শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫  |   ৩৩ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পরপরই তার্কিশ এয়ারলাইন্সের ইঞ্জিনে আগুন

প্রকাশ : ২৪ মে ২০২৫, ০৮:০৫

দশ বছরেও কেনা হয়নি নতুন বই

পাঠকশূন্য চাঁদপুর পৌর পাঠাগার

আলআমিন হোসাইন
পাঠকশূন্য চাঁদপুর পৌর পাঠাগার

lচাঁদপুর পৌর পাঠাগারে রয়েছে প্রায় ১০ হাজার বই। সাজানো-গোছানো পরিবেশ, প্রশস্ত হলরুম, ফুলে ঘেরা মনোরম প্রাঙ্গণ আর পাশেই শান্ত স্রোতে বইছে ডাকাতিয়া নদী। সব মিলিয়ে বইপড়ার এক অপূর্ব পরিবেশ। অথচ পাঠকের দেখা মেলে খুবই কম। তাছাড়া গত দশ বছরেও পাঠাগারটির জন্যে কেনা হয়নি একটি নতুন বইও।

জানা গেছে, ১৯৬৫ সালের ২৪ পৌষ (১৩৭১ বঙ্গাব্দ) চাঁদপুর শহরের কবি নজরুল সড়কে তৎকালীন পৌরসভা সভাপতি, মহকুমা প্রশাসক মো. নূরুল কাদের খান, সিএসপি এই পাঠাগারের উদ্বোধন করেন। এক সময় এটি ছিলো বইপ্রেমীদের মিলনমেলা। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যেনো হারিয়ে ফেলেছে সেই প্রাণচাঞ্চল্য।

তাইয়্যেব হোসাইন নামে এক পাঠক জানান, নিরিবিলি পরিবেশে বই পড়ার জন্যে পাঠাগারটি যথেষ্ট উপযোগী। কিন্তু আধুনিকায়ন ও সমসাময়িক বইয়ের অভাব রয়েছে। পাঠাগারে যেনো নূতন বই রাখা হয় সেজন্যে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

সরজমিনে দেখা গেছে, বর্তমানে পাঠাগারে রয়েছে ধর্ম, গবেষণা, চিকিৎসা, বিজ্ঞান, ইতিহাস, রাজনীতি, সাহিত্যসহ নানা বিষয়ের প্রায় ১০ হাজার বই। গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ জানায়, রাজনীতি ও গল্পনির্ভর বইয়ের পাঠক সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। এছাড়া জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা পাঠের সুযোগও রয়েছে পাঠাগারে।

চাঁদপুর পৌর পাঠাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী মো. মাহবুব আলম জানান, পাঠকদের চাহিদা বিবেচনায় রেখে বই সংগ্রহের চেষ্টা করা হচ্ছে। নিরিবিলি পাঠের উপযোগী পরিবেশও নিশ্চিত করা হয়েছে। সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতি রোববার থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পাঠাগারটি খোলা থাকে।

এদিকে জেলার সচেতন নাগরিক ও শিক্ষাবিদরা মনে করেন, প্রযুক্তির প্রসারে নতুন প্রজন্ম বইবিমুখ হয়ে পড়ছে। তাই বইমুখী সমাজ গড়তে অভিভাবক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।

সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), চাঁদপুর-এর সদস্য রফিক আহমেদ মিন্টু বলেন, চাঁদপুর পৌর পাঠাগার অনেক পুরোনো একটি প্রতিষ্ঠান। একসময় পাঠকদের পদচারণায় পাঠাগারটি রমরমা ছিলো। ব্যাপক পাঠক সমাগত হতো। তিনি বলেন, কোনো একটি বিষয় সম্পর্কে বই কিংবা পাঠাগার যা দিতে পারে, মোবাইল কিংবা ইন্টারনেট তা দিতে পারে না। তাই বইমুখী হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।

পাঠাগারের সহকারী গ্রন্থাগারিক রাজিয়া সুলতানা বলেন, গত দশ বছরে পাঠাগারের জন্যে কোনো বরাদ্দ আসেনি। ফলে নতুন বই কেনা সম্ভব হয়নি। তবে গত বছর তৎকালীন মেয়র কিছু বই দিয়েছিলেন।

পাঠাগারে পাঠক টানতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে চাঁদপুর পৌরসভার প্রশাসক মো. গোলাম জাকারিয়া বলেন, চাঁদপুর পৌর পাঠাগারটি একসময় অবহেলিত ছিলো। আমরা ভবনের সংস্কার করেছি, বাগান পরিষ্কার করেছি এবং পাঠের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করেছি। জেলা পরিষদের মাধ্যমে ৩-৪ লাখ টাকার বই কেনার জন্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আবেদন পাঠানো হয়েছে, যা বর্তমানে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। বরাদ্দ পেলে আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পাঠাগারে পাঠানোসহ পাঠক বাড়ানোর কার্যক্রম শুরু করবো।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়