শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২৩ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১:১২

ফরিদগঞ্জে একরাতে দুটি গরুর রহস্যজনক মৃত্যু

শামীম হাসান ॥
ফরিদগঞ্জে একরাতে দুটি গরুর রহস্যজনক মৃত্যু
মৃত দুটি গরু ও গোয়াল ঘরে পাওয়া দুটি গ্যাস জাতীয় মেডিসিন।

ফরিদগঞ্জ উপজেলায় গ্যাস জাতীয় মেডিসিন দিয়ে গর্ভে বাছুর বহন করা দুটি গরু মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। গরুর মালিক ও স্থানীয়দের সন্দেহ, অতিরিক্ত নেশা জাতীয় মেডিসিন দিয়ে গরু চুরি করতে গিয়ে গরু দুটি মারা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) দিবাগত রাতে মারা যাওয়া গরুটি উপজেলার পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের আসৎকুয়ারী গ্রামে মরহুম আব্দুল মতিন খান বাড়ির কার্তিক দে'র। গরুটি গত ৫ মাস ধরে গর্ভে বাছুর বহন করছে। অপর গরুটি একই গ্রামের (হুতার বাড়ির) মনা খলিফার ছেলে অমল দে'র । এ গরুটিও গত ৭ মাস ধরে গর্ভে বাছুর বহন করছে।

স্থানীয় ডা. আব্দুল কাদের খান সোহাগ, নান্নু দেওয়ান, আরিফ দেওয়ান জানান, গত ৩ মাসে দক্ষিণ শাশিয়ালী গ্রামে ১টি গরু ও আসৎকুয়ারী গ্রামে ৪টি গরু চুরি হয়। এর মধ্যে অমল দের একটি গরু ছিলো। গতরাতে তার একটি গরু মারা যায়, যা খুবই দুঃখজনক। আমরা যতোটুকু জানতে পরেছি, গরু দুটি নেশা জাতীয় মেডিসিন বা গ্যাস বা বিষ প্রয়োগ করে মারা হয়েছে। সম্ভবত গরু দুটিকে চুরি করতে এসেই কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তাদেরকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণের জন্যে প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করি। মারা যাওয়া গরুগুলোর মালিক দুজনই  পরিবারিকভাবে দরিদ্রতার গ্লানি টেনেই জীবনযাপন করছেন। এমন সময় তাদের পাশে এসে দাঁড়ানো দরকার। মারা যাওয়া গরুর মালিক কার্তিক দে ও তার স্ত্রী জানান, সন্ধ্যা রাতে সুস্থ গরুকে খাবার দিয়েছি, পরে রাত ১০টায় দিয়েছি। এরপরে আমরা ঘুমাতে গেছি, আবার রাত ২টা বাজে উঠে দেখি গরু ঠিক আছে কিনা। কারণ প্রায় সময় গরু চুরির খবর শোনা যায়। চোরের ভয়, তাই মাঝেমধ্যে রাতে উঠে গরু চেক করি। সুস্থ গরুকে খড় দিয়ে আমরা ঘুমাতে গেছি। যখন ফজরের আজান দেয়, তখন বুঝলাম গরুর ডাক শোনা যাচ্ছে, জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে। দৌড়ে এসে দেখি, মুখ দিয়ে লালা বের হচ্ছে। কিছুক্ষণ পরই গরু মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মারা যায়। গরুটি আমাদের পার্শ্ববর্তী বাড়ির জিতু গাজির থেকে ইজারা হিসেবে এনেছিলাম। কারণ আমাদের গরু কেনার সামর্থ্য নেই।

অমল দে জানান, আমার দুটি গরু ছিলো। গত দুই মাস আগে একটি গরু চুরি করে নিয়ে যায়। এরপর আমার এ গরুটিই একমাত্র সম্বল ছিলো। তাও নেশা জাতীয় গ্যাস দিয়ে গরুটিকে মেরে ফেলা হয়েছে। গোয়াল ঘরের ভেতরে দুটি গ্যাস জাতীয় ঔষধ পেলাম, এটা কেউ ইচ্ছাকৃত করেছে। না হয় সুস্থ গরু এভাবে মারা যায় না। আমার গতকালও সন্দেহ হয়েছে, কেউ গরুকে গ্যাস-ঔষধ দিয়েছে, পরে ডাক্তার দেখিয়ে ঔষধ খাওয়াইছি। ৭ মাস গরুর গর্ভে বাছুর। অনেক টাকা খরচ করেছি গরুর পেছনে। অনেক কষ্টে জীবনযাপন করছি। তার মধ্যে এ ঘটনা।  

স্থানীয় ইউপি সদস্য মুকবুল হোসেন বলেন, আমি ঘটনা শুনে তাদের বাড়িতে গিয়েছি, এমন ঘটনা খুবই দুঃখজনক। মারা যাওয়া গরুর মালিক উভয়ে দরিদ্র। এক রাতে গরু দুটি মারা যাওয়া সন্দেহজনক। কারা এর সাথে জড়িত বা কীভাবে ঘটেছে তা নিশ্চিত নই। এছাড়া এলাকায় গত দু-তিন মাসের মধ্যে ৫টা গরু চুরি হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের দাবি জানাচ্ছি এবং তাদের পাশে এসে দাঁড়ানোর জন্যে বিত্তবানদের আহ্বান করছি।

 

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়