প্রকাশ : ১১ আগস্ট ২০২৪, ২২:৫১
হাইমচরে শিক্ষার্থীদের সাথে উপজেলা প্রশাসনের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
হাইমচর উপজেলায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং স্থানীয় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে উপজেলা প্রশাসনের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (১১ আগস্ট) বিকেল ৩টায় উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা নাজনীন তৃষার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি নিরুপম মজুমদার, থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ ইয়াছিন, উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি মোহাম্মদ ফারুকুল ইসলাম।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আল-আমিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কামরুল হাসান রনি, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অন্তর, ইডেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী নাবিলা নিশাদ, সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার সালে আহামেদ, তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থী ইমরান ইমরু, বি.জি.এম. ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থী আকবর হোসাইন, ডেফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী সিয়ামসহ অন্যান শিক্ষার্থীবৃন্দ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন থানা তদন্ত অফিসার ইনচার্জ ওয়ালিউল্লাহ, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মাহাবুবুর রশিদ, উপজেলা প্রেসক্লাব সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুল ইসলামসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে আগত শিক্ষার্থীবৃন্দ।
শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্যে দুর্নীতি ও শোষণ মুক্ত হাইমচর গড়ার লক্ষ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ১৫ টি দাবি উপস্থাপন করেন। ১৫ টি দাবির মধ্যে প্রথম দাবি হচ্ছে, প্রথম দাবি উপজেলায় যেকোন মৌলিক সিদ্ধান্তে ছাত্র প্রতিনিধি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। যেমন: বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন।দ্বিতীয় দাবি দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ ও মূল্য তালিকা প্রকাশ করতে হবে। তৃতীয় দাবি প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
চতুর্থ দাবি প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতি হবেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। পঞ্চম দাবি মাদক ও কিশোর গ্যাং এর সাথে যারা জড়িত প্রত্যেককে অনতিবিলম্বে আইনের আওতায় আনতে হবে। ষষ্ঠতম দাবি সকল পরিবহন ব্যবস্থায় ভাড়া নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি এবং সকল প্রকার সিন্ডিকেট মুক্ত করতে হবে। সপ্তম দাবি উপজেলার প্রতিটি দপ্তরের বিশেষভাবে ভূমি অফিসে সিটিজেন চার্টার অনুযায়ী নির্ধারিত সময় ও ফি এর মধ্যে সকল নাগরিক সেবা প্রদান করতে হবে।
অষ্টম দাবি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সহ থানা থেকে প্রাপ্ত সেবা হয়রানি ব্যতীত নিশ্চিত করতে হবে। যেমন পাসপোর্ট ক্লিয়ারেন্স ইত্যাদি। নবম দাবি প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ গঠন করতে হবে। দশম দাবি ইউনিয়ন পরিষদের সেবা উদাহরণস্বরূপ, জন্ম নিবন্ধন, মৃত্যু নিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্স, নাগরিক সনদসহ সকল সেবা নির্ধারিত সময় ও ফি অনুযায়ী নিশ্চিত করতে হবে। এগারো তম দাবি হাসপাতালে দল, মত নির্বিশেষে সকলের সেবা নিশ্চিত করতে হবে। এবং অবৈধ ফি নিয়ে রোগী দেখা বন্ধ সম্পূর্ণভাবে করতে হবে। বারো তম দাবি ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সকল সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। তেরো তম দাবি উপজেলার যেকোন এলাকায় অনিয়ম, সহিংসতা বা অপরাধ সংঘটিত হলে পুলিশ অবগত হওয়ার সাথে সাথে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। চোদ্দো তম দাবি সকল প্রকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে। পনেরো তম দাবি যেসকল প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ বক্স নেই, ঐ সকল প্রতিষ্ঠানে এবং বাজারে অভিযোগ বক্স স্থাপন করতে হবে।
উপর্যুক্ত দাবি সমূহ অনতিবিলম্ব বাস্তবায়নের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে বিনীত অনুরোধ করেন শিক্ষার্থীবৃন্দ।
শিক্ষার্থীরা এই দাবির অনুলিপি পিএস টু ইউএনও দপ্তর, পিএস টু উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, পিএস টু সহকারী কমিশনার দপ্তর, পিএস টু অফিসার ইনচার্জ দপ্তর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ, সকল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানগন কে অনলিপি প্রেরণ করেন।
এই শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি হাইমচরের শিক্ষার্থীদের একটি সামাজিক সংগঠন স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সোসাইটি সেই সংগঠনের পক্ষ থেকেও ৯টি দাবি আলোচনা সভায় উপস্থাপন করেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।