প্রকাশ : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০
রামপুর ইউনিয়নে অসহায় পরিবারের সম্পত্তি দখল চেষ্টার অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে

স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও স্বৈরাচারের দোসরদের অত্যাচার-দৌরাত্ম্য যেনো থেমে নেই । এমনই এক নির্মম ঘটনা চাঁদপুর সদর উপজেলার ৫নং রামপুর ইউনিয়নের ছোটসুন্দর ফজর আলী বেপারী বাড়িতে ঘটেছে। আর এমন অভিযোগ ওই বাড়ির বাসিন্দা চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শাহআলম মিয়ার বিরুদ্ধে। অভিযোগ করেছেন একই বাড়ির অসহায় এক ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে বেপারী বাড়ির বাসিন্দা অসহায় পরিবারটি নিজের সম্পত্তিতে বসবাস করে আসছেন। তাদের অসহায়ত্বের সুযোগে নানা কূটকৌশল করে এবং বিগত সরকারের রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী অর্থাৎ জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদকের পদটি কাজে লাগিয়ে শাহআলম মিয়া ও তার লোকজন জোরপূর্বক ঐ পরিবারটিকে তাদের জায়গা থেকে উচ্ছেদ করে তা দখলে নেয়ার চেষ্টা করে আসছেন।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য মো. আবুল হোসেন জানান, শাহআলম মিয়া ও তার ভাই রবিউল আলম, ভাইয়ের ছেলে নীলাভ লোকজন নিয়ে সম্প্রতি তাদের মায়ের সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করেন। এতে বাধা দিলে তাদের ওপর হামলা করা হয় এবং বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হয়। তিনি বলেন, আমার মা দুধ মেহের বিবি এবং চাচা আ. গফুর ও মমিন থেকে ৬৭ শতাংশ ৪১ পয়েন্ট সম্পত্তির মালিক। যার সকল কাগজপত্র রয়েছে। উক্ত সম্পত্তি নানা ছলচাতুরি করে এবং বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রভাব খাটিয়ে শাহআলম মিয়া ও তার লোকজন দখলের চেষ্টা করে আসছেন। প্রায়ই এমন চেষ্টায় আমাদের ওপর হামলা করে আমাদেরকে আহত করতো। কিন্তু এলাকাবাসী ও স্থানীয় গণ্যমান্যদের কারণে সম্পত্তি দখল করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
এদিকে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ স্বৈরাচারের পতন হওয়ার পরও শাহআলম মিয়া চাঁদপুরে আত্মগোপনে থেকে এই সম্পত্তি জোরপূর্বক দখলের জন্যে নানাভাবে আমাদের হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে। শুধু তাই নয়, বর্তমানে একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতাদের ব্যবহার করে উক্ত সম্পত্তি দখলে নেয়ার জন্যে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। তিনি স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী চক্রকে ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত আমাদের পরিবারকে বিভিন্ন লোকজন দিয়ে হুমকি দিচ্ছে যে, আমরা আমাদের দখলকৃত সম্পত্তি ছেড়ে রাতের অন্ধকারে যেনো চলে যাই। না হলে আমাদের বসতঘরে আগুন লাগিয়ে আমাদের পুরো পরিবারকে হত্যা করা হবে।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা আরো বলেন, আমরা নিরীহ মানুষ, কিন্তু ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে গত ১৬ বছর আমাদের ওপর অনেক অত্যাচার করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শাহআলম মিয়া ও তার লোকজন। প্রতিবাদ করলেই বিভিন্ন সময় মারধরসহ হুমকি ও পুলিশি হয়রানি করা হতো এবং ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের লোক ট্যাগ দিয়ে মামলায় জড়িয়ে হয়রানি পর্যন্ত করতো। বিগত ১৬ বছর কত রাত যে বাড়ির বাইরে কাটাতে হয়েছে ভুক্তভোগীদের তার কোনো হিসেব নেই।
এলাকাবাসী জানায়, শাহআলম মিয়া প্রভাবশালী হওয়ায় তার অনুসারীরা তাদের কথায় কর্ণপাত করেননি। বরং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে মামলা-মোকদ্দমার ভয় দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ভুক্তভোগী পরিবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আমরা ন্যায়বিচার চাই। কাগজপত্রে যিনি সঠিক তিনি সম্পত্তির মালিক হবেন। আমরা যদি কাগজপত্রে সম্পত্তির মালিক না হই বা জায়গা না পাই তাহলে আমরা স্বেচ্ছায় চলে যাবো। কেউ আমাদের বলতে হবে না। তাই আমাদের রক্ষায় সংশ্লিষ্টরা এগিয়ে আসবেন। আমরা সুবিচার চাই।