চাঁদপুরে মেঘনার পশ্চিমপাড় হলো চরাঞ্চল। বর্ষায় চরের সবদিকে পানি আর পানি। তাদের যাতায়াত কেবল নৌকা। এই পরিস্থিতিতে সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী হযরত আলী বেপারী তাঁর ইউনিয়নের সরকারি ভাতাভোগী নারীদের ভাতার অর্থ পৌঁছে দিতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন।

করোনাকালীন এই দুর্যোগের সময় যাতে ভাতাভোগীদের কষ্ট করে ইউনিয়ন পরিষদে আসতে না হয় এজন্য ওই চেয়ারম্যান ইঞ্জিন চালিত নৌকায় এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম নিয়ে গিয়ে সেখানে নৌকাতে বসেই সুবিধাভোগী নারীদের বয়স্ক, বিধবা, মাতৃত্বকালীন ও প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করেন।

গতকাল ১০ জুলাই সকাল ১০টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের বাঁশগাড়ী এলাকায় নৌকায় সুবিধাভোগী ৮ থেকে ১০জন করে নারীদের উঠিয়ে ভাতার অর্থ তুলে দেন চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারী। টাকা উত্তোলন শেষে আবার ওই সকল নারী ও প্রতিবন্ধীদের যার যার গ্রামে পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

এভাবে গত ৪ দিন ইউনিয়নের মুগাদি, গোয়ালনগর ও রায়েরচর এলাকায় ঘুরে ঘুরে ভাতার অর্থ বিতরণ করেছেন চেয়ারম্যান। বিতরণকালে সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারী বলেন, আমাদের ইউনিয়নে বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন ৬৫০জন, বিধবা ভাতা ২৩২জন, প্রতিবন্ধী ভাতা ১৪৪জন এবং মাতৃত্বকালীন ভাতা এককালীন ১২৭জন।

তিনি বলেন, রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পুরোটাই চরাঞ্চল এবং পদ্মা-মেঘনার ভাঙনের কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই খারাপ। যার কারণে ইউনিয়ন পরিষদে এসে ভাতা উত্তোলন করা সম্ভব না। এ কারণে ইউনিয়নের ৯ ওয়ার্ডের জন্য ৪ এলাকায় ব্যাংক এশিয়ার শাখা করে দিয়েছি। সেখান থেকে সুবিধাভোগীরা তাদের ভাতা উত্তোলন করবে। আর যারা বিচ্ছিন্ন চরে বসবাস করছে তাদেরকে স্বাস্থবিধি মেনে নৌকায় উঠিয়ে ভাতা বিতরণ করছি।

তিনি আরো বলেন, সরকার আমার ইউনিয়নে করোনাকালীন কর্মহীন ৭শ’ জনকে ৫শ’ টাকা করে দিয়েছে। আগামী মঙ্গলবার থেকে ওইসব অর্থ তাদেরকে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেয়া হবে। এছাড়াও ঈদের পূর্বে সরকার দুঃস্থ পরিবারকে ভিজিএফ-এর মাধ্যমে সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে। সেটিও খুব শীঘ্রই চলে আসবে।