সোমবার, ১২ মে, ২০২৫  |   ৩০ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের ঢল

প্রকাশ : ১২ মে ২০২৫, ০০:২৯

পথে প্রান্তরে : পর্ব-১

সুন্দর আলীর চোখের দৃষ্টি নিভে গেলেও ছেলেকে মুহাদ্দিস বানানোর স্বপ্ন নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন

মো. মঈনুল ইসলাম কাজল
সুন্দর আলীর চোখের দৃষ্টি নিভে গেলেও ছেলেকে মুহাদ্দিস বানানোর স্বপ্ন নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন

নাম তার মো. সালাউদ্দিন। এলাকার অনেকেই তাকে চিনেন সুন্দর আলী নামে। ঠিক সুন্দর আলীর মতোই চেহারায় সৌন্দর্যের ছাপ এখনো বিদ্যমান। হাট বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন দু মুঠো ডালভাত খেয়ে বেঁচে থাকার জন্যে। হঠাৎ শাহরাস্তি উপজেলার ঠাকুর বাজারে একটি চা দোকানে পরিচয় হয় সুন্দর আলীর সাথে। চা খেতে খেতে তার জীবনের নানা দিক তুলে ধরেন তিনি। সুন্দর আলীর হাতে একটি স্টিলের লাঠি, চোখে দেখেন না।

মাত্র ৫ বছর পূর্বে তিনি দৃষ্টিশক্তি হারান। স্বাভাবিক জীবন ছিলো সুন্দর আলীর। ঢাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। এছাড়া তিনি একজন দক্ষ রড মিস্ত্রি। ২০১৯ সালে হঠাৎ তার মাথায় ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর তিনি প্রাণ ফিরে পেলেও হারিয়ে ফেলেন দৃষ্টিশক্তি। চিকিৎসা নিতে নিজের জমানো ও পরিচিতজনের সহযোগিতায় কয়েক লাখ টাকা চলে যায়। এরপর পরিবারের কথা চিন্তা করে জীবনযুদ্ধে মানুষের দ্বারে দ্বারে হাত পেতে বেড়াচ্ছেন সুন্দর আলী।

শাহরাস্তি উপজেলার সুচিপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের কৃষ্ণপুরের ( বেলায়েতনগর) মৃত আবুল কাশেমর ছেলে সুন্দর আলী। তার স্ত্রী রোজিনা আক্তার, ৭ বছরের সন্তান আছেম পড়ে এলাকার একটি মাদ্রাসায় । ১৮ মাস বয়সী শিশু কন্যা সাইফা আক্তার বেড়ে উঠছে মা বাবার অতিযত্নে। মো. সালাউদ্দিন ওরফে সুন্দর আলী মহান আল্লাহ তায়ালার শোকরিয়া আদায় করে বলেন, উপজেলার ঠাকুর বাজার, শোরসাক বাজার, আয়নাতলী, উঘারিয়া এলাকায় বাজারের দিন তিনি মানুষের কাছে সহযোগিতার জন্যে হাত পাতেন। প্রতিদিন গড়ে ৩ থেকে ৪ শত টাকা পেয়ে থাকেন। এই দিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভালোই আছেন তিনি।

সুন্দর আলী বলেন, তিন মাস অন্তর প্রতিবন্ধী ভাতা পেয়ে থাকেন ২ হাজার ৫ শত টাকা। এলাকাবাসীর সহযোগিতা নিয়ে একটি ঘর করেছেন তিনি। তার স্বপ্নের কথা জানতে চাইলে বলেন, আমার একমাত্র স্বপ্ন আমার ছেলেকে কোরআনে হাফেজের পর আলেম, মুহাদ্দিস হিসেবে গড়ে তোলা। এজন্যে তিনি সকলের সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করেন।

একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে সমাজের বিত্তবান ও সহৃদয়বান ব্যক্তিদের দৃষ্টি আকর্ষণ হোক--এটাই সকলের প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়