প্রকাশ : ০৯ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
![কুয়াশাচ্ছন্ন হাইমচরে শীতে কাঁপছে মানুষ](/assets/news_photos/2023/01/09/image-28186.jpeg)
সারাদেশের ন্যায় হাইমচরেও শীত জেঁকে বসেছে। সেই সঙ্গে ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। গত বৃহস্পতিবার থেকে সূর্যের দেখা মেলেনি। গতকাল রোববার ৮ জানুয়ারি ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত আকাশ কুয়াশাচ্ছন্ন থাকায় সূর্য দেখা যায়নি। ফলে অসচ্ছল, হতদরিদ্র পরিবার শীতের পোশাকের অভাবে দুর্বিষহ দিনাতিপাত করছেন। অনেকেই জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। অনেকেই বিভিন্ন উপায়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া অসহায় মানুষগুলো।
হাইমচর উপজেলার বেশ ক’টি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সকাল গড়িয়ে গেলেও দোকান খোলেননি ব্যবসায়ীরা। তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নদী অববাহিকার লোকজন। গরম কাপড়ের অভাবে তীব্র শীতে ভুগছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
জীবন-জীবিকার তাগিদে কনকনে শীতকে উপেক্ষা করেই কাজে বের হতে হচ্ছে এ উপজেলার খেটে খাওয়া মানুষের। এর মধ্যে মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ে চরাঞ্চল তথা সাহেবগঞ্জ, মিয়ার বাজার, মাঝির বাজার ও গাজীপুর চরের মানুষ বেশি বিপাকে পড়েছেন। এসব এলাকার আশপাশ জুড়েই মেঘনা নদী বয়ে গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দুদিন ধরেই সর্বত্র সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শীতের তীব্রতা থাকায় বিপাকে পড়ছেন কর্মজীবীসহ নিম্ন আয়ের মানুষ। চরাঞ্চলের মানুষ আরও বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন। শীতের দাপটে সন্ধ্যার পর থেকে পরদিন বেলা ১১টা পর্যন্ত হাইমচরের বিভিন্ন বাজার জনশূন্য থাকে।
এদিকে দুই দিন ধরে শীতের কারণে মাঠ-ঘাটে ও ফসলের ক্ষেতে তেমন একটা দেখা যায়নি দিনমজুর বা কৃষকদের। তাছাড়া উপজেলা সদরের আলগী বাজারসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কে রিকশা, ইজিবাইকের সংখ্যাও কমে গেছে। শীতের কারণে উপজেলায় শিশুদের রোগ বেড়েছে। হাসপাতালেও নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগীর ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
আদর্শ শিশু নিকেতন (স্কুল)-এর শিক্ষক শরীফ গাজী জানান, সকালে এতো ঠাণ্ডা আর কুয়াশা, সামনে কিছু দেখা যায় না। সেই সঙ্গে বইছে বাতাস। তাই আমাদের এখানে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বের হচ্ছে না। এখানে যারা দিনমজুর তাদেরও অনেক ক্ষতি হচ্ছে। কারণ তারা ঘর থেকে বের হতে পারছে না।
চরভাঙ্গা গ্রামের ইয়াছিন কাজী বলেন, গত দুই দিন আকাশে সূর্যের দেখা নেই। দুই দিন ধরে যেমন শীত তেমন বাতাস। বাতাসের কারণে ঘর থেকে বের হওয়া মুশকিল হয়ে পড়েছে। খুব কষ্টে দিন কাটছে আমাদের। আগে শীত আসলে অনেকে কম্বল দিতো, এখন তেমন দেয় না। সরকারি কিছু কম্বল বা শীতবস্ত্র আসলে সেগুলো আমাদের মত গরীবের ভাগ্যে জুটে না। উপজেলা প্রশাসন থেকেও কোনো সহযোগিতা পাইনি।
মেঘনা পাড়ের বাসিন্দা আবদুল কুদ্দুস পাটওয়ারী বলেন, ঠাণ্ডার কারণে দুই দিন কাজে যাইনি। আজ নিরূপায় হয়ে কাজে বের হয়েছি। বাড়িতে গরম কাপড় নেই। কিন্তু ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে কাজ না করলে পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।
এদিকে গত শুক্রবার বিকেলে মাত্রাতিরিক্ত শৈত্য প্রবাহে অসচ্ছল হতদরিদ্র পরিবারের মানুষকে কিছুটা উষ্ণতা দিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার চাই থোয়াইহলা চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান কম্বল বিতরণ করেন।