প্রকাশ : ০৯ মার্চ ২০২৫, ২২:৩৭
হাজীগঞ্জে যুবকের মৃত্যুতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

হাজীগঞ্জের বাকিলা ইউনিয়নের বোরখালে সিয়াম (১৮) নামের এক যুবকের মৃত্যু নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সিয়াম ঐ গ্রামের মোল্লা বাড়ির শাহাবুদ্দিনের ছেলে। সিয়ামের সাথে পাশের ফুলছোঁয়া গ্রামের বৈদ্যবাড়ির ইব্রাহিমের ছেলে শাকিলের দুষ্টামির ছলে হাতাহাতির ঘটনাকে অনেকে সামনে আনছে বলে জানান স্থানীয়রা। যে ঘটনাটি সিয়ামের মৃত্যুর আগের দিন ঘটে। তবে সিয়ামের মা শাহিন বলছেন, ছেলের মৃত্যু নিয়ে কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। তার ছেলে মৃগী রোগী ছিলো।
স্থানীয়দের সাথে ও নিহতের পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায়, সিয়ামদের বাড়ির সামনে হারুনের দোকানে গত শনিবার (৮ মার্চ ২০২৫) সকালে সিয়াম আর শাকিলের মধ্যে সামান্য বিষয় নিয়ে মারামারি হয়। ঘটনাটি সেখানেই শেষ হয়ে যায় বলে জানান স্থানীয়রা।
ঘটনার পরের দিন রোববার (৯ মার্চ ২০২৫) সকালে সিয়াম কাজের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে বাড়ির সামনে এসে বমি করে মাটিতে পড়ে যায়। পরে তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে পাশের বাকিলা বাজারে নিয়ে আসলে পল্লী চিকিৎসক তাকে স্ট্রোকজনিত মৃত্যু হয়েছে বলে আলামত দেখে জানায়। পরে সিয়ামের লাশ বাড়িতে নিয়ে আসা হয় এবং একইদিন বাদ জোহর সিয়ামকে পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হয়।
এদিকে সিয়াম মারা যাওয়ার পর সিয়ামের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা দেয়া হবে বলে সেই দোকানী হারুন আশ্বস্ত করার পর স্থানীয়দের মাঝে সিয়ামের মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন উঠে।
এ বিষয়ে শাকিলের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি জানান, আমি সিয়ামকে সাথে নিয়ে সবসময় অন্যের জমিতে কাজ করি। তার সাথে আমার প্রায় সময় দুষ্টামির ছলে হাতাহাতি হয়। এটাকে অনেকে রং লাগানোর চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে দোকানী হারুন জানান, সিয়ামরা অনেক গরিব। আমার চাচাতো ভাই আমেরিকায় থাকে এবং এলাকার গরিদের সহযোগিতা করে। সে হিসেবে আমি বললে ভাই আমেরিকা থেকে টাকা পাঠায়। আর সেই হিসেবেই আমি সিয়ামের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা দেবো বলেছি।
আমার ছেলেটাকে আজকে মাটি দিয়ে আসলাম বলে কান্না করতে শুরু করলেন সিয়ামের বাবা শাহাবুদ্দিন।
সিয়ামের মা শাহিন বেগম বলেন, পোলার হায়াত শেষ হয়ে গেছে, পোলাকে আল্লাহ নিয়ে গেছেন। এতে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল বাসার জানান, সিয়ামকে মাটি দেবার পরে আমাকে জানানো হয়েছে। আমি চেয়ারম্যান সাহেবসহ নিহতের বাড়িতে গিয়েছি।
বাকিলা ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিলন বলেন, আমি জানার পরে নিহতের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারকে সান্ত্বনা দিয়ে এসেছি। আর তাদের কোনো অভিযোগ নেই বলে জানিয়েছে।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক জানান, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে অফিসার পাঠিয়েছি। তারা জানিয়েছে ছেলেটি নাকি মৃগী রোগী ছিলো।