বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:০০

নিজের ঘরের আগুন নেভাতে পারছেন না ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা
ফরিদগঞ্জ ব্যুরো ॥

বৃদ্ধ বাবা-মা, দুই ভাই, ছয় বোনের পরিবারের সদস্যদের ভরণ-পোষণের জন্য চাকুরি ও দীর্ঘকাল প্রবাস জীবন-যাপন করলেও এখন জীবনের শেষ সময়ে এসে সেই ভাই-বোনেরাই বড় ভাইকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা করছে। জমিজমা নিয়ে তাদের একে অপরের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দায়েরের পাশাপাশি বেশ কয়েকবার সালিস হলেও ফলাফল শূন্য। বড় ভাই মিজানুর রহমানের দাবি, ছোটভাই মনির হোসেন ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের বড় কর্মকর্তা হওয়ার কারণে কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা করছেন না। সর্বশেষ বসতঘর থেকে ভাড়াটিয়া উচ্ছেদ করে তালা মেরে দেয় ছোট ভাই। এছাড়া প্রতিনিয়ত গাছগাছালি কাটার ঘটনাতো ঘটছেই। স্থানীয় লোকজনের কথা, ছোট-ভাই মনির হোসেন মানুষের ঘরের আগুন নেভানোর কাজ করলেও নিজের ঘরের আগুন নেভাতে ব্যর্থ হয়েছেন। ঘটনাটি ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৫নং গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের দত্রা গ্রামের।

জানা গেছে, দত্রা গ্রামের আমিন উল্লা শেখের বাড়ির দুলামিয়ার দুই ছেলে ও ছয় মেয়ে। ১৯৯৪ সালে দুলা মিয়া ১২৫ বছর বয়সে মারা যান। ২০০৮ সালে মারা যান দুলা মিয়ার স্ত্রী। বাবা বৃদ্ধ হওয়ার কারণে দুলা মিয়ার বড় ছেলে মিজানুর রহমান বাদশা চাকুরি ও দীর্ঘকাল প্রবাসে চাকুরি করেছেন। চাকুরির অর্থ দিয়ে তিনি ভাই-বোনদের সহযোগিতা করেছেন। নিজের অর্থ দিয়ে বাড়িতে চৌচালা ঘর করেছেন। কিন্তু গত ৭/৮ বছর আগে হঠাৎ করেই জমিজমা নিয়ে ভাই-বোনদের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। স্থানীয়ভাবে একের পর এক সালিস হলেও মিজানুর রহমানের অভিযোগ তার অন্য ভাই-বোনেরা বৈঠকের রায় মানছেন না। ভাই-ভাইয়ে, ভাই-বোনে থানা এবং আদালতে বেশ ক’টি মামলা দায়ের হয়।

মিজানুর রহমান জানান, ছোট ভাই মনির হোসেন বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক (প্রশিক্ষণ)। মূলত তার চাকুরির কারণে সে দাপট দেখিয়ে আমাকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টায় লিপ্ত। এমনকি বোনেরাও ভাইয়ের সাথে হাত মিলিয়েছে। আমি ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার জন্য বর্তমানে ঢাকায় থাকি। বাড়িতে যেহেতু কেউ থাকে না, সেই সুযোগে গত মাসাধিককাল পূর্বে বাড়ির ভাড়াটিয়াকে উঠিয়ে দিয়ে বাড়িতে তালাবদ্ধ করে রাখে। সর্বশেষ ৯ ডিসেম্বর আমার রোপণ করা বেশ কয়েকটি গাছ কেটে ফেলে। এভাবে একের পর এক ঘটনায় আমি নিরূপায় হয়ে পড়েছি।

ভাইয়ে ভাইয়ে জমি সংক্রান্ত বিবাদ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বেশ কয়েকটি বৈঠকের সালিসদার মিজানুর রহমান ভদ্র জানান, বড়ভাই ব্যতিরেকে বাকী অন্য ভাই ও বোনেরা একজোট। তারা বড় ভাইকে ভিটি বাড়িতে কোনো সম্পত্তি দিতে নারাজ। আমরা বেশ ক’বার চেষ্টা করেছি। কিন্তু সালিস রায় মানেনি তারা।

স্থানীয় লোকজন জানায়, মিজানুর রহমানের নিজের অর্থ দিয়ে বাড়ি করলেও সেই বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করছে তার ভাই-বোনেরা। ছোট ভাই মনির হোসেন সরকারি বড় কর্মকর্তা হওয়ায় কেউই তার বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না। মনির হোসেন চাকুরির সূত্রে মানুষের ঘরের আগুন নেভানোর কাজ করলেও নিজের ঘরের আগুন নেভাতে পারছে না।

এ ব্যাপারে মনির হোসেন জানান, আমার বড় ভাই মিজানুর রহমান ইতিপূর্বে আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি সব বিক্রয় করে দিয়েছে। সে যে সম্পত্তি পাবে, তার থেকে অনেক বেশি বিক্রি করেছে। বসতঘরে তালা মারার বিষয়ে তিনি বলেন, ঘরটিও আমার কাছে ৬০ হাজার টাকায় বিক্রয় করে দিয়েছে। তাই তালা মেরে দিয়েছি। গাছ কাটার বিষয়ে তিনি বলেন, জমিও আমার গাছও আমার। তাই কেটে বিক্রি করেছি।

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান পাটওয়ারী বলেন, তাদের দুই ভাইয়ের সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। এক ভাই সালিস মানলে আরেক ভাই মানে না। এছাড়া মনির নিজের ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে এলাকার নিরপরাধ কিছু মানুষকে মামলা দিয়ে হয়রানী করে আসছে। যা ঠিক নয়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়