বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২১, ১২:৪৭

মাংস রান্নায় স্বাদ হয়নি বলে গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা

অনলাইন ডেস্ক
মাংস রান্নায় স্বাদ হয়নি বলে গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা

স্ত্রীর রান্না করা মাংস খেয়ে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন স্বাদ পাননি। মাংসের স্বাদ তেতো হওয়ার ঘটনা প্রতিবেশীদেরও ডেকে দেখানো হয়। কেন ভালো রাঁধতে পারেননি তাই স্ত্রীকে ইচ্ছে মত মারলেন স্বামী। ঘটনাটি ঘটে বাঁশখালীর পুকুরিয়া ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামে কোরবানির মাংস রান্না স্বাদ না হওয়ায় আইরিন আক্তার (২১) নামের এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার পর স্বামী, শ্বশুর ও ভাসুর পলাতক রয়েছেন।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১০ আগস্ট বাঁশখালী উপজেলার পুকুরিয়া ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামের অটোরিকশাচালক হারুনুর রশিদের সঙ্গে সাধনপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ সাধনপুর গ্রামের আবু ছালেকের মেয়ে আইরিনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের টাকার জন্য নানা ভাবে চাপ দেয়া হতো আইরিনকে। এসব বিষয়ে গ্রাম্য শালিসও হয়েছিলো।

ঈদুল আযহার দিন ২১ জুলাই স্বামী হারুনুর রশিদ স্থানীয় এক প্রতিবেশীর দেয়া কোরবানির গরুর মাংস এনে আইরিনকে রান্না করতে দেন। আইরিন ওই মাংস রান্না করেন। মাংস খেয়ে তরকারির স্বাদ হয়নি বলে অভিযোগ করেই আইরিনকে টার্চার শুরু করে। জখম হয়ে আইরিন নিরবে কাঁদতে থাকে। ঈদের দিন থেকে গত শনিবার পর্যন্ত আইরিন শরীরের ব্যথা নিয়ে সাংসারিক কাজ করেছেন ঠিকই কিন্তু কোন খাবার খাননি। শনিবার আনুমানিক সকাল ৯টায় পূর্বের ঘটনা নিয়ে বাকবিতণ্ডা হলে হারুণ আবারো মারে তার স্ত্রীকে। এতে আইরিন অচেতন হয়ে পড়লে পরিবারের লোকজন তাকে গোপনে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মৃত্যুর সংবাদ শুনে এ সময় হাসপাতালে লাশ ফেলে কৌশলে সবাই পালিয়ে যায়। পরে বাঁশখালী থানা পুলিশ শনিবার রাতে আনোয়ারা উপজেলা হাসপাতালে স্বামীর ফেলে যাওয়া গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। আইরিন আক্তারের শাশুড়ি নুর বানু গণমাধ্যমকে বলেন, মাংসের রান্না স্বাদ না হওয়ায় আইরিনকে আমার ছেলে পিটিয়েছে ঠিক, কিন্তু হত্যা করেনি। তবে ছেলে বলেছে, ওড়না পেঁচিয়ে বউ আত্মহত্যা করেছে। কিভাবে আইরিন মারা গেছে, কোথায় ওড়না পেঁচানো হয়েছে আমি দেখিনি।

আইরিনের বাবা আবু ছালেহ এবং মা শামশুন্নাহার গণমাধ্যমকে বলেন, আমার মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা করেছে তার স্বামী। হত্যার পর তারা আমার মেয়ের লাশ গায়েব করার চেষ্টা করেছিল। আমার মেয়ের হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। সাধনপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ সাধনপুর গ্রামের ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আইরিনের যৌতুকলোভী স্বামী হারুনুর রশিদের অত্যাচারে দফায় দফায় সালিশ বসে। সালিশে হারুনুর রশিদের দোষ প্রমাণিত হত। মূলত যৌতুক না পেয়েই মাংস রান্নার অজুহাতে আইরিনকে হত্যা করেছে।

আনোয়ারা হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবু মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, গৃহবধূ আইরিনকে তার স্বজনরা মৃত অবস্থায় হাসপাতালে এনেছিল। বাঁশখালীর রামদাশ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক মিনহাজ মাহমুদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছে। এখন আইরিনের মৃত্যুর বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে আইরিনের লাশ আইরিনের বাপের বাড়িতে দাফনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইরিনের বাবা-মা। বিষয়টি তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়