রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ১৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০৩ মে ২০২৩, ০০:০০

মতলব দক্ষিণে মাদ্রাসার নামে দান করা সম্পত্তিতে উন্নয়ন কাজে বাধা
মুহাম্মদ আরিফ বিল্লাহ ॥

মতলব দক্ষিণ উপজেলার তেলি মাছুয়াখাল গ্রামে ফোরকানিয়া মাদ্রাসার নামে দান করা সম্পত্তির উপর নিষেধাজ্ঞার মামলা করে মাদ্রাসার উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগ উঠেছে জমি দাতার একাংশের ওয়ারিশ আবুল খায়ের বকাউল গংয়ের বিরুদ্ধে। গত ১৬/০৩/২০২৩ তারিখে বাদী হয়ে বিজ্ঞ মতলব সিনিয়র সহকারী জজ আদালত, চাঁদপুর-এ দান করা সম্পত্তির উপর নিষেধাজ্ঞা মামলা করেন ভূমি দাতার নাতি মোঃ আবুল খায়ের বকাউল গং। যার মামলা নং ১৫১/২০২৩। এ মামলার ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, উপজেলার ১৯০নং তেলি মাছুয়াখাল মৌজার সিএস ১১৯ নং খতিয়ানে হাল জরিপি ৪নং খতিয়ানে সাবেক ২৮৭নং দাগ হাল ১০০৭নং দাগে মরহুম বিলাত হোসেন বকাউল নিজ দখলীয় বৈধ ভূমি থেকে ৩৩ শতাংশ ভুমি তেলি মাছুয়াখাল দিঘিরপাড় মাদ্রাসার নামে দান করে যান। যা বাংলাদেশ জরিপে ৪নং খতিয়ানে ১০০৭ দাগে তেলি মাছুয়াখাল দিঘিরপাড় মাদ্রাসা কমিটির পক্ষে সেক্রেটারী নামে রেকর্ডভুক্ত হয়। উক্ত ভূমির নিম্নাংশ মাদ্রাসার প্রয়োজনে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এলাকাবাসীর পরামর্শে বালু দিয়ে ভরাট করার উদ্যোগ গ্রহণ করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। তখন ভূমিদাতা মরহুম বিলাত হোসেনের ওয়ারিশ (নাতি) মোঃ আবুল খায়ের বকাউল গং উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মাদ্রাসার চলমান কাজকে বিলম্বিত করা এবং এলাকার ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের কোরআন শিক্ষায় ব্যাঘাত সৃষ্টির করার জন্য বিজ্ঞ মতলব সিনিয়র সহকারী জজ আদালত, চাঁদপুর-এ একটি মামলা দায়ের করেন। ফলে ব্যাহত হচ্ছে মাদ্রাসার স্বাভাবিক উন্নয়ন কাজ।

সরজমিনে গিয়ে দান করা ভূমির উপর মামলা করার বিষয়ে জানতে চাইলে ভূমিদাতার ওয়ারিশ মোঃ আবুল খায়ের বকাউল গং বলেন, আমার দাদা মাদ্রাসার নামে জমি দান করে গেছেন। আমরা এই জায়গা জবরদখল করার ইচ্ছে নেই। তাছাড়া আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তির সঠিক হিসেব পাচ্ছি না। তাই মামলা করেছি। আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তির সঠিক হিসেব পেলে মাদ্রাসার কাজে আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না। আবুল খায়ের আরও বলেন, তৎকালীন জাতীয় সংসদ সদস্য মোঃ আলম খান মাদ্রাসার উন্নয়নের জন্য ঢেউটিন ও আর্থিক বরাদ্দ দিয়েছিলেন। যা মাদ্রাসার উন্নয়নে ব্যবহারের পর অতিরিক্ত টাকা আমিসহ তৎকালীন শিক্ষকদের বেতন বাবদ ব্যয় করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, মামলার বাদী মামলার আরজিতে উল্লেখ করেছেন, নালিশী ভূমিতে বসতঘর, রান্নাঘর, বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে। কিন্তু সরজমিনে মামলার আরজির সাথে কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, আবুল খায়ের বকাউল গং উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তেলি মাছুয়াখাল ফোরকানিয়া মাদ্রাসার কাজে বাধা প্রদান করতেছে। এরা নিজেরাই দিঘির উত্তরপাড় অতিরিক্তি সম্পত্তি ভোগদখল করতেছেন। আর দিঘির দক্ষিণপাড় মাদ্রাসা এবং এখানকার সম্পত্তির মূল্য বেশি হওয়ায় এখন বিভিন্ন অজুহাত সৃষ্টি করতেছে।

তেলিমাছুয়াখাল ফোরকানিয়া মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ মোজাম্মেল হোসেন প্রধান বলেন, পাকিস্তান আমলে এই মাদ্রাসার জায়গা দান করে গেছেন মরহুম বিলাত হোসেন বকাউল। মরহুমের চার ওয়ারিশের মধ্যে তিনজন ওয়ারিশ যথাক্রমে মোঃ মিজানুর রহমান বকাউল গং, মোঃ মজিবুর রহমান বকাউল গং, চাঁনভানু এবং জরিনা খাতুন গং ফোরকানিয়া মাদ্রাসার নামে দানকৃত ৩৩ শতাংশ ভূমির উপর কোনো দাবি বা ওজর আপত্তি নেই। কেবল একজন ওয়ারিশ আবুল খায়ের বকাউল গং এই কাজে অন্যায়ভাবে বাধা প্রদান করতেছে। তিনি বলেন, সামাজিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এলাকার দ্বীনি শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে আমরা মাদ্রাসার কাজ সুন্দরভাবে করতে চাই। সেজন্য আমরা সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।

মাদ্রাসার সেক্রেটারী মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, তেলিমাছুয়াখাল মাদ্রাসার সাথেই একটি পাকা মসজিদ, অজু করার জন্য পাকা ঘাটলা, টয়লেট, টিউবওয়েল, সরকারি অনুদানে নির্মিত অজুখানা, ঈদগাহ মাঠসহ ভূমি দাতার পারিবারিক কবরস্থান ও একটি মাজার রয়েছে। যা একটি কমপ্লেক্সে রূপান্তরিত হয়েছে। এমন একটি সুন্দর পরিবেশকে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে আবুল খায়ের বকাউল গং উল্লেখিত মামলাটি করেন।

দলমত নির্বিশেষে তেলি মাছুয়াখাল এলাকার সবচেয়ে পুরাতন ফোরকানিয়া মাদরাসা, মসজিদ, কবরস্থান ও ঈদগাহ কমপ্লেক্সের সার্বিক উন্নতি ও ছোট ছোট মেয়েদের দ্বীনি শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়