিয়ার শাহীন ও গোহট উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির হোসেনেকে ডাকাতি প্রতিরোধে গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে ও পুলিশের চেকপোস্ট স্থাপনে উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা নিতে দেখা যায়।
কচুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মহিউদ্দিন জানান, ডাকাতি প্রতিরোধে চেকপোস্ট স্থাপন করা ছাড়াও রাতে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে পুলিশি টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। তিনি সংঘটিত ডাকাতিতে অংশ গ্রহণকারী ডাকাতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।