প্রকাশ : ১২ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
যাত্রীসাধারণের আতঙ্কের অপর নাম চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়ক। কিছুদিন পর পর ঘটে দুর্ঘটনা, কিন্তু কিছুতেই টনক নড়েছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। এই সড়কটির বেশ কিছু এলাকা দুর্ঘটনার জন্যে পরিচিত হয়ে উঠেছে। এ সকল এলাকার নাম শুনলেই অনেকেই আঁৎকে উঠেন। সাধারণ যাত্রী ও ভুক্তভোগী মহল থেকে প্রতিবাদের আওয়াজ উচ্চারিত হলেও কর্তৃপক্ষের নিকট পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছে না। আর কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে পড়লেও তাদের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। এ সকল সমস্যা যথাযথ কর্তৃপক্ষ যেভাবে এড়িয়ে চলেন, সেইভাবে জনগণ সড়কটি এড়িয়ে চললে হয়তোবা দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব হতো। ক্ষোভ প্রকাশ করে অনেকেই এমন মন্তব্য করেছেন।
কিছু দিন পর পর চাঁদপুর সদরের কিছু এলাকা, শাহরাস্তি উপজেলার ওয়ারুক, মৌতাবাড়ি, কাকৈরতলা ও সীমান্তবর্তী রসুলপুর এলাকার ঘোষের বাড়ি মোড়ে ঘটে যায় মারাত্মক দুর্ঘটনা। এ সকল দুর্ঘটনার সাথে সিএনজি অটোরিকশার দৌরাত্ম্য, বেপরোয়া বাস চলাচলের পাশাপাশি সড়কের বেহাল দশাকেই দায়ী করছেন জনসাধারণ। গত বছরে মৌতাবাড়িতে বেপরোয়া বোগদাদ বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে দুজনের প্রাণ কেড়ে নেয়। সেই থেকেই মৌতাবাড়ি ব্রিজ ও সড়কের বেহাল দশাকেই দায়ী করা হয়। দুর্ঘটনার পর সড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে দায়সারাভাবে কিছু কাজ করা হলেও সড়কটি আবার চেনা রূপে ফিরে আসে।
শাহরাস্তি উপজেলার ওয়ারুক এলাকা থেকে জগতপুর বাজার পর্যন্ত কার্পেটিংয়ের আস্তর উঠে যাওয়ায় কিছু দিন না যেতেই দুর্ঘটনায় পড়ে প্রাণ হারাতে হয় যাত্রীদের। রসুলপুর এলাকার ভয়ানক ঘোষের বাড়ির টেকের সড়কের একপাশে কার্পেটিং উঠে যাওয়ায় বেপরোয়া বোগদাদ রং-সাইড দিয়ে অতিক্রম করতে গিয়ে মঙ্গলবার মোটরসাইকেল আরোহীদের চাপা দেয়। স্থানীয় এলাকাবাসী বোগদাদ বাসের পাশাপাশি সড়কের বেহাল দশাকেও দায়ী করছেন।
এলাকাবাসী জানান, কিছু দিন পূর্বে একই স্থানে তিনটি দুর্ঘটনা ঘটে। কেউ মারা যায়নি বলে আলোচিত হয়নি। এছাড়াও গত বছর একই স্থানে একটি যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে যায়। এতে প্রায় ২৫ জন যাত্রী আহত হন।
চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের আতঙ্কের আরেক নাম বোগদাদ সার্ভিসের বেপরোয়া ও অদক্ষ চালক। দ্রুতগতির কারণে দুর্ঘটনার জন্যে যাত্রীসাধারণ বাস কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে আসছে। বেশ কিছু যাত্রীর প্রাণ কেড়ে নেয়ার পরও তাদের সার্ভিসে কোনো পরিবর্তন আসেনি। ক’দিন পর পর এ সকল দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানোর প্রেক্ষিতে তোলপাড় সৃষ্টি হওয়ার কিছু দিন পার হতেই ভুলে যায় কর্তৃপক্ষ। অনাকাঙ্ক্ষিত এ সকল দুর্ঘটনার কবল থেকে মুক্তি পেতে সবাই সড়ক বিভাগের কার্যকর পদক্ষেপ দাবি করেন।