প্রকাশ : ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২১:০২
লাখ টাকার প্রলোভনে হাজীগঞ্জের শত শত নারী-পুরুষ ঢাকায় !
ঢাকাতে গেলেই মিলবে কমপক্ষে লাখ টাকার ঋণ। তাও আবার সুদ মুক্ত ও দীর্ঘমেয়াদে পরিশোধের সুযোগ। এমন প্রলোভনে নিজেদের টাকায় ঢাকার সমাবেশে যোগ দেন হাজীগঞ্জ থেকে কযেক শ' নারী পুরুষ। একাধিক বাসে এই সকল নারী- পুরুষের সমন্বয়ে সোমবার (২৫ নভেম্বর ২০২৪) সকালে বাসগুলো হাজীগঞ্জ থেকে ঢাকার সমাবেশে যোগ দেয়। নারী-পুরুষের দলটি শাহবাগে পৌঁছার আগে বা পোঁছার পরে পুলিশ তাদেরকে শান্তিপূর্ণভাবে ঢাকা থেকে দেশে ফেরত পাঠায়।
|আরো খবর
প্রধান উপদেষ্টার তহবিল থেকে বিনা সুদে এসব ঋণ দেয়া হবে ‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ’ নামের সংগঠনটি এমন প্রলোভন দেখায়। উক্ত সংগঠনটি এমন প্রলোভন দেখিয়ে নারী-পুরুষকে ঢাকা নিয়েছে বলে একটি শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থার কাছে তথ্য আসে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতোমধ্যে বিদেশে পাচার হয়ে যাওয়া টাকা দেশে ফেরত এনে তা থেকে এসব নারী পুরুষকে লোন দিবে বলে কাজ শুরু করে 'অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ’ নামের সংগঠনটি। গত এক বছর ধরে কিংবা ৫ আগস্টের পর ‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ’ নামের সংগঠনটি হাজীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ও বাসা-বাড়িতে নিরীহ নারী-পুরুষদের টার্গেট করে বিনা সুদে ঋণের প্রলোভন দেখায়। তাদের প্রলোভনে পা দিয়ে ওই সংগঠনের সদস্য হন কয়েক শতাধিক নারী-পুরুষ। এরপর সদস্যরা নিজ নিজ খরচে স্থানীয় পর্যায়ে সভা করেন এবং পরবর্তীতে গত ১৮ আগস্ট দুটি যাত্রীবাহী বাস ভাড়া করে ঢাকায় সমাবেশে যোগ দেন। ওই সমাবেশ থেকে ফিরে এসে সংগঠনটির কর্মীরা আরও বেশি সদস্য সংগ্রহ করেন। সদস্যদেরকে বলা হয়, দেশ থেকে পাচার হওয়া বিপুল অর্থ ফেরত নিয়ে আসবেন ড. ইউনূস। সেই টাকায় বিনা সুদে এক লাখ টাকা থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত লোন দেয়া হবে। বিনা সুদের সেই লোন (ঋণ) পেতে আবেদন করতে হবে নির্ধারিত ফরমে। প্রাথমিকভাবে তাদেরকে নিজ খরচে ২৫ নভেম্বর, সোমবার রাজধানীর শাহবাগে আসতে হবে।
তাদেরকে আরও বলা হয়, যত বেশি টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন, তত বেশি মিলবে ঋণ। এমন প্রলোভনে রোববার দিবাগত রাত থেকে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সারাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের নিরীহ মানুষ ঢাকায় আসতে শুরু করেন। তাদের উদ্দেশ্য, বিনা সুদের ঋণ পেতে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ। এই সমাবেশে যোগ দিতে হাজীগঞ্জ থেকেও বেশ কয়েকটি যাত্রীবাহী বাসসহ ব্যক্তিগত উদ্যোগে কয়েক শ' নারী-পুরুষ ঢাকায় যায়।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন রান্ধুনীমুড়া গ্রামের মো. নিশান হোসেন নামের একজনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি সংগঠনের সদস্য। এই সংগঠনে আমার মা-বাবা, স্ত্রীসহ ৪শ' সদস্য রয়েছে। আমি কোনো অফিসার না, অটোরিকশা চালাই। আমাকে বেতন দেয়ার কথা বলে রোববার রাতে আমার নামে একটি সিল বানানো হয়। এরপর ওই সিল দিয়ে ৪ শ' সদস্য ফরম পূরণ করে ঢাকায় পাঠিয়ে দেই। তবে আমি যাইনি। তিনি আরো বলেন, আব্দুস সাত্তার নামে শাহারাস্তির একজন ভদ্র লোকের আন্ডারে আমরা সদস্য হয়েছি। এসব কিছু তিনিই তদারকি করেন।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, লোকজনকে বেআইনিভাবে জড়ো করা হবে, এমন অভিযোগে একজনকে আটক করে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করেছি।