বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৩ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

দুটি কিডনিই নষ্ট বশিরের ॥ বাঁচার আকুতি
অনলাইন ডেস্ক

শরীরের নষ্ট হয়ে যাওয়া দুইটি কিডনি নিয়েই বাঁচার আকুতি জানিয়েছেন বশির আহমেদ পরিবারের সুখের কথা চিন্তা করে ৭ বছর আগে সুদূর বাহরাইনে পাড়ি জমান মোঃ বশির আহম্মেদ। কিন্তু সেই সুখ বেশি দিন টিকেনি। প্রবাসে থাকাকালে তার দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে যায়। তাই তাকে দেশে ফিরে আসতে হয়।

বশির আহম্মেদ চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার ৫নং উপাদী উত্তর ইউনিয়নের দক্ষিণ উপাদী গ্রামের আব্দুল লতিফ মিজির ছেলে। দুটি কিডনি নষ্ট হওয়ার কারণে বিদেশে থাকাকালে অর্জিত আয়ের সকল অর্থ চিকিৎসার পেছনে খরচ করেছেন। এরই মধ্যে বিক্রি করেছেন নিজের শেষ সম্বল ফসলি জমি। তিন ভাই মিলে তৈরি করা ঘরটির দুই রুমে কোনো রকম বসবাস করছেন তিনি।

এ অবস্থায় তার পরিবার একমাত্র সন্তানকে নিয়ে বেঁচে থাকার আশায় সমাজের বিত্তবান মানুষের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন। তাকে সাহায্য পাঠানোর হিসাব নং- ১৫১১১০০০১৭৩১৯ সোনালী ব্যাংক, মতলব শাখা, চাঁদপুর।

স্থানীয়রা জানান, ২০১৫ সালে বশির আহম্মেদ বাহরাইনে কাজের সন্ধানে যান। কিন্তু সেখানে তিনি তেমন আয় করার সুযোগ পাননি। ২০২২ সালের শেষের দিকে তার দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে জানতে পেরে সহকর্মীরা তাকে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।

কবির হোসেন নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, বশির বিদেশে থাকাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে জানতে পারেন তার দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। বর্তমানে তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আমরা এলাকাবাসী তাকে সহযোগিতা করার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করছি। এছাড়াও তার যে ১২ শতাংশ জমি ছিল সেটি বিক্রিয় করে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাকে আর্থিক সহায়তা করার জন্য তিনি সবার কাছে অনুরোধ জানান।

বশির আহম্মেদের প্রতিবেশী মনির হোসেন মিয়াজী বলেন, তাকে বাঁচাতে হলে ২৫ লাখ টাকা প্রয়োজন, পরিবারের পক্ষে এত টাকা বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। সকলে মিলে যদি তাকে কিছু সহযোগিতা করেন তাহলে হয়তো সে বেঁচে থাকতে পারবে। তা ছাড়া আমরাও তাকে সহযোগিতা করছি।

বশিরের মেয়ে নবম শ্রেণি পড়ুয়া ছাত্রী সাইমা ইসলাম বলেন, বাবাকে সপ্তাহে দুই দিন ডায়ালাইসিস করতে হয়। এটি একটি ব্যয়বহুল চিকিৎসা। সবাই আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন।

বশির আহম্মেদের স্ত্রী পুতুল বেগম বলেন, আমার স্বামী বিদেশে থাকাকালে তার দুটো কিডনি নষ্ট হয়ে যায়। সেখানে ১ মাস চিকিৎসা নেন। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। এছাড়া সেখানে চিকিৎসা নিতে অনেক টাকার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু টাকা না থাকায় তিনি দেশে ফেরত আসেন। বর্তমানে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। নতুন কিডনি স্থাপনের জন্য ২০ লাখ টাকা প্রয়োজন। আমাদের পরিবারের পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব হচ্ছে না। আমার স্বামীকে বাঁচাতে চাই। তাকে নিয়ে বাঁচতে চাই। তাই সকলের কাছে আর্থিক সহযোগিতা চাচ্ছি।

মো. বশির আহম্মেদ বলেন, আমি প্রবাসে থাকাকালে অসুস্থ হয়ে পড়ি। দিন দিন শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে দেশে ফেরত আসি। দেশে আসার পর চিকিৎসক জানান আমার দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। আমার একটি জমি ছিল সেটি বিক্রয় করে দিয়েছি। জমি বিক্রয়ের ১০ লাখ টাকা আছে। আরও ১৪-১৫ লাখ টাকার প্রয়োজন। আমি বাঁচার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ দেশবাসীর কাছে আর্থিক সহযোগিতা চাই। আমাকে সহযোগিতা করলে স্ত্রী ও একমাত্র সন্তান মেয়েটাকে নিয়ে বেঁচে থাকতে পাবর। আমার মেয়েটার ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আমাকে সহযোগিতা করুন।

৫নং উপাদী উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ শহিদ উল্লাহ বলেন, বশির আহমেদ বাহরাইন থাকাকালে তার দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে যায়। আমি সাধ্যমতো তাকে সহযোগিতা করেছি। তার কিডনি স্থাপন করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। তাই তাকে সবাই সহযোগিতা করলে হয়তো তিনি সুস্থ হয়ে আবারো স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবেন।

মতলব দক্ষিণ উপজেলার সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ রুহুল আমিন বলেন, বশির আহম্মেদ ৫০ হাজার টাকা সহযোগিতার জন্য আমাদের কাছে একটি আবেদন করেছেন। আমরা জেলা অফিসে পাঠাব। জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তার কাগজপত্রসহ সবকিছু দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

চাঁদপুর জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শুভ্র সরকার বলেন, তিনি যদি আমাদের উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে থাকেন তাহলে তার কাগজপত্র দেখে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে। সূত্র : ঢাকা পোস্ট।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়