প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০
দীর্ঘ আড়াই মাস পর হত্যা মামলায় জামিনে মুক্তি পেলেন মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর ইউপি চেয়ারম্যান কাজী মিজানুর রহমান। নেতা-কর্মী, সাধারণ মানুষের বিরাট মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা, ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয় মুক্ত চেয়ারম্যানকে। হাইকোর্ট থেকে জামিন দেয়ার পর গত ৩ সেপ্টেম্বর রোববার বিকেলে তাকে চাঁদপুর জেলা কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়। জামিনের কাগজপত্র চাঁদপুর কোর্টে পৌছার সংবাদ পেয়ে দুপুর থেকে মোহনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী জেলা কারাগারের সামনে অবস্থান নেয়। জেল কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কাজী মিজানের পরিবারের লোকজন নেতা-কর্মীদের মতলব ব্রীজের নিকট চলে যেতে বললে তারা সেখানে অবস্থান নেয়।
চাঁদপুর কোর্ট থেকে জামিনে মুক্তির কাগজপত্র জেলখানায় পৌঁছার পর কাজী মিজানকে বিকেলে মুক্তি দেয়া হয়। মুক্তির পর মতলব ব্রীজের নিকট পৌঁছলে অপেক্ষমান নেতা-কর্মীরা তাকে স্বাগত জানান, শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত করে তোলেন। নেতাকে কাছে পেয়ে অনেকে আবেগাপ্লুত হয়ে কেঁদে ফেলেন। এরপর নেতা-কর্মীরা বিশাল মোটরসাইকেল শোভাযাত্রার মাধ্যমে মুক্ত চেয়ারম্যানকে মোহনপুর নিয়ে যান। তিনি মোহনপুর বাজারে পৌঁছে জনসাধারণের সাথে কুশল বিনিময় করেন। এরপর নিজ বাসভবনে পৌঁছলে অপেক্ষমান অসংখ্য পুরুষ-মহিলাসহ নেতা-কর্মীরা শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত করে তোলে। জনসাধারণসহ নেতা-কর্মীরা তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এরপর তিনি স্থানীয় সামাজিক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ সাধারণ মানুষের সাথে মতবিনিময় করেন। সভায় তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাকে ও তার দুই ভাইকে হত্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তিনি জামিনে মুক্তি লাভ করায় মহান আল্লাহর নিকট শোকরিয়া আদায় করেন।
উল্লেখ্য, মতলব উত্তর উপজেলার মোহপুর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামে ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি রাজ্জাক প্রধানের সাথে আমির হোসেন কালু ও আলমগীর মেম্বারের দীর্ঘদিন ধরে গ্রামে আধিপত্য বিস্তার, চর দখল নিয়ে কোন্দল চলে আাসছে। এর ধারাবাহিকতায় গত ১৭ জুন দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে যুবলীগ কর্মী মোবারক হোসেন কালু মারা যান। একটি মহল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এ হত্যা মামলায় কাজী মিজানুর রহমান ও তার দুই ভাইকে জড়ায়। ১৮ জুন কাজী মিজানকে এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। সেদিন থেকে তিনি চাঁদপুর জেলখানায় ছিলেন।
চলতি বছর মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কাজী মিজানকে নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন দেয়া হয়। পরবর্তীতে তা পরিবর্তন করে আব্দুল হাই প্রধানকে নৌকা প্রতীক দেয়া হয়। কাজী মিজান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। তিনি পান ৫ হাজার ২২ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী পান ১ হাজার ৮০৭ ভোট। নির্বাচনে জয়ের পরই একটি রাজনৈতিক মহল কাজী মিজানের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লাগে। তাকে বাহাদুরপুর গ্রামের হত্যা মামলায় জড়ায়।