হাজীগঞ্জের সংবর্ধনায় ফুলে ফুলে সিক্ত হলেন মেজর অব. রফিকুল ইসলাম (বীর উত্তম) এমপি

৫ম বারের মতো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) নির্বাচনী এলাকা থেকে পঞ্চমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তমকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আয়োজনে শনিবার (২০ জানুয়ারি) বিকালে হাজীগঞ্জ বাজারের বিয়ে বাড়ি নামক একটি কমিউনিটি সেন্টারের বাইরের মাঠে এ সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। এ সময় তিনি নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য, দলীয় নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে সবার উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মেজর অব রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম জানান, আমি রাজনীতি করতে এসেছি জনগনের সেবা করার জন্য। কারো ক্ষতি করার জন্য আমি সাংসদ নির্বাচিত হইনি। আপনাদের ভালোবাসায় আমি ৫ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। প্রথম বার আমি নির্বাচিত হয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতো গুরু দায়িত্ব পালন করেছি। 

 প্রথম যখন সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী হলাম, তখন ভাবলাম আমি শক্তিশালী একজন মানুষ। কিন্তু, না আমি শক্তিশালী মানুষ নয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। আর আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। আপনাদের সেবা করতে হবে। কারণ, সংসদ সদস্যের কাজ হচ্ছে, তার সংসদীয় এলাকায় কাউকে বিভাজন না করে দল-মত নির্বিশেষ একত্রিত হয়ে উন্নয়ন এবং মানুষের মঙ্গলে কাজ করা।

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, শুধু রাজনীতি করলে হবেনা, মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। মানুষের দুঃখ কষ্ট লাগবে কাজ করতে হবে। আপনি-আমি যদি একজনের মধ্যেও হাসি ফোটাতে পারি, তাহলেই সার্থক। রাজনীতি ভোগ বা ক্ষমতার জন্য নয়, মানুষের কল্যাণের জন্য। তাই, আপনার পাশে ঘরের মানুষের খোঁজ-খবর নিতে হবে। প্রত্যেকটি মানুষের অংশিদার হয়ে মানুষের কল্যানে কাজ করতে হবে।

দেশের উন্নয়ন বিষয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নতি ও অগ্রগতি এতো দূরে নিয়ে গেছেন। যা দেখে আজ সারাবিশ^ বাংলাদেশকে শ্রদ্ধা ও সমীহ করে। আমি জানি, আমাদের নির্বাচন নিয়ে অনেক দেশ নানা ধরনের কথা তুলে ছিলো। কিন্তু আমরা বলেছি, সংবিধানের বাহিরে গিয়ে কিছুই করবোনা। প্রধানমন্ত্রী সিদ্বান্তে অটল ছিলেন। সংবিধান মেনে নির্বাচন কমিশন, প্রশাসনসহ সবাই একটি সুষ্ঠ নির্বাচন উপহার দিয়েছে।

মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম এমপি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের সাথে থেকে যারা নৌকার বাহিরে গিয়ে কাজ করেছে, তারা দলের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আমি অতিত ভুলে যেতে চাইনা, কিন্তু অতিত নিয়ে সময় নস্ট ও করতে চাইনা। আমি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। যারা নৌকার বাহিরে কাজ করেছে, আমরা তাদের চিহিৃত করে রাখতে চাই। তবে আমরা কিন্তু কারো বিরুদ্ধে পদেক্ষেপে যাচ্ছিনা। তাদের বিচার আল্লাহ করবেন।

তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে যে ইশতেহার দেওয়া হয়েছে, সে ইশতেহার তরুণ প্রজন্মের জন্য, নতুন। আগামি ১০-১২ বছরের মধ্যে এক কোটি ত্রিশ লাখ লোকের কর্মসংস্থান কথা ইশতেহারে বলা হয়েছে। আমরা সেই ইশতেহার বাস্তবায়নে কাজ করবো। আমি সংসদে চিকিৎসা যেসব তরুণ পড়ালেখা শেষ করে চাকরি পাচ্ছেনা, আমরা তাদেরকে চাকরি বা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবো।

উপজেলা নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আ.স.ম মাহবুব-উল আলম লিপনের সভাপ্রধানে ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব সৈয়দ আহাম্মদ খসরু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী জসিম উদ্দিন, বাকিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের যৌথ সঞ্চালনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান পরিচালনা করা হয়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,  অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জ সার্কেল) পংকজ কুমার দে ও হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আবদুর রশিদ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন মাজিদ থেকে তেলওয়াত করেন, আওয়ামী লীগ নেতা মামুনুর রশিদ স্বপন।

এসময় জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ রোটা. আহসান হাবিব অরুন, শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. বিল্লাল হোসেন মজুমদার, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ইকবালুজ্জামান ফারুক, অধ্যাপক স্বপন কুমার পাল, আলহাজ্ব মো. সেলিম,  মো. সেলিম মিয়া, সত্য ব্রত ভদ্র মিঠুন, মুন্সী মোহাম্মদ মনিরসহ উপজেলা, পৌর ও সকল ইউনিয়নের আওয়াম লীগ,যুবলীহ ও ছাত্রলীগের কয়েক হাজার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন,  উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মাসুদ ইকবাল, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক জাকির হোসেন সোহেল, পৌর যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক তাজুল ইসলাম, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক ফরিদুল ইসলাম, পৌর সেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক রাজন চন্দ্র সাহা, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল আলম বেপারী, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাছান রাব্বি প্রমূখ।