প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৯:৪৩
সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয় আইল্লার বিল এলাকায় : জনদূর্ভোগ চরমে
সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয় আইল্লার বিল এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়ি-ঘরে। ফলে বসবাসরত মানুষের মাঝে দেখা দেয় চরম দুর্ভোগ। গতকাল ১৯ সেপ্টেম্বর টানা বৃষ্টির ফলে শহর এলাকাসহ নির্মাঞ্চলের অনেক বাড়িঘরেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। প্রবল বর্ষণের কারনে উঠোন বাড়িঘরসহ পুকুর নালা ডোবা, খাল বিল অনেকটাই পানিতে পরিপুর্ন হয়ে পড়ে।
|আরো খবর
অনেকের পুকুরের মাছ বেড়িয়ে যাওয়ায় অনেকেই আর্থিক ক্ষতির সন্মুখীন হন। তবে এসকল এলাকার পানির জলাবদ্ধতা তেমন স্থায়ী হতে দেখা যায় না, বৃস্টি কমলেই তা ধীরে ধীরে নদীতে নেমে যায়। কিন্তু শহরের পুরানবাজার এলাকার আইল্লার বিলের চিত্র একটু ব্যাতিক্রম হয়েই দেখা দেয়। গতকাল আইল্লার বিল এলাকার কয়েকটি বাড়ি ঘরে গিয়ে দেখা গেল বসতরত মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগ। তাদের বাড়িঘর বৃস্টির পানিতে পরিপূর্ন।
জলমগ্ন বাড়ির আঙ্গিনায় বসে জমে যাওয়া বৃস্টির পানিতেই ধোয়া মোচার কাজ করছেন নারীরা। রান্না খাওয়ার কাজ করছেন খাটের উপর। প্রয়োজনীয় জিনিষপত্রের অনেকটাই পানিতে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে এদিক সেদিক। তবে তাদের এমন পরিস্থিতি এখন অনেকটাই অন্ধের ঢেকি গিলার মত অবস্থা। বহুবার সমষ্যা নিরষনের জন্য এলাকার কাউন্সিলরের কাছে গিয়েও সমষ্যার সমাধান পাওয়া যায়নি। বার বারই অাশ্বাসের বানী শুনে ফিরে এসেছেন বাড়ি ঘরে। আর বৃস্টির পানিতে পরিপূর্ন হয়ে নীরবে নিভৃতে তা মেনে নিয়েছেন বিধাতাকে দোষারুপ করে। জলাবদ্ধতার কথা জানাতে গিয়ে অনেকটাই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন ষাটোর্ধ বৃদ্ধ রাজ্জাক ছৈয়াল তিনি বলেন আজ অনেক বছর ধরে এখানে বাস করছি। ছেলে মেয়ে এস্থানেই বড় হয়েছে। তখন এমন জলাবদ্ধতা দেখা দিত না, বাড়িঘরে জমা হতো না বৃস্টির পানি, বর্ষার সময়ও ঘর দরজা থাকতো পানির হাত থেকে অনেকটা নিরাপদ।
বৃস্টি বা জোয়াড়ের পানি অনায়াষে নেমে যেত পুকুর বা ডোবায়। কিন্তু বর্তমান সময় এসকল পানি আর নামতে না পারায় আমাদেরকে নিদারুন কস্টের মধ্যে দিন অতিবাহিত করতে হয়। সামান্য বৃস্টি আসলেই আমরা আতংকিত হয়ে পড়ি। ভাত তরকারিসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে রাখতে হয় খাটের উপর। একই কথা বললেন এলাকায় বসতরত দরবেশ। তিনি জানান সামান্য বৃস্টি হলেই অত্র এলাকার অনেক ঘরের বাসিন্দারা বৃস্টির পানির কাছে জিম্মি হয়ে পড়ে। তাদের বাড়িঘর হয়ে পড়ে পানিবন্ধী। জোয়াড়ের পানি ভাটার টানে নেমে গেলেও আমাদের বাড়িঘরের পানি নামার মত তেমন কোন সুযোগ থাকে না। ফলে জমে থাকা পানিই আমাদের কস্ট হয়ে দাড়ায়।
আমরা অনেকবার পৌর কাউন্সিলরের কাছে গিয়েছি কিন্তু সমষ্যার সমাধান হয়নি। আমরা বলেছিলাম কয়েকটি পাইবের মাধ্যমে এসমষ্যার সমাধান সম্ভব। কিন্তু তা নিরষনে কেউ এগিয়ে আসেনি। একই অবস্থা মহেন্দ্র সাহার বাড়িসহ আরো কয়েকটি বাড়ি ঘরের। এসকল বাড়িঘরের মানুষকে বৃস্টি হলেই চরম দর্ভোগ পোহাতে হয়। জুতা মোজা হাতে নিয়ে খালি পায়ে বৃস্টির পানির মধ্যে দিয়েই চলাচল করতে হয়। আগে এসকল বাড়িঘরের পানি পার্শ্বস্থ পুকুরে নেমে গেলেও বর্তমান সময় সাবেক পৌরমেয়র ছিদ্দিকুর ররহমান ঢালীর বাড়ি সংলগ্ন রাস্তার পাশে থাকা পুকুর, মহেন্দ্র সাহার বাড়ির পুকুর, আইল্লার বিলসহ খালের দক্ষিন পাড়ের অনেক পুকুর ডোবা নালা ভরাট হয়ে যাওয়ায়, আশে পাশে থাকা বাড়িঘরের পানি এখন আর তেমন ভাবে নামতে পারছে না।
ফলে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। বেড়ে যায় মানুষের চরম দুর্ভোগ। পৌরমেয়র সহ এলাকার কাউন্সিলর বিষয়টি বিবেচনা পূর্বক সমষ্যার সমাধান করবেন এমনটাই দাবী ভূক্তভোগী পরিবারগুলোর।
চাঁদপুর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার এর অফিসার ইনচার্জ শাহ মুহাম্মদ শােয়েব বলেন, চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। চাঁদপুরে ১৬১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৬.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বনিন্ম তাপমাত্রা ছিল ২৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী ৭২ ঘন্টায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে।