প্রকাশ : ১৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
ফরিদগঞ্জে দেবর-ননদের নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ
ফরিদগঞ্জে দেবর ও ননদের দ্বারা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন পারভীন বেগম (২৮) নামে এক গৃহবধূ। অব্যাহত নির্যাতনের শিকার এই গৃহবধূ স্থানীয়দের দ্বারা বিচার না পেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার মিরপুর গ্রামে।
থানায় লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মিরপুর গ্রামের মৃত তৈয়ব উল্যার বড় ছেলে আরিফ হোসেনের সাথে জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ ভাতখাওয়া গ্রামের শাহজালাল ক্বারীর মেজো মেয়ে পারভীনের প্রেম ও পরবর্তীতে বিবাহের মাধ্যমে দাম্পত্য জীবন শুরু হয়। এই দাম্পত্য জীবনে তাদের ৩টি সন্তান এসেছে। স্বামীর সংসারে সুখী থাকলেও দেবর জিয়াউর রহমান, ননদ আফরোজা আক্তার রোমা ও সুমী বেগম কর্তৃক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে হতাশা ও অন্ধকারাচ্ছন্ন জীবন কাটাচ্ছেন পারভীন বেগম। শ্বশুরের মৃত্যুর পর পরিবারের কর্তৃত্ব দেখাতে শুরু করেন পারভীনের ননদ আফরোজা আক্তার রোমা। তিনি নিজের ইচ্ছামত নানান ঘটনা রচনা করে তুচ্ছ ওইসব ঘটনায় বেআইনীভাবে গালমন্দ ও মারধর করে পারভীনকে। এভাবেই একাধিকবার দেবর ও ননদ কর্তৃক হামলার শিকার হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা গ্রহণ করেও এই জেলাতে বাবা-মা আত্মীয়-স্বজন না থাকায় সকল নির্যাতন সহ্য করে আসছেন পারভীন। নিজের প্রিয়তমা স্ত্রীর উপর ছোট ভাই ও বোনের দ্বারা এমন অমানবিক নির্যাতন চোখে দেখেও পরিবারের মানসম্মানের কথা বিবেচনায় চুপ থাকতে বাধ্য হয় পারভীনের স্বামী আরিফ হোসেন।
পারভীন বেগম হাউমাউ করে কেঁদে বলেন, এখানে আমার স্বামী ছাড়া আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্যে আর কেউ নেই। আমি একাধিকবার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েও বিচার পাইনি।
ভুক্তভোগীর স্বামী আরিফ হোসেন বলেন, আমি পরিবারের বড় ছেলে। তাই ছোট ভাই ও বোনদের নির্যাতন সহ্য করা ছাড়া কোনো উপায় দেখছি না। তাদের বাধা দিতে গিয়ে আমিও হামলার শিকার হয়েছি। ভাই ও বোন কর্তৃক স্ত্রীর উপর নির্যাতনের কথা তিনি স্বীকার করেছেন।
এদিকে অভিযুক্ত আফরোজা আক্তার রোমা ঘটনা অস্বীকার করে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।
স্থানীয় কাউন্সিলর জাহিদ হোসেন বাবুল পাটওয়ারী বলেন, এই পরিবারটির একাধিবার সালিস হয়েছে। পারভীন বেগম নামে ওই গৃহবধূ নির্যাতনের শিকার এটা প্রমাণিত। তার স্বামী আরিফ হোসেন সহজ-সরল হওয়ায় ভুক্তভোগী উচিত বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে আমি মনে করছি।
ফরিদগঞ্জ থানার সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক আবদুল কাদির বলেন, পারভীন বেগমের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। তদন্ত অব্যাহত আছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।