প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৭:৫৯
ছিন্নমূল চাঁন মিয়ার পূর্নবাসনে জেলা প্রশাসক
চাঁন মিয়া (৫৫)। বাড়ি চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের সাখুয়া গ্রামে। নদী ভাঙনের শিকার হয়ে সহায় সম্পত্তি সবকিছু হারিয়ে ছিন্নমূল হয়ে পড়েন। তার জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার।এলাকায়
|আরো খবর
রিকশা চালিয়ে চলত তার সংসার। পরে মৈশাদী এলাকার একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের ভ্যান চালকের কাজ নেন। সাখুয়া গ্রাম ছেড়ে শেখেরহাট এলাকায় বসবাস করতেন।
কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস একবার তার ভ্যান গাড়ির সাথে সিএনজি চালিত স্কুটারের সংঘর্ষে হলে ওই দুর্ঘটনায় তার হাত পা ভেঙে যায়। এরপর থেকে কাজ করতে না পেরে খুবই অসহায় হয়ে পড়েন চাঁন মিয়া। কিন্তু তিনি ভিক্ষাবৃত্তি না করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের বারান্দায় সরকারি সহযোগিতার জন্য দিনের পর দিন ঘুরছিলেন। বিষয়টি নজরে আসে জনবান্ধব জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের। তিনি চাঁন মিয়ার অসহায়ত্বের কথা তদন্ত করে চাঁদপুর সদরের শেখেরহাট সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্প এলাকায় প্রশাসনের অর্থায়নে একটি চা দোকানের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
সড়ক দুর্ঘটনায় পা ভেঙে যাওয়া অসহায় ও ছিন্নমূল চাঁন মিয়ার এখন বেঁচে থাকার স্বপ্ন এই দোকান।
রবিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শেখের হাট পুনর্বাসনের দোকানটি আনুষ্ঠানিকভাবে ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) অঞ্জনা খান মজলিশ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইমতিয়াজ হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দাউদ হোসেন চৌধুরী, (শিক্ষা ও আইসিটি) মোছাম্মৎ রাশেদা আক্তার, (এডিএম) মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন সারোয়ার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা শাহনাজসহ অন্যান্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ।
বেঁচে থাকার সংগ্রামী জীবনে দোকান পেয়ে খুবই খুশি বলে জানিয়েছেন অসহায় চাঁন মিয়া।
এ জন্য তিনি জেলা প্রশাসনের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, অসহায় চান মিয়া গত ৩ মাস সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে বসে থাকত। তার একটাই দাবী ছিল আমি ভিক্ষা কিংবা করোর উপর নির্ভরশীল হতে চাই না। আমাকে একটি ছোট দোকান করে দেন। যাতে সেখানে দোকান করে বেঁচে থাকতে পারি। কারণ আমাকে দেখারমত কেউ নেই। এরপর আমরা তাকে বলেছি, তোমার ঘর না থাকলে ঘরে দেই। সে বলেছে আমার ঘর আছে দোকানই প্রয়োজন। তিন মাস অপেক্ষা করেছে সিদ্ধান্ত পাল্টায়নি। এরপর একজন ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে তার অবস্থান দেখে জানালো খুবই করুন অবস্থা। এরপর আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার দোকান এবং মালামালও ক্রয় করে দিয়েছি। আজকে থেকে সে দোকান শুরু করতে পারবে এবং সে চলতে পারবে।
ডিসি আরো বলেন, আসলে সরকার যে উদ্যোগগুলো নিয়েছে অর্থাৎ বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষ যেন ভাল থাকে, কষ্টে না থাকে এবং না খেয়ে থাকে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সে নির্দেশনাগুলো আমরা বাস্তবায়ন করছি।