শাহরাস্তিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত ফজলুর রহমানের বাড়িতে সম্পত্তিগত বিরোধের জের ধরে হামলা ও ব্যাপক ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এতে কমপক্ষে ৮ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় শাহরাস্তি থানা পুলিশ ৬ জনকে আটক করেছে। ৩০ এপ্রিল রোববার বেলা ২টায় উপজেলার মেহার দক্ষিণ ইউনিয়নের পদুয়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।

জানা যায়, ওই গ্রামের পূর্বপাড়া ওয়ারিশ আলী বাড়ির মৃত আমেনা খাতুনের পৈত্রিক সম্পত্তি হতে ৭২ শতক জায়গা নিজ কন্যা জয়নব বানুকে দান কবলামূলে প্রদান করেন। ওই জায়গার দাবি করেন একই বাড়ির মৃত মফিজের ওয়ারিশগণ। এর সূত্র ধরে হামলায় ভাংচুরের ঘটনায় পুলিশ তৎক্ষণাৎ ৫ ব্যক্তিকে আটক করেন।

এ বিষয়ে জয়নব বানুর স্বামী শফিকুর রহমান বলেন, আমার পুত্র মিজানুর রহমান ঘটনার দিন সকালে নিজ নামীয় পুকুর পাড়ের গাছ কাটতে যায়। ওই সময় মৃত মফিজের পুত্র আলমগীর হোসেন গাছ কাটতে বাধা দেয়। বাকবিত-ার এক পর্যায়ে আলমগীর ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এরই মধ্যে গাছ কাটা সম্পন্ন হলে সবাই ধান কাটার কাজে চলে যায়। বেলা ২টায় আলমগীর ২০/২৫ জন ভাড়াটে লোকজন নিয়ে আমার বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ৩টি বসতঘর ১টি দোকান ও ১টি রান্না ঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে। এ সময় আমরা বাধা দিলে তাদের হামলায় আমাদের ৮ জন আহত হয়। এদের মধ্যে ২জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতরা হলেন : বিল্লাল হোসেনের পুত্র মেহরাজ হোসেন শান্ত (১৪), আবদুল মান্নানের পুত্র মোঃ বিল্লাল হোসেন (৪২), শফিকুর রহমানের পুত্র মোঃ মিজানুর রহমান (৫০) ও কামাল হোসেন (৪০), কামাল হোসেনের পুত্র কাউসার হোসেন (১৮), স্ত্রী কুলসুম বেগম (৩৫), কন্যা রিমু আক্তার (১৫) ও শফিকুর রহমানের স্ত্রী জয়নব বানু (৬৫)। তিনি আরও বলেন, প্রতিপক্ষগণ আমাদের নিজ নামীয় জায়গা তাদের বলে দাবি করেন। অথচ তাদের কোনো কাগজপত্র নেই। অদ্যাবধি যতবার এ বিষয়ে সালিস-দরবার হয়েছে তারা কাগজপত্র দেখাবে বলে আর আসে না। এভাবে তারা একের পর এক হামলা চালিয়ে তারা আমাদের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছে। এমনি চলতে থাকলে আগামী প্রজন্ম তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে আরও বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

এ ঘটনায় মৃত মফিজুর রহমানের পুত্র আলমগীর হোসেনের বক্তব্য নিতে গেলে তাকে বাড়ি পাওয়া যায় নি। তবে ওই বাড়ির কিছু মহিলা জানায়, শফিকুর রহমানের ওয়ারিশগণ বাড়ির সকল জায়গা দখল দিয়ে রেখেছে। এ বিষয়ে ইতোপূর্বে যতবার বৈঠক হয়েছে এবং বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অমান্য করেছে তারা। এক প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, ঘটনার দিন প্রতিপক্ষের ঘর-বাড়িতে তাদের এমন হামলা আইন হাতে তুলে নেয়ার সামিল বলে মন্তব্য করেন। যথাযথ কাগজপত্র ও সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে সম্পত্তিগত বিরোধ নিরসন করা সম্ভব বলে তারা মনে করেন।

এলাকাবাসী বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ উভয় পক্ষ সম্পত্তিগত বিরোধে জড়িয়ে বহু মামলা হামলার শিকার হয়েছে। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বারগণ বহু চেষ্টা করেও অসহযোগিতার কারণে তাদের বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারেননি। একে অপরকে ছাড় দিয়ে এই বিরোধ নিষ্পত্তি করলে আগামী প্রজন্মের জন্য মঙ্গল হবে বলে তারা জানান।