শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫  |   ৩৩ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পরপরই তার্কিশ এয়ারলাইন্সের ইঞ্জিনে আগুন

প্রকাশ : ২৪ মে ২০২৫, ১১:০৭

পাঠক ফোরামের কবিতা

অনলাইন ডেস্ক
পাঠক ফোরামের কবিতা

মুহাম্মদ আরিফ বিল্লাহ এক পৃথিবী গ্যালারি

দর্শকপূর্ণ এক পৃথিবী গ্যালারি

গ্যালারির সামনে বিধ্বস্ত মাঠ; ফিলিস্তিন।

বিকট শব্দে জ্বলে ছারখার জয়তুনের ফুল

সবার চোখে নেশার ঘোর

কারো চোখেই ফাউল ধরা পড়ে না

সবাই অনৈতিক গোল উৎসবে মাতোয়ারা।

সাদা কাপড়ে মোড়ানো লাশ বাঁকা হয়ে

আকাশে উঠে; বেদনার চাঁদ হয়ে,

কলিজার শিশু, আশ্রয়ের বাবা মা আদরের বোন

আর প্রেমের স্ত্রী কেউ বেঁচে নেই

এক পৃথিবী দর্শক নিন্দা জানায়;

অথচ আমি আমাদের মানবতা মুছে যায়।

বিস্ফোরিত শিশুর দেহ যে আকাশে উড়ে

মুয়াজ্জিনের বুলন্দ আওয়াজ যেথায় ক্ষত বিক্ষত

যে জমিন পুড়ে ছাই বারুদের কষাঘাতে

মনে রেখ আমি সেখানে ভীত নই

আমার ঈমান আমার জান্নাতের সারথি।

কি জবাব দেবে মুসলিম উম্মাহ?

কি জবাব দেবে আধুনিক মানবতা?

এ উপত্যকার প্রতিটি অণু-পরমাণু সাক্ষিÑ

মহান রবের দাসত্ব করতে একাই লড়েছিল

গাজার প্রতিটি ঈমানদীপ্ত মুজাহিদ।

আমাকে ক্ষমা কর গাজা, আমাকে ক্ষমা কর ফিলিস্তিন।

আমি শাসক নই, জনতার কাতারে;

জনতার সমুদ্রে এসে প্রতিবাদ করা ছাড়া কোন যোগ্যতা নেই আমার।

কবির হোসেন মিজি

পুরুষ

পুরুষ

এই শব্দটার সঙ্গে যেন জন্ম থেকে জুড়ে

দেওয়া হয় এক অলিখিত শপথ।

তুমি কাঁদতে পারো না, তুমি ভাঙতে পারো না,

তুমি ক্লান্ত হতে পারো না।

সেই সকাল থেকে রাত, শহর থেকে গ্রাম, ট্রেন থেকে ফেরি

একটা ছায়ার মতো বয়ে চলে,

নিজের ভেতরের ঝড়টাকে চুপচাপ বুকে নিয়ে।

সে বাবার চোখে দায়িত্ব,

মায়ের কাছে নির্ভরতা,

ভাইয়ের কাছে সাহস,

প্রেমিকার কাছে ভরসা,

সন্তানের কাছে প্রাচীর।

তবু, কেউ কখনও জিজ্ঞেস করে না,

তুমি কেমন আছো?

তুমি কি একটু থামতে চাও?

তোমার তো চোখের কোণে লুকিয়ে থাকা কান্নাও আছে।

পুরুষ কখনোই কাঁদে না,

সে রাতে উঠে জানালার পাশে বসে থাকে,

আকাশের দিকে তাকিয়ে এক ফোঁটা জল পড়লেও বলে

এটা ঘাম ছিলো, চোখে এসে পড়েছে।

পুরুষ নিঃশব্দে ভালোবাসে।

তাকে বকো, ভুল বোঝো, ভুলে যাও

তবু সে প্রতিদিন ঠিক সময়মতো দরজায় দাঁড়িয়ে থাকে,

কারণ সে জানে,

দায়িত্ব মানে কখনও কখনও নিজেকে ভুলে যাওয়া।

পুরুষ

সে এক অসমাপ্ত কবিতা,

যার প্রতিটি লাইনে লুকিয়ে থাকে না বলা অনুভব,

অধিকার না পাওয়ার কান্না,

আর শত সহস্র ভালবাসা।

ছবি-৪০

সুমন কুমার দত্ত

সংক্ষিপ্ত আখ্যান

প্রায় দেড়শো মাইলের কথোপকথন, স্বরব্যঞ্জন মিশে একাকার টলমলে দুপুর।

গন্তব্যের হুঁইসেলে বিচ্ছেদ হওয়া এক একটা স্টেশন, খুঁজে পায় সন্ধ্যা তারার প্ল্যাটফর্ম।

অতঃপর অনুভূতির বসন্ত উড়ে যায় পলাশ ডাঙায়।

তবুও ঠিকানা রাখা হয়নি তাঁর।

* চৌহদ্দি

তোমার বিস্তৃত সত্তায় রাঙারোদে একটা ঘর বানাবো একদিন, কৃষ্ণচূড়ার ছায়ায় আচ্ছন্ন বসন্তের ঝরা পাতার ছাউনি হবে চতুষ্কোণ।

অরণ্যের অগ্নিশিখা কিংবা পলাশে কোকিল পাহারায় হবে উত্তরণ, জানালা হবে গৌর পূর্ণিমা মৃদু হাওয়ায় সন্ধ্যাতারার আকাশ।

ভোরের দূর্বা ঘাসে সূর্যের উঁকি আর ডাহুক শালিকের অভয়ারণ্য হবে তোমার উঠোন।

নিবিড় সম্ভার উঞ্চতা হবে তোমার ভিটেমাটির খতিয়ান, পবিত্র নিগূঢ়তায় আমার অস্তিত্ব খুঁজে আকুতির উর্বর অংকন হবে তোমার চৌহদ্দি।

* অকাল নিস্তব্ধতা

শেষকৃত্যে প্রশস্ত সরণি নির্বিকার চিৎকার

বুকজুড়ে নিঃশব্দ ব্যারিকেডে বর্ষণ অনবরত

তোমার অকাল নিস্তব্ধতায় আজ প্লাবিত নগর

শূন্যতার প্রলেপ মেখে তুমি এখন দূরের আকাশ।

একদিন আমিও তোমার পথের সঙ্গী হবো

স্বর্গের অলিগলি হেঁটে উত্তর নিবো মুখোমুখি হলে

এত কিসের তাড়া ছিলো ভগবানকে দেখবার।

জন্মের ভিড়ে মৃত্যুও অন্বেষী, সে ধারাবাহিকতায় তুমিও

প্রার্থনা, পূণ্যাত্মা হয়ে পাড় হও বৈতরণী আর উড়ে বেড়াও স্বর্গের অমরাবতী।

*

রোডম্যাপ

রাতের নাভিকুন্ডে পূর্বের হাটবাজার

সূর্যের হাঁক-ডাকে জমে জমে স্তুপ অনুভূতি

লাভ ক্ষতির হিসেব কষে চাওয়া পাওয়া আজ বাক্সে বন্দি।

এভাবেই রোজ, রাতের সাথে দিনের সন্ধি বিচ্ছেদে একটা মীমাংসিত রোডম্যাপের অপেক্ষায় বয়ে যায় হাট।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়